ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মারুফ রায়হান

ঢাকার দিনরাত

প্রকাশিত: ২১:০০, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১

ঢাকার দিনরাত

একুশে ফেব্রুয়ারি পড়েছিল রবিবারে। আগের দুদিন সরকারী কার্যালয় বন্ধ, অনেক বেসরকারী প্রতিষ্ঠানেরও সাপ্তাহিক ছুটি দুদিন, শুক্র ও শনিবার। আবার সরকারী অফিসের সঙ্গে নিত্যদিনের কাজ যেসব প্রতিষ্ঠানের, তারাও শুক্র-শনি অফিস বন্ধ রাখে। রবিবারে সরকার ঘোষিত ছুটি থাকার কারণে পরপর তিন দিনের ছুটি পাচ্ছেন বহু কর্মজীবী। এক সময়ে তিন দিনের ছুটিকে ঈদের ছুটি হিসাবেই ধরা হতো, অর্থাৎ একসঙ্গে তিন দিন ছুটি পাওয়া মানে অনেকটা ঈদেরই আনন্দ যেন। বৃহস্পতিবার বহু ঢাকাবাসীর ঢাকা ফাঁকা করে দেশের বাড়ি বা কোন অবকাশ যাপন কেন্দ্রে চলে যাওয়ার হিড়িক দেখে মনে হলো এমন একটা উপলক্ষকে কেউই হাতছাড়া করতে রাজি নন। অন্যবার একুশে ফেব্রুয়ারির সঙ্গে সাপ্তাহিক ছুটির সংযুক্তি থাকে না। তার ওপর চলে মাসব্যাপী বইমেলা। ফলে ঢাকাবাসী থাকেন ঢাকাতেই। এবার বইমেলা নেই। করোনার মৌসুমের সমাপ্তি ঘটেনি। ফলে যারা নিয়মিত শহীদ মিনারে যান ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে, ফুল দিতে, এবার তাদের ভেতরও অনেকেই হয়তো অনুপস্থিত থাকবেন। তবে একুশে ফেব্রুয়ারিকে স্রেফ ছুটির দিন ভেবে নিয়ে যারা সেদিন ঘরের বাইরে বেড়াতে বের হন, কিংবা বইমেলায় যান, তাদের অধিকাংশই যে তিন দিনের ছুটিতে ঢাকা ছেড়েছেন সেটি হিসাব না করেও নিশ্চিত রূপেই বলে দেয়া যায়। এ থেকে আমাদের শহুরে নাগরিকদের মানসিকতা, সামাজিক দায়িত্ব বোধেরও একটা পরিচয় পাওয়া যায়। যা মোটেই সন্তোষজনক নয়। শহরের মানুষ যে অনেক আত্মকেন্দ্রিক হয়ে গেছে, সে কথা বলাই বাহুল্য। বাংলা ভাষার দূষণ একুশে ফেব্রুয়ারি পেরিয়ে এলাম আমরা। কিন্তু ভাষাপ্রেম আমাদের চিরন্তন। মৌসুমকেন্দ্রিক ভাষা সচেতনতা কোন উপকারে আসে না। প্রসঙ্গত কিছু কথা আমাদের বলতেই হবে। বাংলা ভাষা চর্চা নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। বাংলা আমাদের মায়ের ভাষা। এ কারণে সবাই ভেবেই নিই ভাষাটি আমরা ভাল জানি। কিন্তু একজন উচ্চশিক্ষিত মানুষ বাংলায় লিখতে গেলেই বোঝা যায় তাতে কত ভুল! কথা বলতে গেলেও দেখা যায় ভাষার দূষণ। কেউ বিকৃত উচ্চারণ করছেন, কেউ বাংলার মধ্যে অন্য ভাষার শব্দ ব্যবহার করছেন। রক্ত দিয়ে ধোয়া আমাদের বর্ণমালা। রক্তের এ ঋণ স্বীকার করতে হলে অবশ্যই ভাল বাংলা জানতে হবে। ভাল বাংলা জানার অর্থ অন্য ভাষাকে অবজ্ঞা নয়। আন্তর্জাতিক যোগাযোগের জন্য অন্য ভাষাও আমাদের শিখতে হবে। ফরাসী, জার্মান, ইংরেজী