ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রথম বিডিআর বিদ্রোহ ধামাচাপা দেয়া হয়েছিল

প্রকাশিত: ২২:৪৬, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১

প্রথম বিডিআর বিদ্রোহ ধামাচাপা দেয়া হয়েছিল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আজ তথাকথিত বিডিআর বিদ্রোহের নামে সেনা হত্যাযজ্ঞের একযুগ পূর্তি। নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হচ্ছে। বিডিআর বিদ্রোহের প্রথম ঘটনাটি ধামাচাপা দিয়েছিল তৎকালীন বিএনপি সরকার। সংক্ষিপ্ত আদালতের মাধ্যমে সেই ঘটনা ধামাচাপা দেয়া হয়েছিল। আর তারই জেরে ঘটে যায় স্মরণকালের ভয়াবহ বিডিআর বিদ্রোহের নামে সেনা হত্যাযজ্ঞের ঘটনা। প্রথম ঘটনাটির প্রকৃত বিচার হলে দ্বিতীয় দফায় পিলখানায় কথাকথিত দাবিদাওয়া আদায়ের নামে পিলখানায় স্মরণকালের ভয়াবহ সেনা হত্যাযজ্ঞের ঘটনাটি নাও ঘটতে পারত। দুই বিদ্রোহের ঘটনার সঙ্গে গভীর যোগসূত্র থাকতে পারে বলে মনে করেন তদন্ত সংশ্লিষ্ট অনেকেই। আজ বৃহস্পতিবার ২৫ ফেব্রুয়ারি বিডিআর বিদ্রোহে শাহাদৎবরণকারীদের স্মরণে বিশেষ দোয়া মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। মঙ্গলবার বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মোঃ শরীফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, পিলখানার বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদর দফতরসহ সকল রিজিয়ন, প্রতিষ্ঠান, সেক্টর ও ইউনিটের ব্যবস্থাপনায় খতমে কোরআন, বিজিবির সকল মসজিদ এবং বিওপি পর্যায়ে এমন ধর্মীয় কর্মসূচী পালিত হবে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় সকাল নয়টায় বনানী সামরিক কবরস্থানে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তিন বাহিনীর প্রধান (সম্মিলিতভাবে), স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব এবং বিজিবি মহাপরিচালক (একত্রে) শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এছাড়া দিবসটি পালন উপলক্ষে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সকল স্থাপনায় বিজিবি পতাকা অর্ধনমিত থাকবে এবং বিজিবির সকল সদস্য কালো ব্যাজ পরিধান করবেন। আগামীকাল ২৬ ফেব্রুয়ারি বাদ জুমা পিলখানার বিজিবি কেন্দ্রীয় মসজিদ, ঢাকা সেক্টর মসজিদ এবং বর্ডার গার্ড হাসপাতাল মসজিদে শহীদ ব্যক্তিবর্গের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, এমপি। এছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব, বিজিবি মহাপরিচালক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ, শহীদ ব্যক্তিবর্গের নিকটাত্মীয়, পিলখানায় কর্মরত সকল অফিসার, জুনিয়র কর্মকর্তা, অন্যান্য পদবির সৈনিক এবং বেসামরিক কর্মচারীগণ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণপূর্বক সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে অংশগ্রহণ করবেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পুরনো নথিপত্র মোতাবেক বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় আদালতে বিডিআরের হাবিলদার হাবিবের দেয়া জবানবন্দীতে ওঠে এসেছে প্রথম বিদ্রোহের তথ্য। সে ২০১০ সালের ২৯ নবেম্বর বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে পিলখানা বিডিআর সদর দফতরের দরবার হলে স্থাপিত পুনর্গঠিত বিশেষ আদালত-৭ এ এমন বক্তব্য দেন সাক্ষী হাবিলদার হাবিব। জবানবন্দীতে তিনি বলেছেন, ১৯৯১ সালের ৩ ডিসেম্বর ‘বিপ্লবী কমান্ড কাউন্সিল’ এর