ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

অবকাঠামো উন্নয়নে পাল্টে গেছে জামালপুরের ইসলামপুর গ্রাম

প্রকাশিত: ১৫:০৩, ২৮ জানুয়ারি ২০২১

অবকাঠামো উন্নয়নে পাল্টে গেছে জামালপুরের ইসলামপুর গ্রাম

নিজস্ব সংবাদদাতা, জামালপুর ॥ বন্যার করাল গ্রাসে ক্ষতবিক্ষত অঞ্চল জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় ব্যাপক অবকাঠামো উন্নয়নে দিনদিন পাল্টে যাচ্ছে গ্রামীণ জনপদ। প্রতি বছর বন্যায় গ্রামীণ জনপদের রাস্তাঘাট, সেতু-কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে এলাকার হাজার হাজার মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। জানা গেছে, বর্তমান সরকারের গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ উন্নয়ন, নির্মাণ, পুননির্মাণ ও সংস্কারের লক্ষ্যে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতর, ইজিপিপি প্রকল্প, টিআর, কাবিখা, কাবিটা, সোলার প্যানেল স্থাপন বাস্তবায়নে ইতিমধ্যে গ্রামাঞ্চলে জনসাধারণের বসবাস, চলাচলসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলও আলোকিত হয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় সূত্র জানায়, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ২০২০-২১ অর্থবছরে অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচীর আওতায় ইজিপিপি প্রকল্পের ৪০ দিনব্যাপী ৭০টি উন্নয়ন প্রকল্পের ৩ কোটি ৪১ লাখ ৬ হাজার টাকা ব্যয়ে ৩ হাজার ৮০২ জন শ্রমিক ১২টি ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডে কাঁচা রাস্তা সংস্কার, নির্মাণ ও স্কুল-কলেজ এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে মাটি ভরাট করা হয়েছে। ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান দুলাল এমপির সদিচ্ছা ও আন্তরিক প্রচেষ্টায় গ্রামীণ জনপদ উন্নয়নে মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করে কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচী ‘কাবিখা’ ও কাজের বিনিময়ে টাকা ‘কাবিটা’, টেস্ট রিলিফ ‘টিআর’ ও ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচী এবং এলজিএসপি প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রামীণ জনপদের রাস্তা-ঘাট, সেতু-কালভার্ট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক উন্নয়ন বাস্তবায়নে জনপদের দৃশ্যপট পাল্টে গেছে। এছাড়াও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য হোসনে আরার প্রথম পর্যায়ে টিআর, কাবিখা ও উপজেলা পরিষদের টিআর, কাবিটার টিআর, কাবিখা, কাবিটার আওতায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে মাটি ভরাট, রাস্তা সংস্কারের ফলেও পাল্টে যাচ্ছে গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা ও জীবনযাত্রার মান। সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও প্রকল্পগুলো ঘুরে গ্রামীণ জনপদের উন্নয়ন দেখা গেছে। উপজেলা প্রশাসনের নিয়মিত নজরদারির মাধ্যমে এসব উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন হওয়ায় বদলে যেতে শুরু করেছে এলাকাবাসীর জীবন-জীবিকার মান। বন্যায় আক্রান্ত হয়ে যেখানে পা বাড়ানোই ছিল দুঃস্বপ্ন, সেখানে আবারো ছুটে চলছে ভ্যানসহ ছোট ছোট সব ধরনের যানবাহন। যাতায়াতে এসেছে আমূল পরিবর্তন। অন্যদিকে, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে হাজারো মানুষের দুঃখ লাঘব ও এলাকার অর্থনৈতিক উন্নতি সাধনে সেতু-কালভার্ট নির্মাণ ও সংস্কার হওয়ায় মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পাশাপাশি গ্রামীণ জনপদের চিত্র পাল্টে গেছে। গ্রামীণ এসব কাঁচা রাস্তা সংস্কারের ফলে এলাকার স্কুল-কলেজগামী হাজার হাজার ছাত্রছাত্রী আর এলাকার বয়োবৃদ্ধ রোগীরা যেন হাফ ছেড়ে বেঁচেছেন। এলাকাবাসীরা জানান, জনস্বার্থে মসজিদ, মাদ্রাসা, গোরস্থান কমিউনিটি ক্লিনিক, রাস্তাঘাট, সেতু-কালভার্টসহ সোলার প্যানেল স্থাপনে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে সকলের জীবনযাত্রার মান পরিবর্তন হয়েছে। এলাকার ছেলে-মেয়েদের স্কুলে যাতায়াতও নিশ্চিত হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেহেদী হাসান টিটু জানান, প্রতি বছর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এই উপজেলায় ২০২০-২১ অর্থ বছরে ইজিপিজি, টিআর, কাবিখা, কাবিটা, কর্মসূচীর আওতায় প্রায় প্রতিটি রাস্তাঘাট, নির্মাণ ও পুননির্মাণ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন করা হয়েছে। প্রত্যন্ত এলাকায় গ্রামীণ জনপদের হাজারো মানুষের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘব হয়েছে। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আইনজীবী জামাল আব্দুন নাছের বাবুল জনকণ্ঠকে বলেন, জানান, নিয়মিত নজরদারির মাধ্যমে উপজেলায় যেভাবে রাস্তার উন্নয়ন কাজ হচ্ছে, সেটা অব্যাহত থাকলে দ্রুত লাঘব হবে গ্রামীণ দুর্ভোগ আর গ্রামীণ অর্থনীতিতে আসবে আমূল পরিবর্তন।
×