ভাষা আমরা আগেই শিখতাম। এখন চীনা, জাপানী, কোরিয়ান ভাষাও শিখতে হবে। এসব দেশের সঙ্গে আমাদের বিভিন্ন বিষয় জড়িয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আগে তো মায়ের ভাষা জানতে হবে। এত ত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া ভাষাটিকে মন থেকে ভালবাসেন তার প্রমাণ খুব কম পাওয়া যায়। আজও সর্বত্র বাংলার প্রচলন হয়নি। এ জন্য সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বশীলতা দরকার। সামাজিক আন্দোলন দরকার। অনেক শিক্ষকও শ্রেণীকক্ষে মিশ্র ভাষায় কথা বলেন। তারাও প্রকৃত শিক্ষক পেয়েছিলেন কিনা প্রশ্ন আছে। যাদের তারা শেখাচ্ছেন তারাও প্রকৃত শিক্ষিত হয়ে উঠছেন না। বাংলা ভাষার চর্চা এগিয়ে নিতে অভিভাবক দরকার। এ জন্য বাংলা ভাষায় দক্ষ শিক্ষক, লেখক, সাংবাদিক যারা বাংলা ভাষায় কাজ করেন, যারা বাংলা ভাষার জন্য কাজ করেন তাদের নিয়ে একটি দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা দরকার। ভাষার দূষণ বা বিকৃতি ঘটলেই তারা চিহ্নিত করবেন। সংশোধনের ব্যবস্থা নেবেন। সর্বস্তরে বাংলা চালুর ব্যাপারে অনেক দিন ধরে আলোচনা চললেও আজও তা হয়নি। বাংলাদেশের মানুষ যারা বাংলা ভাষাকেন্দ্রিক বিভিন্ন পেশায় যাচ্ছেন, যারা বাংলা নিয়ে কাজ করছেন, আদালতে যারা কাজ করছেন তাদের অন্য ভাষার প্রয়োজন কেন? বাংলায় উচ্চশিক্ষার বইয়ের অভাব হয়ত আছে। কিন্তু মাতৃভাষায় দখল থাকলে ইংরেজী বই পড়ে অর্জিত জ্ঞানের প্রয়োগ তো বাংলায় করা যায়। মূলত আমাদের সদিচ্ছার অভাব। এমন একটা সংস্কৃতি দাঁড়িয়ে গেছে যে বাংলাকে অবজ্ঞা করে অন্য ভাষাকে গুরুত্ব দিলেই সমাজে গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে! যেখানে ইংরেজী প্রয়োজন সেখানে বাংলার পাশাপাশি ইংরেজী থাকবে; তবে সর্বস্তরে বাংলার প্রচলন দরকার। কয়েকজন বিচারক বাংলায় রায় লেখা শুরু করেছেন। একে সাধুবাদ জানাতেই হয়। বিচারব্যবস্থার সর্বত্র বাংলার প্রচলন হলে তা হবে যুগান্তকারী পদক্ষেপ। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে নতুন প্রজন্মের জন্য এমন কিছু রেখে যেতে পারলে তা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকত। শুধু মাতৃভাষা চর্চায় গাফিলতি নয়, অন্য ভাষায় দুর্বলতার কারণে বাংলা সাহিত্যকে আমরা বিশ্বদরবারে পৌঁছাতে পারছি না। আমাদেরও বিশ্বমানের সাহিত্য আছে। শুধু ইংরেজীতে সঠিকভাবে অনুবাদ করতে পারলেই বিশ্ববাসীকে দেখাতে সক্ষম হতাম যে আমাদের সাহিত্য কতটা উন্নত। যারা সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পাচ্ছেন, বুকার পুরস্কার পাচ্ছেন তাদের