ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ভূমি জটিলতায় টাঙ্গাইল মহাসড়কে আন্ডারপাস নির্মাণে ধীরগতি

প্রকাশিত: ১৫:০১, ২৭ জানুয়ারি ২০২১

ভূমি জটিলতায় টাঙ্গাইল মহাসড়কে আন্ডারপাস নির্মাণে ধীরগতি

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল ॥ প্রতি ঈদে তীব্র যানজটে পড়ে ঘরমুখো মানুষের দুর্ভোগে পড়তে হয় ঢাকা-টাঙ্গাইল ও বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে। এর মধ্যে, অন্যতম এলাকা হচ্ছে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার তারটিয়া ও এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড এলাকায়। এছাড়া তীব্র যানজট ও কুয়াশার কারণে বঙ্গবন্ধু সেতুর নিরাপত্তার কথা ভেবে টোল আদায় বন্ধ রাখা হয়। ভূমি অধিগ্রহণ না করায় ঢাকা-টাঙ্গাইল ও বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের তারুটিয়া এলাকায় চাল লেন প্রকল্পের আওতায় আন্ডারপাসের নির্মাণ কাজ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকলেও পুনরায় নির্মাণ কাজ শুরু করলে স্থানীয় এলাকাবাসী তা বন্ধ করে দেয়। জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখা থেকে একাধিকবার ওই জমির কাগজপত্র যাচাই-বাছাই ও পরিমাপ করলেও এখনও ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়নি। ৪ ধারা নোটিশের পরও অধিগ্রহণ না করায় ওই জায়গার সার্ভিস লেনের কাজ বন্ধ করে দেয় জমির মালিকরা। পরবর্তীতে পুনরায় সেখানে নির্মাণ কাজ শুরু করার সময় আবার বন্ধ করে দেওয়া হয়। যে কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মহাসড়কের নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জয়দেবপুর থেকে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা পর্যন্ত মহাসড়কটির সার্ভিস লেনসহ চার লেনের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় পাঁচ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। ৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়কের প্রতি কিলোমিটারের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৮ কোটি টাকারও বেশি। এ মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার প্রকল্পটি বিগত ২০১৩ সালে একনেক সভায় অনুমোদিত হয়ে কাজ শুরু হয় বিগত ২০১৬ সালে। বিগত ২০১৮ সালের ডিসেম্বর থেকে সার্ভিস লেনের কাজ শুরু হয়ে সার্ভিস লেনের কাজ শেষে হবে ২০২১ এর এপ্রিল মাসে। জমির মালিক মালেক খান জানান, সরকারিভাবে কোনো প্রকার নোটিশ না দিয়েই তাদের জমি নেওয়া হচ্ছে। এর আগে, রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরু করে কর্তৃপক্ষ। পরে তারা কাজে বাঁধা দিলে কর্তৃপক্ষ কাজ বন্ধ রেখে চলে যায়। মহাসড়কটির জায়গা দক্ষিণ পাশ থেকে নেওয়া হলেও রহস্যজনক কারণে মহাসড়কের উত্তর পাশ দিয়ে করা হচ্ছে। পরবর্তীতে কর্তৃপক্ষ তাদের জানায়, জমি পরিমাপ করা হবে। কিন্তু জমি পরিমাপ না করেই পুনরায় তারা নির্মাণ কাজ শুরু করে। এজন্য তারা তাতে বাঁধা দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন। আজাহার খান নামে আরেক ব্যক্তি জানান, দীর্ঘদিন ধরে মহাসড়কের কাজ শেষ হলেও ৪ ধারা নোটিশ ছাড়া আর কোনো কাগজই পাননি তারা। ভূমি অধিগ্রহণের জন্য একাধিকবার আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। জমির ক্ষতিপূরণ না দিয়ে কর্তৃপক্ষ শুধু কাজ করতে আসে। ভূমি অধিগ্রহণের নোটিশ ও জমির ক্ষতিপূরণ পাওয়ার পর তাদের জমিতে তারা মহাসড়কের সার্ভিস লেনের কাজ করতে দেবেন বলে জানান তিনি। তারিকুল ইসলাম জানান, মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে সালাম খান, মজিবুর রহমান, শামসুল হক, আব্দুল করিম ও রহিম খানের জায়গা অধিগ্রহণ করে তাদের টাকা পরিশোধ করার পরও রহস্যজসক কারণে তাদের জায়গায় কাজ শুরু করা হয়নি। তাদের স্থাপনা আগের মতোই রয়ে গেছে। অথচ তাদের জায়গা অধিগ্রহণ না করে বার বার শুধু কাজ করার চেষ্টা করছে। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের জায়গা অধিগ্রহণ করার জোর দাবি জানান তিনি। সাসেক প্রকল্পের প্রকৌশলী শহীদুল ইসলাম জানান, ওই জমির প্রস্তাবনাসহ টাকা জেলা প্রশাসক বরাবর জমা দেওয়া হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে অধিগ্রহণ হয়ে যাবে। চার লেন প্রকল্পের প্রজেক্ট ম্যানেজার অমিত কুমার চক্রবর্তী জানান, ভূমি অধিগ্রহণ না করায় তারুটিয়া এলাকায় সার্ভিস লেনের কাজ বন্ধ রয়েছে। ভূমি অধিগ্রহণ করা হলে তারুটিয়া এলাকায় অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে সার্ভিস লেনের কাজ শুরু হবে।
×