ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ভিকারুননিসায় স্কুলড্রেসে একচ্ছত্র ব্যবসা বন্ধের রায় প্রতিযোগিতা কমিশনের আদেশ

প্রকাশিত: ১৯:৩৫, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১

ভিকারুননিসায় স্কুলড্রেসে একচ্ছত্র ব্যবসা বন্ধের রায় প্রতিযোগিতা কমিশনের আদেশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নির্দিষ্ট একটি প্রতিষ্ঠানকে স্কুলড্রেস তৈরির একচ্ছত্র ব্যবসার সুযোগ করে দেয়ায় নামী প্রতিষ্ঠান ভিকারুননিসা নূন স্কুলকে সতর্ক করেছে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের স্কুল ড্রেস বানানোর ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান মেসার্স চৌধুরী এন্টারপ্রাইজকে ৭৯ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এখন একক প্রতিষ্ঠানকে না দিয়ে প্রতিটি ক্যাম্পাসের জন্য ন্যূনতম তিনটি প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে শিক্ষার্থীদের পোশাক বানাতে হবে। দরজির দোকান নির্বাচনের জন্য দুটি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে হবে। শিক্ষার্থীদের পোশাক বানানো-সংক্রান্ত এক মামলায় বুধবার এই আদেশ দেয় প্রতিযোগিতা কমিশন। কমিশনের চেয়ারম্যান মো: মফিজুল ইসলামসহ পাঁচ সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত প্রতিযোগিতা কমিশন এই আদেশ দেয়। বুধবারসহ মোট ছয় দিন এই মামলার শুনানি হয়। কমিশনের চেয়ারপারসন মো. মফিজুল ইসলাম জনকণ্ঠকে বলছিলেন, আসলে একটা কথাই ঠিক যে আমরা যদি বাজারকে প্রতিযোগীতামূলক করতে পারি তাহলে ন্যায্য মূল্যে সবচেয়ে ভাল পন্যটাও নিশ্চিত করা সম্ভব। প্রতিযোগীতা কমিশন গঠনের উদ্যেশ্যটাও তাই। ভিকারুন নিসার এই মামলার রায়ের উদ্দেশ্য একটাই, যাঁরাই ব্যবসা করছেন, পণ্য ও সেবা ক্রয়-বিক্রয় করছেন, এখানে যেন প্রতিযোগিতা থাকে। প্রতিযোগিতা থাকলে ন্যায্যমূল্যে ভালো পণ্য ও সেবা পাওয়া যাবে। জানা গেছে, প্রতিযোগিতামূলক বাজার তৈরির লক্ষ্যে ২০১৮ সালের ১২ ডিসেম্বরে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিরুদ্ধে স্বপ্রণোদিত এই মামলাটি করে প্রতিযোগিতা কমিশন। অভিযোগ ছিল, ২০০৩ সাল থেকে লালবাগের অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠান মেসার্স চৌধুরী এন্টারপ্রাইজ একচেটিয়াভাবে শিক্ষার্থীদের পোশাক তৈরি করত। অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান বা দরজি এই ব্যবসায় আসতে পারত না। বাধ্যতামূলকভাবে শিক্ষার্থীদের ওই প্রতিষ্ঠান থেকেই পোশাক কিনতে হতো। মামলার আদেশে বলা হয়, মেসার্স চৌধুরী এন্টারপ্রাইজ যোগসাজশের মাধ্যমে ভিকারুননিসা স্কুলের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে এককভাবে পোশাক সরবরাহ করে। এতে স্কুল ও পোশাক প্রস্তুতকারী প্রুতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ২০১২ সালের প্রতিযোগিতা আইনের ১৫ (১) ধারার বিধান লঙ্ঘনের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এ কারণে মেসার্স চৌধুরী এন্টারপ্রাইজকে ৭৯ হাজার ৮৯৭ টাকা প্রশাসনিক আর্থিক জরিমানা এবং ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য না থাকা সত্ত্বেও একচ্ছত্রভাবে দীর্ঘ সময় শিক্ষার্থীদের পোশাক সরবরাহের ব্যবসা করার সুযোগ দেয়ায় ভিকারুননিসা নূন স্কুলকে সতর্ক করা হয়েছে। আদেশে ভিকারুননিসা স্কুলের উদ্দেশে বলা হয়, একক প্রতিষ্ঠানকে না দিয়ে প্রতিটি ক্যাম্পাসের জন্য ন্যূনতম তিনটি প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে শিক্ষার্থীদের পোশাক বানাতে হবে। দরজির দোকান নির্বাচনের জন্য দুটি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে হবে। এর আগে স্কুলের পোশাক, রং, নকশা, মনোগ্রাম সম্পর্কে অভিভাবকদের জানাতে হবে। এরপর মনোনীত পোশাক নির্বাচিত তিনটি দরজি বা প্রতিষ্ঠানের কাছে জমা দিতে হবে। কী ব্যবস্থা নেয়া হলো, সেটি প্রতিবেদন আকারে ২৬ এপ্রিলের মধ্যে ভিকারুননিসা কর্তৃপক্ষকে কমিশন বরাবর জমা দিতে বলা হয়েছে। উল্লেখ্য, বাজারে সুস্থ প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ তৈরিতে ২০১৬ সালে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন গঠিত হয়। অর্থনীতিতে টেকসই উন্নয়ন আনাই এর লক্ষ্য। প্রতিযোগিতামূলক দামে জনসাধারণের পণ্য ও সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণেও এই কমিশন কাজ করে।
×