ব্যানারে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া সম্বলিত ভুয়া ও উদ্দেশ্যমূলক তথ্য সম্বলিত একটি লিফলেট পিলখানাসহ সারাদেশের বিভিন্ন বিডিআর স্থাপনায় বিতরণ করা হয়েছিল। পরিকল্পনা হয় বিদ্রোহের। তারই ধারাবাহিকতায় পিলখানায় অবস্থিত ৩ রাইফেল ব্যাটালিয়নের ল্যান্স নায়েক মেডিক্যাল সহকারী মোঃ আব্দুল হামিদ পলিথিন ব্যাগে ভরে পুরনো কোয়ার্টার গার্ড এলাকা দিয়ে ৫টি শক্তিশালী হাতবোমা পিলখানার ভেতরে নিয়ে যাওয়ার জন্য রওনা হন। যাওয়ার সময় উর্ধতন কর্মকর্তাদের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে। এ সময় সে পালিয়ে সৈনিক লাইনে আশ্রয় নেয়। পরে সৈনিক লাইন থেকে রাতেই তাকে গ্রেফতার করা হয়। বন্দী রাখা হয় কোয়ার্টার গার্ডে। ওই রাতেই পিলখানার ৩ নম্বর গেটের বাইরে ২ ও ৩ নম্বর গেটে মাঝামাঝি শিক্ষক কোয়ার্টারের পেছনে, ঢাকা সেক্টর ও রেকর্ড উইংয়ের সৈনিক লাইনের মাঝের পার্কে বিডিআরের কতিপয় বিদ্রোহী সৈনিক শক্তিশালী হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুরো পিলখানায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে একটি ‘তদন্ত আদালত’ গঠন করা হয়। আতঙ্ক সৃষ্টির প্রকৃত কারণ বিডিআর বিদ্রোহ বলে নিশ্চিত হয় তদন্ত কমিটি। এরপর বিদ্রোহের নেপথ্য নায়কদের খোঁজে বের করতে হামিদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য যথাযথ গোয়েন্দা সংস্থার নিকট হস্তান্তর ও কঠোর তদন্তের সুপারিশ করা হয়। কিন্তু অদৃশ্য কারণে বিষয়টির তদন্ত হয়নি। এমনকি আব্দুল হামিদকেও কোন গোয়েন্দা সংস্থার নিকট হস্তান্তর করা হয়নি। তদন্ত এবং অনুসন্ধান সেখানেই থেমে যায়। বিস্তারিত কোন তথ্য উদঘাটন না করেই আব্দুল হামিদের কাছ থেকে ‘কোন কিছুই পাওয়া যায়নি’ মর্মে লিখিত নিয়ে তদন্ত কার্যক্রম শেষ করে দেয়া হয়। ওই সময় নওগাঁয় অবস্থিত ১ রাইফেল ব্যাটালিয়ন থেকেও হাতে লেখা বিভিন্ন ধরনের সেøাগান সম্বলিত লিফলেট উদ্ধার হয়। ঠিক একই সময়ে ১ নম্বর ব্যাটালিয়নের ১৭ জওয়ানের একটি ড্রিল পার্টি পিলখানা বিডিআর সদর দফতরে অনুষ্ঠিত ড্রিল প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। পরে তারা আবার নিজ ব্যাটালিয়নে ফেরত যায়। উদ্ধারকৃত লিফলেটের লেখা ও বিতরণে ড্রিল পার্টির সকল সদস্যের হাতের লেখা পরীক্ষা করে নায়েক আফজাল নামে এক জওয়ানকে চিহ্নিত করা হয়। বিষয়টির অধিকতর তদন্তের জন্য ওইসব জওয়ানদের কর্তৃপক্ষের নির্দেশে রাজশাহী সেক্টর সদর দফতরে পাঠানোর জন্য প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছিল। এ সময় জওয়ানরা উত্তেজিত হয়ে লাঠিসোটা, বাঁশ, কাঠ নিয়ে ‘বিডিআর সৈনিক এক হও’ ‘আমাদের দাবি মানতে হবে’ ‘সেনা অফিসার ফেরত যাও’ ‘গাড়ির চাকা ঘুরবে না’ ‘সৈনিক সৈনিক ভাই ভাই’ ‘বেতন ভাতা বৃদ্ধি চাই’ ইত্যাদি নানা ধরনের সেøাগান দিতে দিতে ব্যাটালিয়নের প্রশিক্ষণ মাঠে উপস্থিত হতে থাকে। খবর পেয়ে উর্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে বিদ্রোহীরা কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। পরে বিদ্রোহীরা রেস্ট হাউসে হামলা, ভাংচুর, টেলিফোন লাইন ও ওয়্যারলেস যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। ততক্ষণে বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ে বিডিআরের বিভিন্ন স্থানে। এ সময় পরিকল্পিতভাবে আক্রমণের জন্য বগুড়া সেনানিবাস থেকে সেনাদল এগিয়ে আসছে, এমন গুজব ছড়িয়ে সেনা আক্রমণ মোকাবেলা করতে কোয়ার্টার গার্ডে গিয়ে বিদ্রোহীরা অস্ত্রাগার