ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চসিক নির্বাচন হোক শান্তিপূর্ণ

প্রকাশিত: ২০:৪৫, ২৭ জানুয়ারি ২০২১

চসিক নির্বাচন হোক শান্তিপূর্ণ

আজ সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ইভিএমের মাধ্যমে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। দশ দিন আগে এই নির্বাচন বিষয়ে সম্পাদকীয়তে আমরা কিছু কথা বলেছিলাম। তখন কিছু সহিংসতার নমুনা প্রত্যক্ষ করা গিয়েছিল, যা অপ্রত্যাশিত। এখানেও ক্ষমতাসীন দলের মধ্যে লক্ষ্য করা গেছে বিভাজন ও গ্রুপিং। দলের ভেতর ঐক্য প্রত্যাশিত হলেও স্থানীয় পর্যায়ে এক নেতার সঙ্গে অন্য নেতার পরোক্ষ প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকে। কিন্তু নির্বাচনকালে সেই বৈরিতা প্রকাশ্য রূপ নেয়া সমীচীন নয়। আমরা আশা প্রকাশ করে বলেছিলাম চসিক নির্বাচনের প্রার্থীরা স্মরণে রাখবেন যে, তারা জনতার সেবা তথা দেশ সেবার জন্যই নির্বাচিত হওয়ার আশা নিয়ে অবতীর্ণ হচ্ছেন ভোটযুদ্ধে। তাই তারা নিজেদের এবং নিজ নিজ অনুসারীদের সংযত রাখবেন এবং গণতন্ত্রের সৌন্দর্য বজায় রেখে চট্টগ্রামবাসীকে একটি শান্তিপূর্ণ উৎসবমুখর নির্বাচন উপহার দেয়ার লক্ষ্যে কাজ করবেন। শেষ পর্যন্ত নিহত হওয়ার দুঃখজনক ও অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ছাড়া বড় ধরনের কোন সহিংসতা প্রত্যক্ষ করা যায়নি। এর নেপথ্যে চট্টগ্রামবাসীর সহিষ্ণুতা এবং সম্প্রীতি যে কাজ করেছে সেকথা বলাই বাহুল্য। তাই চট্টগ্রামের নাগরিকবৃন্দ দেশের মানুষের শুভেচ্ছা পাবেন। জনপ্রিয় চলচ্চিত্র তারকারা ভোট প্রার্থনায় অংশ নেয়ায় ভোটাররা বাড়তি আনন্দ পেয়েছেন। নির্বাচন মানেই উৎসব। তাতে বাড়তি আনন্দ উপাদান যুক্ত হওয়া নিঃসন্দেহে ভাল। বন্দরনগরীর ভোটারদের প্রত্যাশা-চসিক নির্বাচন সুষ্ঠু, সুন্দর, নির্বিঘ্ন ও পরিচ্ছন্ন হবে। তবে আশঙ্কা কিছুটা যে নেই তা নয়। অনেক ভোটকেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)। যদিও প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইতিবাচক বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি বলেন, একটি সুন্দর নির্বাচনের জন্য আশ^স্ত করার মতো পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায় মানুষ নির্বাচনী প্রচারে অংশগ্রহণ করছেন। ইভিএম ভোটারদের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে এখন পর্যন্ত যে পরিবেশ বজায় রয়েছে তা ধরে রাখতে হবে। সকল প্রার্থী যেন সমান অধিকার পায় এবং নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলে সেদিকে সবাইকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ৪১ ওয়ার্ডজুড়ে হচ্ছে মেয়র নির্বাচন। আর ৩৯ ওয়ার্ডে হবে সাধারণ ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর নির্বাচন। একটি ওয়ার্ডে এক কাউন্সিলর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। আরেকটিতে প্রার্থীর মৃত্যুজনিত কারণে স্থগিত করা হয়েছে নির্বাচন। লক্ষণীয় হলো, এবারের চসিক নির্বাচনে মেয়র পদের লড়াই হচ্ছে দলীয় প্রতীক নিয়ে। চট্টগ্রাম সিটিতে এটিই প্রথম। তবে কাউন্সিলরদের দলীয় সমর্থন দেয়া হলেও দলীয় প্রতীক ব্যবহারের সুযোগ দেয়া হয়নি। নির্বাচনের মতো একটি সংবেদনশীল, স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন শতভাগ আন্তরিকতা নিয়ে কাজ করবে, এটাই প্রত্যাশিত। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের সৌন্দর্য ও শক্তি সর্বজনবিদিত। মনে রাখতে হবে করোনা পরিস্থিতির ভেতর অনুষ্ঠিত হচ্ছে নির্বাচন। তাই স্বাস্থ্যবিধির দিকটিকে উপেক্ষা করা চলবে না। আমরা আগেও বলেছি আমাদের দেশে যে কোন নির্বাচনই হোক না কেন একদল সব সময়েই সমালোচনামুখর থাকে। তারা ছিদ্রান্বেষণকারী। কিন্তু নির্বাচনপ্রিয় সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্য দিয়ে সব সময়েই তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করে থাকে। মানুষের প্রত্যাশা, চসিক নির্বাচন হোক অংশগ্রহণমূলক, উৎসবমুখর এবং শান্তিপূর্ণ।
×