সাহিত্যের সঙ্গে তুলনা চলে এমন অনেক ভাল সাহিত্যকর্ম রয়েছে আমাদের। তবে এটা প্রমাণ করতে হলে অনুবাদে জোর দিতে হবে। ভাল অনুবাদক খুঁজে বের করতে হবে। এ কাজটাই আমাদের অভিভাবকরা করছেন না। একুশ শতকে এসে বাংলা সাহিত্যের সমৃদ্ধি নেহাত কম নয়। বাংলা সাহিত্যে সমৃদ্ধির শুরুটা মূলত ভাষা আন্দোলনের পর ষাটের দশকে। মাঝখানে নানা কারণে হোঁচট খেয়েছি। কলুষিত রাজনীতি, স্বৈরতন্ত্র সাহিত্যিকদের প্রভাবিত করেছে। বিগত দুই দশকে দারুণভাবে বাংলা সাহিত্যের অগ্রযাত্রা পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিশিষ্ট লেখকদের অনেকেই মারা গেছেন। সৈয়দ হক, শওকত ওসমান, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস প্রজন্মকে হারিয়ে ফেলেছি। অথচ তাঁদের ভেতরের শক্তি বর্তমান প্রজন্মের লেখকদের মধ্যে থেকে শনাক্ত করতে পারছি না। পরবর্তীকালে যারা বাংলা সাহিত্যের নেতৃত্ব দেবেন তাদের চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে অভিভাবকদের কৃপণতা আছে। তারপরও বলব নতুন সময়ের সূচনা হয়েছে। অনলাইনের কারণে সাহিত্যচর্চা বেড়েছে। প্রচুর ই-বুক প্রকাশ হচ্ছে। হতে পারে এর বেশির ভাগই জঞ্জাল। তারপরও বলব নতুন রক্তের সন্ধান পাচ্ছি। এর মধ্যেই অনেকে খুব ভাল লিখছেন। আমি মনে করি বাংলা সাহিত্যে সমৃদ্ধির সূচনা হয়ে গেছে, এখন গন্তব্যে পৌঁছার সময়। আর্কেডিয়া আর্টস ঢাকায় চিত্রশিল্পী ও চিত্র সংগ্রাহকের সংখ্যা বাড়ছে। সে তুলনায় আমাদের আর্ট গ্যালারি বা চিত্র প্রদর্শনশালার সংখ্যা কম। দুয়েক বছর পরপরই ঢাকায নতুন আর্ট গ্যালারি প্রতিষ্ঠার খবর পাই আমরা। আবার নিঃশব্দে অনেক গ্যালারি লুপ্তও হয়ে যায়। তবু করোনাকালে রাজধানীতে নতুন আর্ট গ্যালারি চালুর সংবাদ আমাদের আশান্বিত করে। সম্প্রতি বনানীতে চালু হয়েছে আর্কেডিয়া আর্টস নামের নতুন আর্ট গ্যালারি। সমসাময়িক বিভিন্ন শিল্প মাধ্যমের ৪৫ জন শিল্পীর শিল্পকর্ম দিয়ে সাজানো হয়েছে উদ্বোধনী প্রদর্শনী। জয়নুল আবেদীন, এস এম সুলতান, শাহাবুদ্দিন আহমেদ, রফিকুন নবী, আব্দুস শাকুর শাহ, আবুল বারক আলভী, হাশেম খান, মনিরুল ইসলাম, কাজী গিয়াস, কাইয়ুম চৌধুরী, কালিদাস কর্মকার, নিসার হোসেন, মোহাম্মদ ইউনুস, শিশির ভট্টাচার্য, ওয়াকিলুর রহমান, কনকচাঁপা চাকমা, নাসরিন বেগম, আইভি জামান, শেখ আফজাল, মোহাম্মদ ইকবাল, সাধনা ইকবাল, ইমরান হোসেন পিপলু, বিশ্বজিৎ গোস্বামী প্রমুখ শিল্পীদের শিল্পকর্ম স্থান পেয়েছে এই প্রদর্শনীতে। গ্যালারি সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য গ্যালারিটি উন্মুক্ত থাকবে। তবে কোভিড-১৯ এর কারণে এ্যাপয়েন্টমেন্ট ছাড়া