লুটের চেষ্টা চালায়। ওই সময় ডিএডি ওয়াহিদকে কাঁধে তুলে তাদের নতুন অধিনায়ক বলে উল্লাস করতে থাকে বিদ্রোহীরা। একই সময়ে বিডিআর ট্রেনিং সেন্টার, বাইতুল ইজ্জত, চট্টগ্রাম, সিলেট, যশোর ও খুলনাসহ কয়েকটি বিডিআর স্থাপনায় একই ধরনের বিদ্রোহের ঘটনা ঘটে। পরে তৎকালীন মহাপরিচালকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে ‘বিশেষ সংক্ষিপ্ত আদালত’ বসিয়ে বিদ্রোহীদের বিচার করা হয়। বিচারে ২০ বিদ্রোহীকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তিও দেয়া হয়। কিন্তু আজও বিদ্রোহের নেপথ্য নায়কদের আর খুঁজে বের করার চেষ্টা পর্যন্ত করা হয়নি। বিদ্রোহের নেপথ্য নায়কদের আড়াল করতেই বিদ্রোহের বিষয়টি তৎকালীন সরকারের আমলেই ধামাচাপা দেয়া হয়েছিল। আজও প্রথম বিদ্রোহের নেপথ্য নায়কদের খোঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হয়নি। সরকারের একটি উচ্চ পর্যায়ের গোয়েন্দা সংস্থা সূত্র বলছে, তৎকালীন সরকারের এ ধরনের অবহেলা, উদাসীনতা ও কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণেই দ্বিতীয় দফায় বিদ্রোহের ঘটনা ঘটার জন্য অনেকাংশে দায়ী। তারই ধারবাাহিকতায় ২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় তথাকথিত দাবি দাওয়া আদায়ের নামে ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাযজ্ঞের ঘটনাটি ঘটানো হয়। প্রথম বিদ্রোহের বিষয়টি ধামাচাপা না দিয়ে কঠোর বিচার করা হলে ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাযজ্ঞের ঘটনাটি নাও ঘটতে পারত। প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি বিডিআর বিদ্রোহীরা ৫৭ জন সেনা কর্র্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করে। হত্যার পর অনেকের লাশ গণকবর দেয়। আবার কারও লাশ নর্দমায় ম্যানহোলে ও ডোবায় ফেলে দেয়। অনেক লাশ পুড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করে বিদ্রোহীরা। এমন বিদ্রোহের জেরধরে বিডিআরের নাম পরিবর্তন করে বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) রাখা হয়। পোশাক ও বাহিনীর লোগো পরিবর্তন করা হয়। আর যাতে কোন বাহিনীতে বিদ্রোহের ঘটনা না ঘটে, এজন্য বিদ্রোহের সর্বোচ্চ শাস্তি ৭ বছরের পরিবর্তে মৃত্যুদণ্ড করা হয়েছে। বিজিবিকে আধুনিক করা হয়েছে। বাহিনীতে নারী ইউনিট গঠন করা হয়েছে। অনুদান ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিডিআর বিদ্রোহে নিহত ৬১ পরিবারের প্রতিটি পরিবারকে ১০ লাখ টাকা করে অনুদান দেন। সকল শহীদ পরিবারকে পেনশন কম্যুটেশন বেনিফিট দেয়া হয়েছে। সেনাবাহিনী তাদের কল্যাণ তহবিল থেকে সকল পরিবারকে ৫ লাখ টাকা করে অনুদান দিয়েছে। সেনাবাহিনীর পরিবার নিরাপত্তা প্রকল্প তহবিল থেকে প্রত্যেক কর্মকর্তার পরিবারকে ৮ লাখ টাকা করে দেয়া হয়েছে। আর প্রত্যেক সৈনিকের পরিবারকে আড়াই লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। বিডিআর তহবীল থেকে সৈনিক পরিবার ছাড়া সকল পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা করে দেয়া হয়েছে। আর সৈনিক পরিবারকে স্যাপার্স কল্যাণ তহবিল থেকে ৩ হাজার দেয়া হয়েছে। অফিসার কল্যাণ তহবিল থেকে সকল পরিবারকে নির্ধারিত হারে পিতা, মাতা, স্ত্রী বা সন্তানদের ভাতা দেয়া হয়েছে। ব্যাংকার্স এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ থেকে সৈনিকদের পরিবার ছাড়া সব পরিবারকে মাসিক ৪০ হাজার টাকা করে ১০ বছর পর্যন্ত মোট ৪৮ লাখ টাকা অনুদান দেয়া হয়েছে। আর সৈনিক পরিবারকে