ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বিডা কার্যালয়ে ঢাকা চেম্বারের পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে সাক্ষাত

আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কর প্রদানে এগিয়ে আসতে হবে : সালমান এফ রহমান

প্রকাশিত: ১৮:২৫, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১

আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কর প্রদানে এগিয়ে আসতে হবে : সালমান এফ রহমান

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্যবসায়ীদের কর প্রদানে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারী শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জিডিপিতে করের অবদান দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম। কর আদায় বাড়াতে হলে ব্যবসায়ীদের মানসিকতার পরিবর্তন হওয়া প্রয়োজন। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) কার্যালয়ে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) নবনির্বাচিত পরিচালনা পর্ষদ সাক্ষাত করতে হলে ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে সালমান এফ রহমান এসব কথা বলেন। এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান। সালমান এফ রহমান বলেন, দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে রাজস্ব আহরণ অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ। কিন্তু বাংলাদেশে কর আদায়ের হার সন্তোষজনক নয়। কর প্রদানে সক্ষম এরকম নাগরিক এখনো করজালের বাইরে রয়েছেন। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, বাংলাদেশের মোট জাতীয় উৎপাদন বা জিডিপিতে করের অবদান দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে কম। কিন্তু দেশকে এগিয়ে নিতে হলে জিডিপিতে করের অবদান বাড়াতে হবে। এর কোন বিকল্প নেই। এজন্য ব্যবসায়ীদের আগে এগিয়ে আসতে হবে। সকলকে কর প্রদানে আগ্রহী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সালমান এফ রহমান আরও বলেন, এজন্য মনমানসিকতার পরিবর্তন সবচেয়ে বেশি জরুরি। করের টাকায় দেশের উন্নয়ন হচ্ছে। সেই উন্নয়নের সুবিধাভোগী দেশের সরকল নাগরিক। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ বছর প্রায় ৫৫ হাজার নাগরিককে কর জাল-এর আওতায় নিয়ে এসেছে। তিনি কর আহরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য বিদ্যমান রাজস্ব কাঠামো যুগোপযোগীকরণ এবং ডিজিটাল ব্যবস্থার কার্যক্রম আরও দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করার উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি জানান, কক্সবাজার বিমানবন্দরকে বিশ্বমানের বিমানবন্দরে পরিণত করার বিষয়টি সরকারের বিবেচনায় রয়েছে। যা দেশের উন্নত যোগাযোগ অবকাঠামো ও এই অঞ্চলে অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিতকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, বৈশ্বিক বাণিজ্যেও নেতিবাচক প্রভাব, বাণিজ্য যুদ্ধ, বেক্সিট, স্বল্পন্নোত দেশ হতে বাংলাদেশের উত্তরণ এবং সর্বোপরি কোভিড-এর প্রভাবের কারণে দেশের বেসরকারীখাত বেশ প্রতিকূলতার মাঝে পরিচালিত হচ্ছে। তিনি বলেন, বেক্সিট পরবর্তী সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা গ্রহণ করতে হলে বাংলাদেশকে ২৭টি শর্ত পূরণ করতে হবে। এমন বাস্তবতায় যথাসময়ে ইইউ-এর শর্তপূরণের কার্যক্রম তদারকি এবং ইইউ-এর সাথে যোগাযোগ আরো সুদৃঢ় করতে একটি ‘ন্যাশনাল স্ট্রাটেজি কমিটি’ প্রণয়ন করতে হবে। তিনি বলেন দেশে ব্যবসা পরিচালনা ব্যয় হ্রাস এবং দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষনে বিডা ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’ চালু করেছে, যা ব্যবসায়ীদের মাঝে আশার সঞ্চার করেছে। তবে এ সেবার কার্যকর প্রয়োগের জন্য সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থায় দক্ষ জনবল নিয়োগ করা প্রয়োজন। বিশ^ব্যাপী করোনা মহামারীর কারণে ২০১৯-২০২০ অর্থবছওে বৈশি^ক বৈদেশিক বিনিয়োগ প্রায় ১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার কমে গেছে। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের বৈদেশিক বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ২.৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এমতাবস্থায় বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে হলে সরকারের শিল্পনীতি, আমদানি-রফতানি নীতি, বৈদেশিক মুদ্রা নীতিমালা সহ সংশ্লিষ্ট সকল নীতিমালার সমন্বয় খুবই জরুরী। তিনি বলেন, বলেন, কোম্পানী আইনে একক ব্যক্তি মালিকানাধীন কোম্পানী নিবন্ধনের ক্ষেত্রে বিদ্যমান আইনে মূলধনের সীমা ২৫ লক্ষ টাকা এবং বার্ষিক বিক্রয়ের পরিমাণ ১ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, তা কিছুটা যৌক্তিকীকরণ করা প্রয়োজন। এর মাধ্যমে ছোট ছোট প্রতিষ্ঠানসমূহ একক মালিকানাধীন কোম্পানী হিসেবে নিবন্ধন হতে আগগ্রী হবে।
×