গ্যালারি দর্শন করা যাবে না। প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটের মাধ্যমে গ্যালারি পরিদর্শনের জন্য এ্যাপয়েন্টমেন্ট করতে হবে। ১৬ মার্চ শেষ হবে মাসব্যাপী এই প্রদর্শনী। [email protected], অথবা, www.arcadiaartsbd.com ওয়েবসাইটের মাধ্যমে গ্যালারি পরিদর্শনের জন্য সময় বরাদ্দ নিতে হবে। ভবনের উচ্চতা নির্ধারণ রাজধানীতে এলাকার জনঘনত্ব ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ভিত্তিতে ভবনের উচ্চতা নির্ধারণ করা হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী এবং ড্যাপ রিভিউ কমিটির আহ্বায়ক মোঃ তাজুল ইসলাম। স্থপতি, নগর পরিকল্পনাবিদ এবং বেসরকারী আবাসন খাত সংশ্লিষ্টসহ অন্যান্য অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলেও জানান তিনি। মন্ত্রী সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে ড্যাপ বাস্তবায়নের বিষয়ে রিয়েল এস্টেট এ্যান্ড হাউজিং এ্যাসোসিয়েশন-রিহ্যাব ও বাংলাদেশ ল্যান্ড ডেভেলপারস এ্যাসোসিয়েশন-বিএলডিএ-এর প্রতিনিধিদের সঙ্গে সভা করেন। তিনি জানান, রাজধানীতে এলাকাভিত্তিক জনঘনত্ব নির্ধারণ করে জোনভিত্তিক ভবনের উচ্চতা নির্ধারণ করা হবে। শহরের কোন অঞ্চলে কত তলা বিল্ডিং হলে মানুষ সকল নাগরিক সুযোগ-সুবিধা পাবে এবং ঢাকা একটি বাসযোগ্য, আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন শহরে রূপান্তরিত হবে সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। মন্ত্রী আরও বলেন, মানুষের চলাচলের জন্য রাস্তা ও স্কুল-কলেজ, শপিংমল, হেলথ সেন্টার, খেলাধুলার মাঠ, ওয়াটার বডি, এবং সবুজায়নসহ অন্যান্য নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। এলাকাভিত্তিক হোল্ডিং ট্যাক্স, পানি, গ্যাস, বিদ্যুতসহ অন্যান্য ইউটিলিটি সার্ভিসের চার্জ নির্ধারিত হওয়ার উপর আবারও গুরুত্বারোপ করে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী প্রশ্ন তুলে বলেন, অভিজাত এলাকায় বসবাসকারী এবং যাত্রাবাড়ী অথবা ওয়ারিতে বসবাসকারী মানুষ কেন সমান মূল্য বহন করবেন। প্রসঙ্গত তিনি বলেন, পৃথিবীর অনেক দেশেই এলাকাভিত্তিক ইউটিলিটি সার্ভিসের মূল্য নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। এটি নিয়ে সমালোচনা হলেও এ বিষয়ে আমাদের একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হতে হবে। আমাদের সকলের উদ্দেশ্য একটাই সেটি হচ্ছে ঢাকা নগরীকে বাসযোগ্য, দৃষ্টিনন্দন ও আধুনিক করে গড়ে তোলা। আর এ জন্যই ড্যাপের মতো দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। শুভ উদ্যোগ সন্দেহ নেই। কিন্তু