ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিস্কার

প্রকাশিত: ১৫:২৫, ২৬ জানুয়ারি ২০২১

জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিস্কার

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ রাজশাহী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সরকারকে আওয়ামী লীগ থেকে সামিয়কভাবে বহিস্কার করা হয়েছে। একইসঙ্গে তাকে দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিস্কারের জন্য সুপারিশ করে কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। তিনি রাজশাহী নগরের ১৪নং ওয়ার্ড (পূর্ব) আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলেন। মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সোমবার রাতে দলীয় কার্যালয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মাদ আলী সরকারকে দল থেকে বহিস্কারের সিদ্ধান্ত হয়। এরপর আওয়ামী লীগের সদস্য পদ থেকে তাকে সাময়িক বহিস্কার করে আদেশ জারি করা হয়। ডাবলু সরকার বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ও রাজশাহীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণে বাধা এবং দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে দল থেকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে। এছাড়াও তাকে স্থায়ীভাবে বহিস্কারের জন্য সুপারিশ করে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। এদিকে নির্ধারিত স্থানে রাজশাহী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণে বাধা দেয়ায় প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। একইদিন নগর ভবনের সরিৎ দত্ত গুপ্ত সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণের দাবিটি রাজশাহীবাসীর প্রাণের দাবি। ভাষা সৈনিক, বীর মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দলসহ সর্বস্তরের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র সোনাদীঘি সংলগ্ন সার্ভে ইনস্টিটিউটের পরিত্যক্ত স্থানে রাজশাহী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। শহীদ মিনার নির্মাণে ইতোমধ্যে সাড়ে ১৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। শহীদ মিনার নির্মাণের ব্যাপারে শুরুতে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান একমত থাকলেও পরবর্তীতে তিনি তার অবস্থান বদলে ফেলেন। রাজশাহীর সর্বস্তরের মানুষের প্রাণের দাবি রাজশাহী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বাধা দিয়ে আটকানো যাবে না বলেও মন্তব্য করেন সিটি মেয়র। সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রাজশাহী সদর আসনের এমপি ফজলে হোসেন বাদশা, নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর রুহুল আমিন প্রামাণিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফিজুর রহমান খান আলম, বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান, অ্যাডভোকেট মোজাফফর হোসেন, প্রফেসর গোলাম সাব্বির সাত্তার তাপু, মহানগর জাসদের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফিক। সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল এবং শহীদ মিনার নির্মাণে বাধাদানকারী ব্যক্তি আওয়ামী লীগের দলীয় পদে থাকতে পারে না। পাকিস্তান আমলে শহীদ মিনার নির্মাণে বাধা দেয়া হত। তেমনিভাবে রাজশাহীতে শহীদ মিনার নির্মাণে বাধা দেয়া হচ্ছে। রাজশাহী জেলা পরিষদের যেসব ছোট ছোট জায়গা আছে, সেগুলো যেন মিনি পাকিস্তান। সেখানে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ও শহীদ মিনার করতে দেওয়া হচ্ছে না। বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বিরোধীতাকারীদের ছাড় দেওয়া হবে না।
×