ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বীমা দিবসে চালু হলো বঙ্গবন্ধু শিক্ষাবিমা

প্রকাশিত: ১৯:০২, ১ মার্চ ২০২১

বীমা দিবসে চালু হলো বঙ্গবন্ধু শিক্ষাবিমা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ জাতীয় বিমা দিবসে সোমবার পরীক্ষামূলকভাবে দেশে প্রথমবারের মতো চালু হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষাবিমা’। এই বিমা পলিসির প্রিমিয়াম দিতে হবে বছরে ৮৫ টাকা। পলিসির মেয়াদের মধ্যে বিমাগ্রহীতা মারা গেলে বা শারীরিকভাবে পঙ্গু হয়ে পড়লে ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত তাঁর সন্তানকে প্রতি মাসে ৫০০ টাকা করে বৃত্তি দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত জাতীয় বিমা দিবসের অনুষ্ঠানে এ বিমা পলিসির কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেছেন। বিমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) সহায়তায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ছিল অনুষ্ঠানের আয়োজক। আইডিআরএ সূত্রে জানা গেছে, দুই বছরের জন্য পরীক্ষামূলক ভিত্তিতে চালু করা হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শিক্ষাবিমা। এই বিমা পলিসির বিমাকৃত ব্যক্তি হবেন মা, বাবা অথবা আইনগত অভিভাবক। পলিসির মেয়াদের মধ্যে মা, বাবা বা আইনগত অভিভাবক মারা গেলে অথবা দুর্ঘটনাজনিত সম্পূর্ণ বা স্থায়ী অক্ষম হলে অথবা পঙ্গু হয়ে গেলে মাসে ৫০০ টাকা করে বৃত্তি দেওয়া হবে শিক্ষার্থীদের। এ বৃত্তি দেওয়া হবে পলিসির বাকি মেয়াদে অর্থাৎ বিমা পলিসি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার আগপর্যন্ত প্রতি মাসে। বঙ্গবন্ধু শিক্ষাবিমা চালুর জন্য যে নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে, তাতে দেখা যায়, পলিসির মেয়াদ শিশুর বয়সের সঙ্গে সম্পর্কিত। ৩ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীরা বিমা পলিসিটির আওতায় আসবে। শিশুর ১৮তম জন্মদিনে পলিসির মেয়াদ শেষ হবে। শিশুর বয়স ৩ বছর হলে পলিসির মেয়াদ হবে ১৮ থেকে ৩ বাদ দিয়ে ১৫ বছর। শিশুর বয়স ১৮ বছর হলে পলিসির মেয়াদ হবে ১৮ থেকে ১৭ বাদ দিয়ে এক বছর। তবে শিক্ষার্থীদের পক্ষে পলিসি করা মা, বাবা অথবা অভিভাবকদের বয়স হতে হবে ২৫ থেকে ৬৪ বছর। আর প্রিমিয়ামের টাকা নেওয়া হবে ব্যাংকের মাধ্যমে। শিক্ষার্থীর বয়স ১৮ ও বিমাগ্রহীতার বয়স ৬৪ বছর হয়ে গেলেই পলিসিটি মেয়াদোত্তীর্ণ বলে বিবেচিত হবে। নীতিমালায় বলা হয়েছে, সাধারণত শিক্ষার্থীর মা অথবা বাবা হবেন বিমাগ্রহীতা। তবে মা-বাবা জীবিত থাকা অবস্থায়ও তাঁদের অনুমোদন সাপেক্ষে অন্য কেউ অভিভাবক হতে পারবেন। আবার মা-বাবার অবর্তমানে শিক্ষার্থীর ভরণপোষণকারীও হতে পারবেন বিমাগ্রহীতা। বিমাগ্রহীতা মারা গেলে, যে মাসে মারা যাবেন, সে মাসের শেষে বৃত্তি দেওয়া শুরু হবে, শিশুর বয়স ১৮ বছর হওয়া পর্যন্ত মাসে মাসে এ বৃত্তি দেওয়া চলতে থাকবে। তবে কেউ যদি দুর্ঘটনার কারণে পঙ্গু হয়ে যান, তাহলে জীবন বীমা করপোরেশনের অনুমোদিত চিকিৎসকদের সনদ নিয়ে বৃত্তি দেওয়া শুরু করা হবে। জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু শিক্ষাবিমা চালুর জন্য প্রতিটি জেলা থেকে একটি করে প্রাথমিক, মাধ্যমিক, কারিগরি ও মাদ্রাসা (দশম শ্রেণি পর্যন্ত) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেছে নেওয়া হচ্ছে। এতে ৭০ হাজার শিক্ষার্থীর মা, বাবা বা অভিভাবক এ বিমার আওতায় আসবেন। আপাতত প্রিমিয়ামের অর্থ আইডিআরএর তহবিল থেকে দেওয়া হবে জীবন বীমা করপোরেশনকে (জেবিসি)। কোনো দাবি উত্থাপিত হলে তা পরিশোধ করবে জেবিসি। সূত্রগুলো জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংক তিন বছর আগেই এ বিষয়ে একটি খসড়া নীতিমালা তৈরি করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে জমা দিয়েছিল। এরপর আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ তা নিয়ে কাজ করতে দেয় আইডিআরএকে। এত বছর পর তা বাস্তব রূপ দেখতে যাচ্ছে।
×