ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

দেশের উত্তরণে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে ॥ ডিসিসিআই

প্রকাশিত: ১৯:০২, ১ মার্চ ২০২১

দেশের উত্তরণে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে ॥ ডিসিসিআই

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসির (সিডিপি) দ্বিতীয় ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা সভায় বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত (এলডিসি) হতে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের চূড়ান্ত সুপারিশ করায় অভিনন্দন জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের প্রভাবশালী সংগঠন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ অভিনন্দন জানিয়ে ডিসিসিআই কর্তৃপক্ষ বলেছে, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির আনন্দঘন মুহুর্তে এ সুখবর সত্যিই সম্মানজনক।’ ঢাকা চেম্বার মনে করে, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে গত এক দশকে সামাজিক ও অর্থনীতির সব ক্ষেত্রে যুগান্তকারী উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশে। বিশেষ করে কোভিড-১৯ মহামারিকালে বর্তমান সরকার দেশের মানুষের জীবন-জীবিকা ও অর্থনীতির মধ্যে সফলতার সঙ্গে সমন্বয় করতে পেরেছে। এ ছাড়া অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ সফলভাবে বাস্তবায়ন করেছে। ডিসিসিআই বলেছে, এলডিসি ক্যাটাগরি থেকে উত্তরণের ক্ষেত্রে প্রতিটি দেশকেই বেশকিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয় এবং বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হবে না। এলডিসিভুক্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ২০২৬ সাল পর্যন্ত ইউরোপসহ বেশ কিছু দেশে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা পাবে। তবে উত্তরণের পর বাংলাদেশকে মেধাস্বত্ব সংরক্ষণ সংক্রান্ত বা ট্রিপস চুক্তির আওতায় কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চলার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। এ ছাড়া বিশ্ববাজারে রপ্তানিতে কঠিন প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হতে হবে। পাশাপাশি উন্নত দেশগুলো থেকে প্রাপ্ত অগ্রাধিকার ও বিশেষ সুবিধা কমে আসবে। বিভিন্ন খাতে ভর্তুকি হ্রাস পাবে। ছোট ছোট স্থানীয় শিল্পে সহায়তা কমে আসতে পারে মনে করে ডিসিসিআই। এসব আশঙ্কার পাশাপাশি ডিসিসিআই বলেছে, চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও উত্তরণের পর বাংলাদেশের জন্য নতুন সম্ভাবনা তৈরি হবে। বাংলাদেশ স্বল্প সুদে ঋণসুবিধা পাবে, ক্রেডিট রেটিং-এ উন্নতি সাধিত হবে। আরও বিকশিত হবে বেসরকারি খাত। উৎপাদিত পণ্যের গুণগত মানের উন্নতি হবে। সুযোগ তৈরি হবে দক্ষতা বাড়ানোর। এ অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশ অন্যান্য দেশের সাথে বাণিজ্য সংলাপে নিজেদের অবস্থান জোরদার করতে পারবে। এতে করে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে উদ্যোক্তাদের আস্থা বাড়বে বলে জানায় ডিসিসিআই। উত্তরণ-পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলেছে ঢাকা চেম্বার। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে: বাণিজ্যিকভাবে সম্ভাবনাময় দেশগুলোর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয়, মুক্ত বাণিজ্য অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য অথবা আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তি সই করা, বাণিজ্য মধ্যস্থতায় দক্ষতা অর্জন, ট্রিপস চুক্তির শর্তাবলি বাস্তবায়নে প্রস্তুতি গ্রহণ করা, উচ্চমূল্যের পণ্য তৈরির ডিজাইন ও ইনোভেশন সেন্টার স্থাপন, আন্তর্জাতিক মান স্বীকৃতি গ্রহণে সহায়তা করা, দক্ষিণপূর্ব এশিয়া ও আফ্রিকার বাজার অন্বেষণ, এফডিআই আকর্ষণে সংশ্লিষ্ট নীতিমালা ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার, রাজস্ব কাঠামোর অটোমেশন ও আধুনিকায়ন, কর-জিডিপির অনুপাত বাড়াতে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা। এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন গতিশীল হবে ও দেশের স্বার্থ সুরক্ষায় সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করে ডিসিসিআই।
×