ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

কলাপাড়ায় ভাড়ানির খাল দখল হচ্ছে

প্রকাশিত: ১৩:১৯, ২৮ জানুয়ারি ২০২১

কলাপাড়ায় ভাড়ানির খাল দখল হচ্ছে

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, পটুয়াখালী ॥ উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের ভাড়ানির খালটি দখল করে ফ্রি-স্টাইলে তোলা হচ্ছে স্থাপনা। কাঁচাপাকা স্থাপনা তোলার কারণে খালটি দখল হয়ে পানির প্রবাহ আটকে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। দেবপুর বাঁধঘাট থেকে লোন্দা পর্যন্ত আঁকাবাকা প্রায় নয় কিলোমিটার দীর্ঘ খালটির দুই পাড়ে চলাচলের পাকা সড়ক রয়েছে। দুই পাড়ে অন্তত ১০টি গ্রাম রয়েছে। এসব গ্রামের প্রায় পাঁচ হাজার কৃষকের কৃষি জমির পানি নিষ্কাশন হয় এই একমাত্র খালটি দিয়ে। খালটির লোন্দা অংশে তিন ভেন্টের একটি স্লুইস রয়েছে। কিন্তু খালটির অন্তত সাতটি স্পটে মূল খালসহ তীর দখল করে স্থাপনা তোলার যেন প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে অন্তত ৭০টি স্থাপনা তোলা হয়েছে। কাঁচা এবং সেমিপাকা এসব স্থাপনা তোলা হলেও ধানখালী ভূমি তহশীল অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নীরব রয়েছেন। তাঁদের নাকের ডগায় সরকারি খাল দখলের তান্ডব চললেও তারা রয়েছেন উদাসীন। আবার এসব দখলদাররা এতাটা প্রভাবশালী যে ভূমি অফিসের লোকজন তাঁদেও কাছে অসহায় হয়ে পড়ছে। স্থানীয়রা জানান, এ খালটি দিয়ে চালিতাবুনিয়া, ধানখালী, দেবপুর, পাঁচজুনিয়া, উত্তর দেবপুর, নিশানবাড়িয়া, দাসের হাওলা, ফুলতলী, লোন্দাসহ আরও কয়েকটি গ্রামের কৃষি জমির পানি নিষ্কাশন হয়। বর্ষায় জলাবদ্ধতা দূর হয়। খালটিতে মিঠাপানি সংরক্ষণের সুযোগ রয়েছে। বর্তমানে স্থাপনা তোলার পাশাপাশি খালটির কোন কোন অংশে নেট দিয়ে মাছের অস্থায়ী ঘের করা হয়েছে। কেউ কেউ দুই দিক থেকে বাঁধ দিয়ে পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত কওে মাছ শিকার করছে। যেন বহুমুখি কায়দায় খালটিকে গ্রাস করে গিলে খাওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। খালটির কোডেক অফিসের সামনে স্থানীয় ছত্তার খানকে একটি সেমিপাকা স্থাপনা কলাম করে তুলতে দেখা গেছে। যেন কোন রাখ-ঢাক নেই এই দখল প্রক্রিয়ায়। স্থানীয় বহু সচেতন মানুষ জানান, এমন দখল প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকায় খালটি অস্তিত্ব সঙ্কটে রয়েছে। পানির প্রবাহ চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হলে বর্ষায় ভয়াবহ জলাবদ্ধতার কবলে পড়বেন চাষীরা। আর শুকনো মৌসুমে সেচ সঙ্কটে রবিশস্যসহ সবজির আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। বর্তমানে দখল প্রক্রিয়া এমনভাবে চলছে যে দৃশ্যমান খালটির কোন ব্যবস্থাপনা নেই। ধানখালী ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা হামিদুল হক বাচ্চু বিশ্বাস জানান সোমবাড়িয়া বাজার থেকে ফুলতলী পর্যন্ত ইতোপূর্বে অন্তত ৭০ টি স্থাপনার তালিকা তৈরি করে উপজেলা অফিসে পাঠানো হয়েছে। তারপরও স্বশরীরে গিয়ে এসব স্থাপনা তোলার কাজে বাধা দিয়ে আসছেন। কলাপাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জগৎবন্ধু মন্ডল জানান, বিষয়টি তদন্ত করে আইননানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
×