ইতোমধ্যে ঢাকা এক ভারাক্রান্ত নগরীতে পরিণক হয়েছে এবং শহওে সুউচ্চ বহুতল ভবনের আধিক্য রয়েছে। এই উদ্যোগ আজ থেকে অন্ততঃ ২০ বছর আগে গ্রহণ করা হলেও ঢাকার এমন মারণদশা হতো না। গাড়ি পার্কিং বিরাট সমস্যা ঢাকা শহরে প্রতিদিন গাড়ির সংখ্যা বাড়ছে। রাস্তা যেমন চাই গাড়ি চলার, তেমনি গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থাও থাকা চাই একটি আধুনিক নগরীতে। এক ভুক্তভোগী ঢাকাবাসী কী বিড়ম্বনায় না পড়েছিলেন গাড়ি পার্কিং নিয়ে। কোন রাস্তার কোথায় কোথায় গাড়ি রাখা বৈধ, এই প্রশ্ন তিনি তুলেছেন। সেই বয়ান শুনুন তার নিজের মুখেই: ‘ঢাকা শহরে প্রধান রাস্তার দুপাশে বহুতল ভবনে ব্যাংক, বীমা, বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হচ্ছে। কেউ কোথাও পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করেনি। এসব বহুতল তৈরির ও সে সব বহুতল ভবনে বাণিজ্যিক কার্যক্রম চালানোর অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এখন এসব ভবনে সেবা গ্রহণে আসা ব্যক্তিদের গাড়ি কোথায় থাকবে? বড় রাস্তায় রাখা অসম্ভব, তাই ড্রাইভাররা সাধারণত গলিতে যেখানে ট্র্যাফিক জটলা হয় না এমন জায়গায় গাড়ি রাখে। কিন্তু তাতেও রক্ষা নেই, বর্গীদের মতো রে রে করে সেখানে মোটরসাইকেল চড়ে ট্র্যাফিক পুলিশ এসে সেখানে থাকা গাড়িগুলোকে ঘিরে ফেলে, পেছনে আসে রেকার, পটাপট সব গাড়িকে ফাইন করতে থাকে। আজ আমি মিরপুর রোড়ের পাশে সোনালী ব্যাংকে গিয়ে ভবনে কোন পার্কিং পাইনি। ড্রাইভার গাড়ি নিয়ে উল্টো দিকে ধানমণ্ডি নতুন ১৩ রোডে যেখানে কোন ট্র্যাফিক সমস্যা ছিল না, সেখানে গাড়ি রেখে এভাবেই শিকারিদের টার্গেট হয়েছে, সে একা নয় আরও কয়েকজন। অন্য এলাকার কথা জানি না, তবে চোখের সামনে একতলা বাড়িগুলো বহুতল ভবনে রূপান্তরিত হয়ে গেটে গেটে ‘অতিথি গাড়ি বাইরে রাখুন’ টাঙ্গিয়ে দিয়ে নিশ্চিন্ত আছে। সেখানেও অলিগলিতে কারও অসুবিধা না হওয়া সত্ত্বেও যখন-তখন এই একই মহড়া চলে আসছে। অথচ বাড়িরগুলোর তৈরির অনুমোদন দিয়েছে সরকার। তাহলে গাড়ি যাত্রীদের ওপর এই হামলা চালানোর কোন নৈতিক অধিকার সরকারের আছে কী? সেই সরকারের একটি অর্গান হিসেবে গাড়িকে ফাইন করার আগে পুলিশ সবাইকে নিয়ে বসে একটা সমাধানসূত্র দিন। না মানলে এই হামলা চালান। বিনা দোষে গাড়ির মালিকরা এই অত্যাচার পোহাবে কেন? আল্লাহর ওয়াস্তে বলুন, কোন রাস্তার কোথায় কোথায় গাড়ি রাখা বৈধ। জনগণের একজন হিসেবে আপনার কাছে এই প্রশ্ন করাটাকে নিশ্চয় গর্হিত অপরাধ বলে গণ্য হবে না।’ ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ [email protected]
×