ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দেশীয় পণ্যের রফতানিতে বিশেষ ভূমিকায় সদাগর.কম

প্রকাশিত: ২০:২১, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২১

দেশীয় পণ্যের রফতানিতে বিশেষ ভূমিকায় সদাগর.কম

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ দেশের জনপ্রিয় হোলসেইল মার্কেটপ্লেস সদাগর.কম গত তিনবছর ধরে দেশীয় মার্কেটে বড় নাম হয়ে উঠছে। গত সময়টাতে তাদের জনপ্রিয়তার কারণ যাচাইয়ে জনকণ্ঠের আইটি ডট কম প্রতিবেদকের কাছে তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান। প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোর প্রকৃত ব্যবসায়ীরা পাচ্ছে সুফল, পাচ্ছে ন্যায্য দাম। কিভাবে এ বিষয়টি একটা মার্কেটপ্লেস নিয়মিত করে যাচ্ছে সেটা অনেকের চোখেই এখন বড় বিস্ময়। প্রতিষ্ঠানটিতে ব্যবসায় করা অন্তত পাঁচজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে ফোনে কথা বলে জানা গেলো, প্রতিষ্ঠানটিতে সবচেয়ে বেশি প্রচার ও বিক্রি হয় দেশীয় পণ্যের উদ্যোক্তাদের। তাদের সবারই কথা, আমাদের দেশের পণ্য দেশের বাইরে বড় আকারে বিক্রিতে সহযোগিতা যেমন করে সদাগর.কম, তেমনি সদাগর.কমের মাধ্যমে দেশের মধ্যেই যার দরকার যে ডিলার রেইটে যে কোনো পণ্য কিনে নিজেও ব্যবসায় করতে পারছে। সদাগর.কম সম্প্রতি ই-কমার্স মুভারস এওয়ার্ড জিতেছে ই-কমার্স এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের আয়োজনে। একইসঙ্গে দেশীয় ই-কমার্স প্লাটফর্মগুলোর মধ্যে ব্যতিক্রমী কাজের জন্য পরিচিত হয়ে উঠেছে। রফতানি করে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে বিপুল পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। বিশেষ করে পাটজাত, গার্মেন্টস, মেডিক্যাল পণ্যসহ অনেকরকম দরকারী পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদাকে সামনে এনেছে সদাগর.কম। উদ্যোক্তাদের মধ্যেও এটার বেশ সাড়া পড়েছে, তারাও রফতানিবান্ধব এই প্রতিষ্ঠানকে কাজে লাগাচ্ছে তাদের সম্প্রসারণে। বলা হয়ে থাকে, গার্মেন্টস শিল্পের রফতানিতে প্রথম দিকে আমাদের দেশের নাম। সম্প্রতি বায়াররা ছোট অর্ডার করা যায় এমন ফ্যাক্টরি বেশি খুঁজছেন। কিন্তু ডিজিটাল মাধ্যমে আমাদের গারমেনটস এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলের উদ্যোক্তারা পিছিয়ে থাকায় এই বাজারে এগিয়ে যাচ্ছে ভিয়েতনাম। জানা গেছে, ছোট অর্ডার বিপুল পরিমাণে নেয়াতে দেশটির বাজার ছড়িয়েছে গিয়ে আমাদের সামগ্রিক প্রেক্ষাপটে তারা এগিয়ে যাচ্ছে। এ জায়গাগুলোতে সদাগর.কম একটা বড় বাজার তৈরির লক্ষ্যে ছোট ফ্যাক্টরিগুলোকে প্রমোট করছে আন্তর্জাতিক বাজারে নিজ দায়িত্বে। কোভিড-১৯ পরিবেশে সদাগর.কম পাশে ছিল তাদের মার্চেন্ট ও সেবাগ্রহীতাদের। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ও সিএসও জাহিদ শাহ এর সঙ্গে কথা বলে জানা গেলো দারুণ সব তথ্য। তিনি জানালেন, ‘করোনায় দ্বিগুণ হয়েছি আমরা। সদাগর.কম নামটা এনেছিলাম আমরা প্রাচীন ব্যবসায়ীদের নামের সদাগর থেকে, যেটার মাধ্যমে আমরা মানুষের অন্তরে জায়গা পেতে কাজ করে যাচ্ছি। করোনা মহামারীতে সদাগর.কম সব সময় পাশে ছিল গরিব-অসহায় মানুষদের, একটা দিনের জন্যও সার্ভিস অফ রাখিনি আমরা। আমাদের প্লাটফর্মে বর্তমানে ৪ হাজারের বেশি উদ্যোক্তা তাদের পণ্যের বিক্রি-ব্রান্ডিং করছেন। আমাদের এখানে কোন খুচরা বিক্রয় হয় না বলে বড় কোম্পানিগুলো আমাদের সার্ভিস নিচ্ছে নিয়মিত।’ সদাগর.কমের গল্প এর মূলনায়ক প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও আরিফ চৌধুরীকে কেন্দ্র করে। তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বর্তমানে দেশীয় পণ্যের প্রায় সবধরনের ব্যবসায় নিয়ে তারা কাজ করছেন। সদাগর.কম ইন্টারন্যাশাল কুরিয়ার নিজেরাই পরিচালনা করে ‘জেটকার্ট বাই সদাগর’ নামে আর দেশের মার্কেটের বি২বি উদ্যোক্তাদের কথা মাথায় রেখে তারা এবার আনছে নতুন সংযোজন ‘সদাগর এক্সপ্রেস’ নামের কুরিয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান।’ আরিফ চৌধুরী বলেন, ‘সহজ সোরসিং এবং দেশী পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজার সম্প্রসারণ আমাদের মূল লক্ষ্য, আমরা এখানে ব্যবসায় করা প্রত্যেকজন উদ্যোক্তার কষ্টটাকে হাসিমুখে পরিণত করতে কাজ করি। আমাদের প্লাটফর্মের মাধ্যমে যে কেউ তার পণ্য হোলসেইল মূল্যে বিক্রি করতে পারেন। আমরা চাই দেশীয় পণ্যের মার্কেট আন্তর্জাতিক বাজারে অনেক বড় হোক, সেজন্য বাইরের মার্কেটে সদাগর.কমের সঙ্গে যারা যুক্ত তাদের সঙ্গে দেশীয় উদ্যোক্তাদের সম্পৃক্ততা বাড়াতে শ্রম দিচ্ছি নিয়মিত।’ আরিফ চৌধুরী আরও বলেন, হোম টেক্সটাইল পণ্যের বাজারে ইউরোপজুড়ে কাজ করছে সদাগর.কম। বিশেষ করে তোয়ালের চাহিদা পূরণে বড় আকারে কাজ করছে সদাগর.কমের টিম, যার ফলশ্রুতিতে সুইডেনে সম্প্রতি সদাগর.কমের একটি আন্তর্জাতিক ট্রেড সেন্টারেরও উদ্বোধন হয়েছে।’ বাংলাদেশের এই প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে সম্প্রতি পালিত হলো তাদের ৪র্থ বর্ষে পদার্পণ আয়োজন। এখানে কর্মরত বেশিরভাগই তরুণ, তারাও বিশ্বাস করতে শিখে গেছেন ‘ব্যবসা বেশি, চিন্তা কম-সদাগর.কম।’
×