ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

গ্রন্থাগার আন্দোলনে আকরগ্রন্থ ॥ আলো ছড়ায় গ্রন্থাগার

প্রকাশিত: ০০:৩১, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১

গ্রন্থাগার আন্দোলনে আকরগ্রন্থ ॥ আলো ছড়ায় গ্রন্থাগার

জীবনে কেবল তিনটি জিনিসের প্রয়োজন- ‘বই, বই এবং বই’। এই দর্শন সামনে রেখে আশির দশক থেকে কাজ করছে বাংলাদেশ গ্রন্থসুহৃদ সমিতি ও বেরাইদ গণপাঠাগার। প্রথমে ‘বেরাইদ গ্রন্থসুহৃদ সমিতি’, পরে দুটি স্বতন্ত্র সংগঠনের জন্ম। বর্তমানে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৪২নং ওয়ার্ড (বেরাইদ-অধুনালুপ্ত ইউনিয়ন)-কে পাইলট প্রকল্প ধরে (প্রস্তাবিত ‘গ্রন্থপল্লী) কাজ চলছে। জাতীয় পর্যায়ে বেসরকারী গ্রন্থাগার উন্নয়নে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান/নেটওয়ার্ক/প্লটফরম হিসেবে কাজ করছে ‘গ্রন্থসুহৃদ’। বেরাইদ গণপাঠাগার এর সহযোগী প্রতিষ্ঠান। নেপথ্যে সংগঠক-গ্রন্থসুহৃদ এমদাদ হোসেন ভূঁইয়া। তার লক্ষ্য দেশে একটি গ্রন্থাগার আন্দোলন গড়ে তোলা। সেভাবেই পরিচালিত হচ্ছে কার্যক্রম। দেশে একটি ‘নব্য গ্রন্থাগার আন্দোলন’ ইতোমধ্যে দানা বেঁধেছে বলে তার ধারণা। বাংলাদেশ গ্রন্থসুহৃদ সমিতি ২০১৩ সালে তৎকালীন সংস্কৃতি মন্ত্রীর কাছে দেশের বেসরকারী গ্রন্থাগারগুলোর উন্নয়নে প্রথম সাত দফা পেশ করে। ২০১৬ সালের ২৫ মার্চ রাজধানীর বাড্ডা থানার বেরাইদ মুসলিম হ্ইাস্কুল মাঠে ‘প্রথম জাতীয় গ্রন্থসুহৃদ/প্রতিনিধি সম্মেলন’র আয়োজন করে। আয়োজনটি সফল হয়। সম্মেলনে তিন দফা সুপারিশ গৃহীত হয় : ১. বেসরকারী গ্রন্থাগারগুলোর এমপিও দিতে হবে ২. অনুদানের জন্য ওয়ান পয়েন্ট সার্ভিস সেন্টার চালু করতে হবে ও ৩. অনুদান কমিটিতে গ্রন্থসুহৃদ প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত হবে। এ বিষয়ে ১. মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২. সংস্কৃতি মন্ত্রী ও ৩. সংস্কৃৃতি প্রতিমন্ত্রীকে পর্যায়ক্রমে স্মারকলিপি দেয়া হয়। ২০১৭ সালের ১ মে আয়োজন করা ‘প্রথম ঢাকা গ্রন্থসুহৃদ সম্মেলন’। আর সর্বশেষ ২৯ জানুয়ারি ২০২১ (শুক্রবার) বেরাইদ গণপাঠাগার সংলগ্ন পুরান ঈদগাহ মাঠে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আয়োজন করা হয় ‘দ্বিতীয় ঢাকা গ্রন্থসুহৃদ সম্মেলন ২০২১’। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ এমপি, বিশেষ অতিথি ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি একেএম রহমতুল্লাহ এমপি (ঢাকা ১১) ও যুগান্তরের চিফ রিপোর্টার মাসুস করিম। গ্রন্থসুহৃদ এমদাদ হোসেন ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বেরাইদ মুসলিম হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মির্জা লুৎফর রহমান। প্রধান অতিথি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ এমপি এবছর থেকে ‘বেসরকারী গ্রন্থাগারিকরা সম্মানী পাবেন’ বলে ঘোষণা দিয়েছেন। আয়োজকরা তাকে সাধুবাদ এবং এমপিওর সমান স্কেল বা উপযুক্ত ভাতা নির্ধারণের অনুরোধ জানিয়েছেন। এমপি রহমতুল্লাহও প্রতিমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। দ্বিতীয় ঢাকা গ্রন্থসুহৃদ সম্মেলনের বড় একটি কাজ ‘আলো ছড়ায় গ্রন্থাগার’ শিরোনামে স্মরণিকা/গ্রন্থ প্রকাশ। এর সূচীপত্রে তুলে ধরা হয়েছে বিবিধ, যা মূলত লেখক/সম্পাদকের জীবনে অর্জিত অভিজ্ঞতার প্রতিফলন। যেমন, গ্রন্থাগারের রকমফের, গ্রন্থাগার গড়ার নিয়ম, কমিটির কাজ, গ্রন্থাগারিকের কাজ, বেরাইদ গ্রন্থসুহৃদ সমিতি : যেভাবে শুরু, পাঠকসৃজন প্রকল্প, কেস স্টাডি : খুদে পাঠক প্রবীণ পাঠক, গ্রন্থাগার জরুরী কেন, গ্রন্থাগারের ইতিহাস, দেশে বিদ্যমান বেসরকারী গ্রন্থাগারগুলোর ঠিকানা (যতটুকু তারা সংগ্রহ করতে পেরেছেন) প্রভৃতি। রয়েছে থানা ও জেলাভিত্তিক পরিসংখ্যান। তবে বিভাগের টোটাল দেয়া থাকলে আরও ভাল হতো। বাংলাদেশে গ্রন্থাগার আন্দোলনে তাদের এই প্রয়াস ‘মাইলফলক’ হয়ে থাকবে। বইটি প্রকাশ করেছে বেরাইদ গণপাঠাগার। পাওয়া যাবে ‘গ্রন্থসুহৃদ’ (বাড়ি ২২২, সড়ক ৬, ব্লক ডি, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, ঢাকা ১২২৯), বেরাইদ গণপাঠাগার (বেরাইদ, ঢাকা) ও রাজধানীর শাহবাগ আজিজ সুপার মার্কেটের ‘পাঠক সমাবেশ’ আউটলেটে। ১১ ফর্মার বইটির রঙিন কভার পেজ দৃষ্টিনন্দন হয়েছে। মূল্য ২৫০ (আড়াইশ’) টাকা।
×