ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রীর কাছে এক শহীদ কন্যার আকুতি

প্রকাশিত: ২৩:০৫, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১

প্রধানমন্ত্রীর কাছে এক শহীদ কন্যার আকুতি

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল, ২৫ ফেব্রুয়ারি ॥ ‘আমি আমার পৈতৃক ভিটায় উঠতে পারি না এবং আমি আমার অসুস্থ দাদিকে দেখতে যেতে পারি না। এমনকি আমার বাবার কবরটি পর্যন্ত জিয়ারত করতে যেতে পারছি না। অথচ আমার বাবার নাম ভাঙ্গিয়ে চেয়ারম্যান ফারুকের স্ত্রী ইয়াসমিন ফারুক ও তার শ্যালক হারুন অর রশিদ আমার বাবার শহীদ ইব্রাহিম সেলিম দাখিল মাদ্রাসায় চাকরি করছেন। আর আমি আমার পৈতৃক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। চেয়ারম্যান ফারুকের দ্বারা নির্যাতিত হয়ে আমি ও আমার মা রাস্তায় রাস্তা ঘুরছি। চেয়ারম্যান ফারুক আমাকে বিয়ের রাতেও মেরে ফেলতে চেয়েছে। তার ছেলেও আমাকে মারধর করেছে।’ ডরোথি ইব্রাহিম নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে ২ মিনিট ২৪ সেকেন্ডের ধারণ করা একটি ভিডিতে এ কথাগুলো বলা হয়েছে। যা ইতোমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। এই ভিডিওটি পোস্ট করেছেন ১৯৮৪ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি এরশাদবিরোধী আন্দোলনে নিহত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা শহীদ ইব্রাহিম সেলিমের একমাত্র সন্তান ডরোথি ইব্রাহিম। বুধবার রাতে ভিডিওটি তার আইডি থেকে পোস্ট করা হয়। ওই ভিডিওতে দেখা গেছে ডরোথি সবাইকে সালাম দিয়ে বলছেন, আমি ১৯৮৪ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনে নিহত ছাত্রলীগ নেতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শহীদ ইব্রাহিম সেলিমের একমাত্র কন্যা ডরোথি ইব্রাহিম বলছি। দর্শক শ্রোতা, আজ আমি আপনাদের কাছে কিছু চাপা কষ্টের কথা বলব। গত মঙ্গলবার ইউটিউবে বাউফল থানার নাজিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইব্রাহিম ফারুকের ওয়াইফ ইয়াসমিন ফারুকের একটি সাক্ষাতকার দেখলাম। সেই সাক্ষাতকারের ভিত্তিতে আমি কিছু কথা বলতে চাই। সে শহীদ সেলিমকে তার হাজব্যান্ডের ভাই হিসেবে দাবি করেছে। কিন্তু শহীদ সেলিমের একমাত্র সন্তান ও তার স্ত্রী আজকে ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক দ্বারা নির্যাতিত হয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে। ইব্রাহিম ফারুক তার সন্তানকে পৈতৃক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করেছে এবং নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে। আমার বিয়ের রাতে আমাকে মেরে ফেলতে চেয়েছে। তার ছেলেও আমার গায়ে হাত তুলেছে। আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে। আমি আমার পৈতৃক ভিটায় উঠতে পারি না এবং আমি আমার অসুস্থ দাদিকে দেখতে যেতে পারি না। এমনকি আমার বাবার কবরটি পর্যন্ত জিয়ারত করতে যেতে পারছি না। আমার বাবা শহীদ সেলিমের নাম ভাঙ্গিয়ে চেয়ারম্যান ফারুকের স্ত্রী ইয়াসমিন ফারুক ও তার শ্যালক হারুন অর রশিদ আমার বাবার মাদ্রাসায় শহীদ ইব্রাহিম সেলিম দাখিল মাদ্রাসায় চাকরি পেয়েছেন। ইব্রাহিম ফারুক একসময় জাতীয় পার্টি ও বিএনপি করতেন। আমার বাবার নাম ভাঙ্গিয়ে এখন আওয়ামী লীগ সরকারের সুবিধা ভোগ করছেন। ডরোথি ভিডিওতে চেয়ারম্যান ফারুক ও তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে আর কোন সুবিধা না দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন। ডরোথি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাকে চাকরি দিয়েছেন, আমার স্বামীকে চাকরি দিয়েছেন, বাড়ি করে দিয়েছেন। শেখ হাসিনার বদৌলতে আমি ও আমার মা বেঁচে আছি।’ প্রধানমন্ত্রীর কাছে ডরোথি আরও একটি দাবি করে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আপনি আমাকে বাড়ি করে দিয়েছেন, চাকরি দিয়েছেন, আমার জীবনটাকে গুছিয়ে দিয়েছে এটাও ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক ও তার ওয়াইফ ইয়াসমিন ফারুকের পছন্দ হচ্ছে না। আমি তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি।’
×