ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

করোনা ও বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি পোষাতে বীজ, চারা, সারসহ কৃষি উপকরণ ছিল প্রণোদনার আওতায়

৩৭২ কোটি টাকার প্রণোদনা পেয়েছেন ৫৭ লাখ কৃষক

প্রকাশিত: ২৩:১১, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১

৩৭২ কোটি টাকার প্রণোদনা পেয়েছেন ৫৭ লাখ কৃষক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মহামারী করোনা মোকাবেলা ও বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এবং উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫৭ লাখ কৃষকের মাঝে ৩৭২ কোটি টাকার প্রণোদনা দিয়েছে সরকার। কৃষি মন্ত্রণালয়ের দেয়া এই প্রণোদনা কর্মসূচীর আওতায় মোট জমির পরিমাণ ২৩ লাখ ৬৪ হাজার বিঘা। প্রণোদনার আওতায় রয়েছে বীজ, চারা, সারসহ বিভিন্ন কৃষি উপকরণ ও আনুষঙ্গিক সহায়তা। সোমবার কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানা গেছে। জানা গেছে, কৃষি মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত বাজেট কৃষি পুনর্বাসন সহায়তা খাতের বরাদ্দ হতে এ প্রণোদনা বিতরণ করা হয়। গত বছরটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য বছর ছিল কৃষির জন্য। তিন দফায় বন্যায় ৩৭টি জেলায় সর্বমোট ১ হাজার ৩২৩ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয় বলে সে সময় বন্যা পরবর্তীতে জানিয়েছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক। বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়া ফসলি জমির পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৫৭ হাজার ১৪৮ হেক্টর, যার মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত জমির পরিমাণ ১ লাখ ৫৮ হাজার ৮১৪ হেক্টর। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা ১২ লাখ ৭২ হাজার ১৫১ জন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ঘুরে দঁাঁড়াতে প্রণোদনা দেয়ার ঘোষণাও দেয় সরকার। সেই ঘোষণার ধারাবাহিকতায় ৩৭২ কোটি টাকার মধ্যে করোনা ও বন্যায় ক্ষতি পোষাতে দেয়া হয়েছে ১১২ কোটি টাকার প্রণোদনা। রবি ফসলকে গুরুত্ব দেয় সরকার। রবি মৌসুমে মাষকলাই, মুগ, সূর্যমুখী, সরিষা, ভুট্টা প্রভৃতি উৎপাদন বৃদ্ধিতে দেয়া হয়েছে ৯০ কেটি টাকার প্রণোদনা। প্রণোদনায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের গম, সরিষা, চিনাবাদাম, সূর্যমুখী, খেসারি, পেঁয়াজ, মরিচ, টমেটো ইত্যাদি ফসল আবাদের জন্য বিনামূল্যে কৃষি উপকরণ সরবরাহ করা হয়। এছাড়া, বোরো ধানের আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধিতে বিনামূল্যে বীজ সহায়তা বাবদ ১৩৬ কোটি টাকা, পেঁয়াজের উৎপাদন বৃদ্ধিতে ২৫ কোটি টাকা ও ৬১ জেলায় সমলয়ে হাইব্রিড বোরো ধান চাষের জন্য ৯ কোটি টাকার প্রণোদনা বিতরণ করা হয়েছে। বন্যায় ফসলের ক্ষয়ক্ষতি ও তা মোকাবেলায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের গৃহীত পদক্ষেপের বিষয়ে সে সময় কৃষিমন্ত্রী বলেন, বন্যার পূর্বাভাস পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কৃষি মন্ত্রণালয় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করে। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাসহ সকলেই ছিলেন সতর্ক। ফসলের ক্ষতি কমিয়ে আনার জন্য কৃষককে দেয়া হয়েছিল প্রয়োজনীয় পরামর্শ। জানা গেছে, গতবছর প্রথম দফায় ২৫ জুন থেকে ৯ জুলাই পর্যন্ত ১৪ জেলায় বন্যায় ৪১ হাজার ৯১৮ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রথম দফার বন্যায় ৩৩৯ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি এবং তিন লাখ ৪৩ হাজার ৭৫৭ কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় ১১ জুলাই থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত ৩৭টি জেলায় ৩৪টি ফসলের এক লাখ ১৬ হাজার ৮৯৬ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষতির পরিমাণ ৯৭৪ কোটি টাকা, আর নয় লাখ ২৯ হাজার ১৩৯ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
×