সেনাবাহিনীর কল্যাণ তহবিল থেকে মাসিক ১০ হাজার টাকা করে ১০ বছরে ১২ লাখ টাকা অনুদান দেয়া হয়েছে। ৫৬টি পরিবার ট্রাস্ট ব্যাংক থেকে ২ লাখ টাকার মিউচুয়াল ফান্ড প্লেসমেন্ট শেয়ার পেয়েছেন। প্রত্যেক পরিবারকে সিএসডি থেকে এককালীন ২১ হাজার ৩শ’ টাকার নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী এবং সিএসডি ডিসকাউন্ট কার্ড দেয়া হয়েছে। শহীদ পরিবারের ৪ জন পর্যন্ত সদস্য বিভিন্ন ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি ফি বা টিউশন ফি ব্যতীত ভর্তি করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর অধীন বিভিন্ন স্কুল ও কলেজে পড়য়া ৪৫ জন শিশুর ভর্তি ও টিউশন ফি মওকুফ করা করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর অধীন নয়, এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত শহীদ পরিবারের ৩২ জন শিশুর ভর্তি ও টিউশন ফি মওকুফ করা হয়েছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আছে পিটারসেন, রাজউক, রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল ও শাহীন স্কুল। শহীদ পরিবারের ১১ জন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন ক্যাডেটে ভর্তি করা হয়েছে। বাসস্থান সুবিধা ॥ ৪৬টি পরিবারকে সেনানিবাসের সরকারী বাসস্থানে থাকার সুবিধা দেয়া হয়েছে। ৩১টি শহীদ পরিবারের সদস্যকে বিভিন্ন চাকরি দেয়া হয়েছে। শহীদ পরিবারের সদস্যরা সিএমএইচে বিনামূল্যে চিকিৎসা পাচ্ছেন। ৬০টি পরিবারের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ৩৮টি পরিবারকে ডিওএইচএস মিরপুর, মহাখালী ও চট্টগ্রামে প্লট দেয়া হয়েছে। ৬টি পরিবারকে মিরপুর ডিওএইচএসে ২টি করে ফ্ল্যাট দেয়া হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় বিয়ে করা চারটি পরিবারকেও মিরপুর ডিওএইচএসে ফ্ল্যাট দেয়া হয়েছে। সৈনিক পরিবারকে সাভারে ফ্ল্যাট দেয়া হয়েছে। সকল শহীদ পরিবারকে সামরিক টেলিফোন সংযোগ দেয়া হয়েছে। ১৫টি শহীদ পরিবারের হাউস বিল্ডিং লোন মওকুফ করা হয়েছে। এছাড়া তিনটি শহীদ পরিবারের কম্পিউটার লোন মওকুফ করা হয়েছে। আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে ৫টি শহীদ কর্মকর্তার পিতা মাতাকে সেনাবাহিনীর কল্যাণ তহবিল থেকে ১৫ লাখ টাকা করে দেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি বিডিআর বিদ্রোহের নামে সেনা হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় রাজধানীর তৎকালীন লালবাগ থানার ওসি নবজ্যোতি খীসা হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে লালবাগ থানায়ই পৃথক ২টি মামলা দায়ের করেন। মামলা ২টি পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশে নিউমার্কেট থানায় স্থানান্তরিত হয়। ফৌজদারি আইনে মামলা ২টির তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দেন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার আব্দুল কাহার আকন্দ। ২০১৩ সালের ৫ নবেম্বর কারা অধিদফতরের পাশের মাঠে স্থাপিত বিশেষ আদালতে ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ড. মোঃ আখতারুজ্জামান হত্যার মামলার ৮৫০ আসামির মধ্যে ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৬১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২৭১ জনকে খালাস দেন। অন্যদের ২ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়। প্রসঙ্গত, এ মামলার তিন আসামি মৃত্যু হওয়ায় তাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
×