ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

পাকিস্তানপন্থীরা দেশ পিছনের দিকে টেনে রাখার রাজনীতি করছে : ইনু

প্রকাশিত: ১৭:২৩, ১ মার্চ ২০২১

পাকিস্তানপন্থীরা দেশ পিছনের দিকে টেনে রাখার রাজনীতি করছে : ইনু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ স্বাধীনতার ৫০ বছরেও পাকিস্তানপন্থীরা নিজেদের অবস্থান থেকে সড়ে আসেনি। তারা এখনও পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে দেশ পিছনের দিকে টেনে রাখার রাজনীতি করছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু। ২০২১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি ও ২০২২ সালের ৩১ অক্টোবর জাসদ প্রতিষ্ঠার ৫০ বছরে পদার্পণকে সামনে রেখে জাসদের দুই বছরব্যাপী রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক অভিযানের উদ্বোধনী কর্মসূচী তে তিনি এসব কথা বলেন। সোমবার এ উপলক্ষ্যে দলের নেতা-কর্মী-সদস্য-সমর্থকরা ঢাকাসহ দেশের সকল জেলা-উপজেলা জাতীয় পতাকা, মুক্তিযুদ্ধকালীন জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা নিয়ে পতাকা র‌্যালি করেছে। কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে একটি র‌্যালি দোয়েল চত্ত্বর, শিক্ষাভবন, হাইকোর্ট, মৎস ভাবন হয়ে সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে শিখা চিরন্তনে পুস্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শেষ হয়। র‌্যালিপূর্ব কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দলীয় সভাপতি হাসানুল হক ইনুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দলের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি, স্থায়ী কমিটির সদস্য মোশাররফ হোসেন, মীর হোসাইন আখতার, অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন। ইনু বলেন, স্বাধীনতা বিরোধী পাকিস্তানপন্থী আর নিন্দুকেরা যতই মিথ্যাচার করুক না কেন ১৯৭১ সাল পরবর্তী স্বাধীন বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের তুলনা করে সারা পৃথিবীই আজ স্বীকার করে যে স্বাধীনতা বাঙালি জাতির বিকাশের সদর দড়জা খুলে দিয়েছিল। স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশের শাসন-প্রশাসন ব্যবস্থায় অনেক ভুল ত্রুটি, বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা হত্যা-কর্নেল তাহের হত্যাসহ মুক্তিযোদ্ধা হত্যা, হত্যা-খুন সামরিক শাসনের রাজনীতি, অন্তর্ঘাতের রাজনীতি, মুক্তিযুদ্ধে পরাজয়ের প্রতিশোধের রাজনীতি, দেশকে পিছনে টেনে ধরার রাজনীতি হলেও বাংলাদেশ পিছিয়ে পরা অনুন্নত দেশ থেকে আজ উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে। যারা এখনো পাকিস্তান ভেঙ্গে বাংলাদেশ স্বাধীন করে কি লাভ হলো বলে প্রশ্ন তোলে তারা পাকিস্তানেরই প্রেতাত্মা মন্তব্য করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, এরা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের বিরোধীতা করেছিল। ৫০ বছর পর ২০২১ সালেও এরা বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়া সহ্য করেনা। পাকিস্তানপন্থী প্রেতাত্মারাই বাংলাদেশের সামনে এগিয়ে যাবার পথে বাঁধা ও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেই চলেছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিএনপিসহ কতিপয় রাজনৈতিক দল ও বুদ্ধিজীবী প্রকাশ্যেই জামাতসহ পাকিস্তানপন্থীদের সাথে হাত মিলিয়ে রাজনীতি করছে। এরাই দেশের সাম্প্রদায়িকতা-ধর্মান্ধতা-মৌলবাদ-জঙ্গিবাদের উৎপাদন-পুনরুৎপাদন করে চলেছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে উন্নয়নের পাশাপাশি রাজনীতি-রাষ্ট্র-প্রশাসনের ছায়ায় একটি শক্তিশালী দুর্নীতিবাজ-লুটেরাগোষ্ঠীর উত্থান ঘটেছে উল্লেখ করে সাবেক এই তথ্য মন্ত্রী বলেন, এই দুর্নীতিবাজ-লুটেরাগোষ্ঠী বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে ভিতর থেকে ঘর কাঁটা ইঁদুর ও উইপোকার মত কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে। লুটপাট-দুর্নীতি-অপচয়ে রাষ্ট্র-সমাজ-অর্থনীতিতে রক্তক্ষরণ চলছে। ৫০ বছরে দেশ ও সমাজে সামাজিক-অর্থনৈতিক বৈষম্য একটি গুরুতর সামাজিক সমস্যা হিসাবে দেখা দিয়েছে উল্লেখ করে ১৪ দলের অন্যতম এই শরিক নেতা বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে দেশকে আরেক ধাপ উপরে টেনে তুলতে রাজনীতি এবং অর্থনীতির কিছু মৌলিক কিছু বিষয়ে দ্বিধাদ্বন্দ, দরকষাকষি, আপোস সমঝোতা ও মাঝামাঝির কোন পথ নেই। যারা এখনো বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বিরোধীতার নামে বাংলাদেশের বিরোধীতা করে, যারা ১৯৭১ সালের গণহত্যার পক্ষে সাফাই গায়, যারা সংবিধান ও রাষ্ট্রীয় মূলনীতি অস্বীকার করে এই পাকিস্তানপন্থী রাজনৈতিক শক্তি, সাম্প্রদায়িক-ধর্মান্ধ-মৌলবাদী-জঙ্গিবাদী শক্তি ও তাদের রাজনৈতিক পার্টনারদের রাজনৈতিকভাবে নির্মূল করতে হবে। তিনি বলেন, একই সাথে দুর্নীতিবাজ-লুটেরা গোষ্ঠীকেও নির্মূল করতে হবে। বাংলাদেশকে পেছনের দিকে টেনে ধরার শক্তি পাকিস্তানী প্রেতাত্মা ও দুর্নীতিবাজ-লুটেরা এই দুই গোষ্ঠীকেÑ সমূলে নির্মূল করেই বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। সংবিধানকে গোজামিল মুক্ত করে ধর্মনিরপেক্ষতা ও অসাম্প্রদায়িকতার নীতিতে রাষ্ট্র ও সমাজকে পরিচালিত করতে হবে উল্লেখ করে এই শরিক নেতা বলেন, দুর্নীতিবাজ-লুটেরা গোষ্ঠীকে নির্মূল করতে আইনের শাসন ও সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে।
×