ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

এইচএসসির ফল প্রকাশে গেজেট জারি

প্রকাশিত: ২৩:০১, ২৭ জানুয়ারি ২০২১

এইচএসসির ফল প্রকাশে গেজেট জারি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ করোনার কারণে পরীক্ষা ছাড়া গতবছরের এইচএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশের লক্ষ্যে আইন সংশোধন করে গেজেট জারি করেছে সরকার। ফলে পরীক্ষা ছাড়াই বিকল্প মূল্যায়নের ভিত্তিতে ফল প্রকাশে এখন আর কোন আইনী বাধা থাকল না। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে আগামী মাসের প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাকির হোসেন। একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, দেশের সকল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের করোনার টিকার আওতায় আনা হবে। করোনা মহামারী পরিস্থিতিতে পরীক্ষা ছাড়া ২০২০ এর এইচএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশ করতে আইন সংশোধন করে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। সংসদে পাস হওয়া তিনটি বিলে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ সই করার পর গেজেট আকারে জারি করা হয়েছে। ‘ইন্টারমিডিয়েট এ্যান্ড সেকেন্ডারি এ্যাডুকেশন (এ্যামেন্ডমেন্ট) এ্যাক্ট-২০২১’ ‘বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) এ্যাক্ট-২০২১’, ‘বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) এ্যাক্ট-২০২১’ গেজেট আকারে জারি হওয়ায় এখন পরীক্ষা ছাড়াই বিকল্প মূল্যায়নের ভিত্তিতে ফল প্রকাশ করতে বাধা কেটে গেল। আইনগুলো সংশোধন হওয়ায় এখন বিশেষ পরিস্থিতে অতিমারী, মহামারী, দৈব দুর্বিপাকের কারণে বা অনিবার্য পরিস্থিতিতে কোন পরীক্ষা গ্রহণ, ফল প্রকাশ এবং সনদ করা সম্ভব না হলে সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপনের আদেশ দিয়ে কোন বিশেষ বছরে শিক্ষার্থীদের জন্য পরীক্ষা ছাড়াই বা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা নিয়ে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা পদ্ধতিতে মূল্যায়ন এবং সনদ দেয়ার নির্দেশ জারি করা সম্ভব হবে। ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গতবছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল ১ এপ্রিল থেকে। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে শুরু করলে ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। পরিস্থিতি ইতিবাচক না হওয়ায় ৭ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পঞ্চম ও অষ্টমের সমাপনীর মতো এইচএসসি পরীক্ষাও নেয়া যাচ্ছে না। অষ্টমের সমাপনী এবং এসএসসির ফলের গড় করে এইচএসসির ফল নির্ধারণ করা হবে। জেএসসি-জেডিসির ফলকে ২৫ এবং এসএসসির ফলকে ৭৫ শতাংশ বিবেচনায় নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিকের ফল ঘোষিত হবে। কিন্তু আইনে পরীক্ষা নিয়ে ফল প্রকাশের বিধান থাকায় তা সংশোধন করে বিশেষ পরিস্থিতিতে পরীক্ষা ছাড়াই ফল প্রকাশের বিধান যুক্ত করতে হয়েছে, যা গত রবিবার জাতীয় সংসদের অনুমোদন পায়। আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটি সূত্রে জানা গেছে, গেজেট জারির পর এখন আজকালের মধ্যেই ফল ঘোষণার তারিখ চূড়ান্ত করা হবে। ইতোমধ্যেই শিক্ষা বোর্ডের পক্ষ থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে দিনক্ষণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ফল প্রকাশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেদিনই সময় দেবেন সেদিনই ফল প্রকাশ করা হবে। আগামী মাসের প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহেই খুলছে প্রাইমারী ॥ স্বাস্থ্যবিধি মেনে আগামী মাসের প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাকির হোসেন। মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা জানান। জাকির হোসেন বলেন, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা হলেও আগের মতো একসঙ্গে সবার ক্লাস নেয়া হবে না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ক্লাস নেয়ার উপযোগী করে তুলতে বলা হয়েছে। আমরা ফেব্রুয়ারির যে কোনদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পর দেশের সকল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলে দেয়া হবে। সেক্ষেত্রে ফেব্রুয়ারির প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহে স্কুল খোলা হবে। প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, সরকারী প্রাথমিক স্কুলগুলো খোলা হলেও একাধিক শিফট করে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণীর ক্লাস নেয়া হবে। সেক্ষেত্রে পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে। বাকি ক্লাসগুলো সপ্তাহে একদিন করে নিতে নির্দেশনা দেয়া হবে। সব বিদ্যালয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাস নেয়া হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে বার্ষিক উন্নয়ন বরাদ্দ বাড়ানোর চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। নিয়মিত শিক্ষার্থীদের ক্লাসে পাঠাতে অভিভাবকদের সচেতন করতে নানা ধরনের কর্মসূচী হাতে নেয়া হয়েছে। এছাড়া ক্যাম্পেন হিসেবে ভিডিও করে প্রচারণা ও কার্টুন তৈরি করে তা টিভিতে প্রচার করা হবে। বিভিন্ন সংস্থা এগিয়ে আসতে চাচ্ছে। আমরা আলাপ-আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবো। কিন্ডারগার্টেন স্কুল খোলার বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, তারা (কিন্ডারগার্টেন) চাইলে যে কোন সময় স্কুল খুলতে পারে। এ বিষয়ে আমাদের কোন বাধা-নির্দেশ নেই। তারা আমাদের নিবন্ধন নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে না, তাদের বিষয়ে আমাদের কোন দায়-দায়িত্ব নেই। তবে নিবন্ধিতরা তাদের প্রতিষ্ঠান খুলতে চাইলে আমাদের সঙ্গে আলোচনা করে কিন্ডারগার্টেন স্কুল খুলতে পারবে। টিকার আওতায় প্রাথমিক শিক্ষক-কর্মচারীরা ॥ দেশের সকল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের করোনার টিকার আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাকির হোসেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ তথ্য তুলে ধরে বলেছেন, সব প্রাথমিক শিক্ষককে করোনার টিকার আওতায় আনা হবে। শিক্ষার্থীদের বয়স ১৮ বছরের নিচে হওয়ায় তাদের এ আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে না। শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের টিকা দেয়া হবে। স্কুল খোলার আগে বা পরে এ কর্মসূচী শুরু হবে। প্রাথমিকের সব শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের তালিকা তৈরি করে আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। ধাপে ধাপে সবাইকে টিকার আওতায় আনা হবে।
×