ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রাঙ্গাবালীতে নির্দেশের তোয়াক্কা করছে না ঠিকাদার

নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সড়ক নির্মাণ

প্রকাশিত: ২১:২৩, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১

নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সড়ক নির্মাণ

শংকর লাল দাশ, গলাচিপা ॥ পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার সদর ইউনিয়নে একটি সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের ইট ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী ইতোমধ্যে চিঠি দিয়ে ঠিকাদারকে সড়ক থেকে নিম্নমানের ইট অপসারণের নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু সে নির্দেশের তোয়াক্কা করছে না ঠিকাদারের লোকজন। তারা গায়ের জোরে সড়ক নির্মাণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। উপজেলা প্রকৌশল দফতরের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারী সরেজমিনে উপস্থিত হয়ে নিম্নমানের ইট অপসারণের নির্দেশনা দিতে গিয়ে উল্টা লাঞ্ছিত হয়েছেন বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে রাঙ্গাবালী উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামে মালেক হাওলাদারের বাড়ি থেকে মাদারবুনিয়া খাল হয়ে সত্তার গাজীর বাড়ি পর্যন্ত এক হাজার মিটার কার্পেটিং সড়ক নির্মাণের প্রকল্প নেয়া হয়। যার চুক্তিমূল্য ৫১ লাখ ৭১ হাজার। পটুয়াখালী সদর উপজেলার দক্ষিণ বোয়ালগাছিয়ার মেসার্স পাল এন্টারপ্রাইজকে কাজটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেয়া হয়। মাঠপর্যায়ে কাজটি বাস্তবায়ন করছেন বশিরউদ্দিন সিকদার নামের পটুয়াখালীর এক ঠিকাদার। স্থানীয়রা জানায়, গত কয়েক দিন ধরে ওই সড়কে টেন্ডারের শর্ত উপেক্ষা করে নিম্নমানের ইটের খোয়া বিছানোর কাজ চলছে। এলজিইডির লোকজন বাধা দিলেও তা মানছে না ঠিকাদারের লোকজন। সড়কের নির্মাণকাজ তদারকির দায়িত্বে থাকা এসও এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম সরেজমিনে নিম্নমানের ইটের খোয়া বিছাতে বাধা দেন। কিন্তু সে বাধা উপেক্ষা করে চলে সড়ক নির্মাণ। এ নিয়ে উল্টা এসওর সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ায় ঠিকাদারের লোকজন। পরে এসও ঘটনাস্থল ছাড়তে বাধ্য হন। এর আগে উপজেলা প্রকৌশলী সড়ক থেকে নিম্নমানের ইট অপসারণের জন্য ঠিকাদারকে চিঠি দেন। চিঠিতে বলা হয়, নিম্নমানের ইট অপসারণের জন্য বারবার মৌখিক নির্দেশ দেয়া সত্ত্বেও তা ব্যবহার করা হচ্ছে, যা চুক্তির পরিপন্থী। এ অবস্থায় পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে নিম্নমানের ইট অপসারণের নির্দেশ দেয়া হয়। নির্মাণকাজ তদারকির দায়িত্বে থাকা এলজিইডির উপসহকারী শহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা একাধিকবার নিম্নমানের ইট সরানোর জন্য বলেছি। কিন্তু তা করা হচ্ছে না। বরং আমাদের সঙ্গে ঝামেলা করেছে। উপজেলা প্রকৌশলীও সেখানে গিয়েছিলেন। ইট অপসারণের জন্য ঠিকাদারকে চিঠি দিয়েছেন। তারা কোন কথাই শুনছে না। এ বিষয়ে জানতে ঠিকাদার বশিরউদ্দিনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে ঠিকাদারের পক্ষে ওই কাজে নিয়োজিত ম্যানেজার মোহাম্মদ শাহিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বলেন, ধানের মধ্যে চিটা থাকবেই। দুই একটা ইটে সমস্যা হয়েছে। এসও’র সঙ্গে শ্রমিকদের কথা কাটাকাটি হয়েছে। পরে স্থানীয় লোকজন সকলকে সরিয়ে দিয়েছে। এ বিষয়ে এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ মিজানুল কবির বলেন, নিম্নমানের এই ইট যখন ট্রলারে ছিল, তখনই আমি তা নামাতে নিষেধ করেছি। তবুও তারা সাইটে ইট নিয়ে গেছে। আমরা চিঠি দিয়ে নিম্নমানের ইট অপসারণ করতে বলেছি। চিঠির অনুলিপি দিয়ে বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকেও অবহিত করা হয়েছে।
×