ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

একুশের জাগরণে

প্রকাশিত: ২২:০৫, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১

একুশের জাগরণে

মাতৃভাষা সবার কাছেই প্রিয়। সেই ভাষা আরও বেশি মধুর হয় যদি তা অর্জন করে নেয়া যায়। তখন উপলব্ধি করা যায় মাতৃভাষার টান কতটুকু। আমাদের মাতৃভাষা বাংলাটাও ঠিক তেমন মধুর একটি ভাষা। কারণ এ ভাষাটিকে আমরা বুকের তাজা রক্ত ঢেলে ছিনিয়ে এনেছি। যে কারণে এর মর্যাদাও আমাদের কাছে অনেক। গর্বোবোধ হয় এ ভাষার জন্য। সালাম, রফিক, বরকত, জব্বারদের মতো ভাষাসৈনিকরা যে ভাষা প্রতিষ্ঠিত করে গেছে তার আবেগ ও সম্মান বাঙালীদের কাছে অনেক। সত্যিকার অর্থেই মনের আবেগমিশ্রিত এক ভাষা বাংলা ভাষা। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাঙালী জীবনে একটি স্মরণীয় দিন। বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষাতে পরিণত করতে তৎকালীন যুব সমাজ ছিল সোচ্চার। যে কোন কিছুর বিনিময়ে বাংলা ভাষাকে রক্ষায় রাজপথে নেমে এসেছিল তারা। ভাষা রক্ষা হয়েছে ঠিকই বিনিময়ে দিতে হয়েছে বুকের তাজা রক্ত। আজও সেই রক্তভেজা ইতিহাস আমাদের নাড়া দিয়ে যায়। বার বার মনে করিয়ে দেয় বাংলা ভাষার অমূল্যতা। আজও মনের মণিকোঠায় জ¦লজ্বল করছে ভাষা শহীদদের নাম। তরুণ সমাজের পথ চলার প্রেরণা যোগায়। আরও অনুপ্রেরণা যোগায় নতুন করে পথচলার। ঘুরেফিরে প্রতিবছর বেশ আড়ম্বরেই পালিত হয় মহান ভাষাদিবস। নব জাগরণে জাগরিত হয়ে ওঠে চারদিক। বিভিন্ন আঙ্গিকে স্মরণ করার জন্য চলে ব্যাপক আয়োজন। তেমনি একটি আঙ্গিক ফ্যাশন জগত। ভাষাদিবসকে চিরজাগ্রত করার জন্য ফ্যাশন ট্রেন্ডে চলে ব্যাপক আয়োজন। শার্ট, টি-শার্ট, পাঞ্জাবি, ফতুয়া কিংবা শাড়িতে ভাষাদিবসের প্রতিকৃতি ফুটিয়ে তোলা হয়। দেখে যেন মনে হয় চলমান ক্যানভাস। জাগ্রত করে যাচ্ছে ভাষাদিবসের ইতিহাসকে। ফ্যাশন ট্রেন্ডের এই ধারা তরুণ সমাজে বেশ জনপ্রিয়। পোশাকগুলো শোভিত হয় শিল্পীর তুলিতে, ভাষার কবিতা ও গানের পঙক্তিতে। সমন্বয় ঘটানো হয়েছে ঐতিহ্য এবং আধুনিকতার। প্রায় সব আউটলেটেই দেখা মিলবে একুশের পোশাক। এ প্রসঙ্গে তরুণ ডিজাইনার রাহাত জানান, বিষয়ভিত্তিক পোশাক এখন সব বয়সীদের কাছেই জনপ্রিয়। বিশেষ করে ভাষাদিবস, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবসের মতো উপলক্ষগুলো। যে কোন উপলক্ষেই দারুণভাবে সাড়া জাগায় পোশাকগুলো। যে কারণে সব বয়সীদের জন্য ডিজাইন প্রস্তুত করা হয়। তবে তরুণদেরকেই প্রাধান্য দেয়া হয়। সব ধরনের পোশাকেই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে একুশের ভাবগাম্ভীর্য। যেহেতু একটু ঠাণ্ডা ভাব রয়েছে সেক্ষেত্রে কাপড় সিলেকশনে নেয়া হয়েছে বাড়তি সতর্কতা। কটন, নিপ কটন, মসলিন এবং খাদিকেই প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। ডিজাইনের ক্ষেত্রে চুজ করা হয়েছে সাদা এবং কালোর কম্বিনেশন। যেহেতু শোকাবহ একটি দিন সে কারণে কালোকে প্রাধান্য দিয়ে পোশাকগুলো ডিজাইন করা হয়েছে। তবে এ বছরে গতানুগতিক সাদা-কালোর কম্বিনেশনের বাইরে বেশ কিছু গাঢ় রঙ দিয়ে প্রস্তুত করা হয়েছে পোশাকগুলো। যেমন এ্যাশ, কফি কালার, পীত কালারসহ আরও কিছু নতুন রঙ। বেশিরভাগ ড্রেসই ফুলসিøভ। হাল্কা ঠাণ্ডার কথা মাথায় রেখে পাঞ্জাবি এবং শর্ট পাঞ্জাবির সঙ্গে উত্তরীয় সংযোজন করা হয়েছে। যা দ্যুতি ছড়াবে আপন মহিমায়। শাড়িতে হ্যান্ড স্প্রে এবং হাতের কাজ এবং কারচুপির কাজ লক্ষণীয়। সরাসরি কিংবা প্রতীকীভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে একুশের ভাবাবেগ। ডিজাইনে তুলে ধরা হয়েছে শহীদ মিনারের প্রতিকৃতি, স্বরবর্ণ ব্যঞ্জনবর্ণ। ডিজাইনের ভেরিয়েশন লক্ষ্য করা যায় টিশার্টে। মিছিল, বিভিন্ন অক্ষর, শহীদ মিনার, বজ্রমুঠি ইত্যাদি স্কেচ, এ্যাম্বুস, স্ক্রিনপ্রিন্ট, হ্যান্ড পেইন্টের মাধ্যমে টিশার্টগুলো ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। তবে শুধু মাত্র কালার কম্বিনেশন দিয়েই পোশাকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে একুশ। অর্থাৎ সাদা এবং কালো রঙের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে পোশাক। দামও হাতের নাগালে। পাঞ্জাবি এবং শর্ট পাঞ্জাািব মিলবে ৭৫০ টাকা থেকে ১৮০০ টাকা। ফতুয়া ৪৫০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা। টি-শার্ট ২০০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকা। শাড়ি ১০৫০ টাকা থেকে ২৫০০ টাকা। মসলিনের শাড়ি ১৫০০ টাকা থেকে ৩৫০০ টাকা। সালোয়ার কামিজ ৬৫০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা। মডেল : রুম্পা, সেলিম, মৌ, সার্লিন সাফা ছবি : রাহুল চৌধুরী মেকআপ : কবিতা’স মেকআপ স্টুডিও পোশাক : জাহিদ আকাশ ক্রিয়েশন
×