নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, পটুয়াখালী ॥ ‘লুটেরা হাতিয়ে নিচ্ছে টাকা’ শীর্ষক খবর দৈনিক জনকন্ঠে মঙ্গলবার প্রকাশ হলে জমি অধিগ্রহণে ক্ষতির শিকার মানুষের মাঝে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। মানুষ মুখ খুলতে শুরু করেছে। আড়ালে-আবডালে চলছে মধ্যস্বত্ত্বভোগী দালাল, লুটেরাচক্র। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মন্তব্য তারা তিন ফসলী জমি বাড়িঘর সরকারের উন্নয়নের জন্য ছেড়ে দিয়েছেন। এখন ক্ষতিপূরণের টাকা তোলার ক্ষেত্রে পটুয়াখালী জেলার অধিগ্রহণ শাখার প্রত্যক্ষ যোগসাজশে একটি মধ্যস্বত্ত্বভোগী চক্র শতকরা ১০-২০ ভাগ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এটি গ্রামের মানুষের কাছে ওপেন-সিক্রেট। তারা এও বলে বেড়াচ্ছেন এলএও শাখায় কে টাকা রেখে দেয়। লালুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ফোরকান প্যাদা জানান, তার বাড়ি-ঘরসহ জমিজমার কয়েক কোটি টাকা মামলা দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। তিনি এমনসব হয়রাণি বন্ধে জড়িত দালালচক্রের বিচার দাবি করেছেন। এছাড়া অধিগ্রহণ সংক্রান্ত নিষ্পত্তির শুনানি করতে অধিগ্রহণের সকল কার্যক্রম কলাপাড়ায় চালু করার দাবি মানুষের। সাধারণ মানুষ এতাটাই ভীত সন্ত্রস্ত যে পটুয়াখালীতে তাদের ক্ষতিপুরণের চেক তৈরি হলেও দালালচক্র আগে খবর পেয়ে যায়। সেখানে পার্সেন্টেজের টাকা না দিলে চেক হাতে পৌঁছেনা। এমনকি টাকা না দিলে সন্ত্রাসী ক্যাডার বাহিনী লাগিয়ে আটকে মারধর পর্যন্ত করা হয়। অধিগ্রহণের সকল কার্যক্রম কলাপাড়ায় সম্পন্নের দাবিতে ২০১৬ এবং ২০১৭ সালে স্থানীয় মানুষ মানববন্ধন করেছেন। এসব মানুষের দাবি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সাধারণ মানুষকে সহজ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ক্ষতিপুরনের অর্থ পৌছে দেয়ার নির্দেশ দিলেও মাঠ পর্যায়ে তা বাস্তবায়নে গড়িমসি করা হচ্ছে। ফোরকান প্যাদা এও জানান, মধ্যস্বত্ত্বভোগী দালালচক্র সাধারণ মানুষকে হয়রাণি করে পার্সেন্টেজ আদায় করলেও ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে সরকারের। লালুয়ায় বর্তমানে বানাতিপাড়া, চারিপাড়া, নাওয়াপাড়া, চৌধুরীপাড়া এলাকায় সহস্রাধিক মানুষ বাড়িঘর জমির ক্ষতিপূরণের টাকা পেতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন। বাড়িঘরের টাকা যদিও পাচ্ছেন। কিন্তু লুটেরা বাহিনীকে পার্সেন্টেজ ঠিকই দিতে হয়েছে। কিন্তু জমিজমার টাকা অধিকাংশারা পায়নি। যদিও পটুয়াখালী জেলা অধিগ্রহণ কর্মকর্তা উম্মে হাবিবা মজুমদার বলেছেন, এসব দালাল কারা, তাদের নাম ঠিকানা সুনির্দিষ্ট করে লিখিত অভিযোগ দেয়া হলে আমরা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। কলাপাড়ার প্রবীণ আইনজীবী মোঃ জালাল উদ্দিন তালুকদার বলেন, ‘ শুরু থেকে আমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম কলাপাড়ায় সম্পন্নের দাবি করে আসছিলাম। কারণ মানুষ তাহলে অন্তত ক্ষতিপূরণের টাকা যথাযথভাবে পেত।’ আর ঘরবাড়ির ক্ষতিপূলণের টাকা দিতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কারণ বাড়িঘরের মালিকানা নির্ধারণ প্রক্রিয়া সহজতর। জমিজমার বিরোধ থাকতেই পারে। স্থানীয় সূত্রমতে, পায়রা বন্দরের উন্নয়নের জন্য চারিপাড়া ও বানাতিপাড়ার সকল মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে দিলেও ক্ষতিপুরণের টাকা পায়নি অনেক পরিবার। আর জমিজমার টাকা পায়নি অধিকাংশরা।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: