ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ট্রাভেল এজেন্সি বিল ২০২০ সংসদে পাস

প্রকাশিত: ০০:৩২, ২৬ জানুয়ারি ২০২১

ট্রাভেল এজেন্সি বিল ২০২০ সংসদে পাস

সংসদ রিপোর্টার ॥ দেশের ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর দেশে-বিদেশে শাখা খোলা এবং মালিকানা হস্তান্তরের সুযোগ দিতে বিদ্যমান আইন সংশোধন করে আনীত প্রস্তাব অনুমোদন করেছে জাতীয় সংসদ। সোমবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মোঃ মাহবুব আলী ‘বাংলাদেশ ট্রাভেল এজেন্সি (নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) বিল-২০২০’ সংসদে পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে বিলের ওপর দেয়া জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর নিষ্পত্তি করেন অধিবেশনের সভাপতি স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। গত ৭ সেপ্টেম্বর বিলটি সংসদে তোলেন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী। পরে সেটি পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। বিলটি পাস হওয়ায় এখন ট্রাভেল এজেন্সিগুলো সরকারের অনুমোদন নিয়ে দেশে-বিদেশে শাখা অফিস খুলতে পারবে। বর্তমানে কোন অপরাধের জন্য ট্রাভেল এজেন্সিকে জরিমানা করার সুযোগ নেই। কর্তৃপক্ষ তাদের নিবন্ধন স্থগিত বা বাতিল করে। পাস হওয়া বিলে জরিমানার সুযোগ রাখা হয়েছে। ট্রাভেল এজেন্সিগুলো যৌক্তিক কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিবন্ধনের আবেদন করতে না পারলে পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে জরিমানা দিয়ে আবেদন করতে পারবে। বর্তমান আইন অনুযায়ী, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিবন্ধনের আবেদন না করলে ট্রাভেল এজেন্সির নিবন্ধন বাতিল হয়ে যেত। পাস হওয়া বিলে বলা হয়েছে, কোন বিধান লঙ্ঘন করলে ছয় মাস জেল, পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দ- দেয়া হবে। এ সংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তিতে ফৌজদারি কার্যবিধি প্রযোজ্য হবে। অনুমোদন ছাড়া কোন ট্রাভেল এজেন্সি ঠিকানা পাল্টাতে পারবে না, সেই শর্তও দেয়া হয়েছে সংশোধিত আইনে। বিলটি জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলো তোলার সময় বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও বিএনপির কয়েকজন সংসদ সদস্য বিমানের টিকেট নিয়ে অনিয়ম-দুর্নীতি ও অব্যবস্থা নিয়ে মন্ত্রণালয়ের সমালোচনা করেন। জবাবে বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বিএনপি বিমানের দুর্নীতির জন্মদাতা উল্লেখ করে বলেন, বিমানের অব্যবস্থানা বিএনপি আমলে তৈরি হয়েছিল। বিএনপির আমলে বিমানকে লুটপাটের আখড়া বানিয়েছিল। বিএনপির শাসনামলে দেশের বিমানকে একেবারে ধ্বংস ও কবর রচনা করে দিয়েছিল। বিএনপির আমলে কোন বিমান কেনা হয়নি, যে কয়েকটি বিমান ছিল তার ছাদ দিয়ে পানি পড়ত। কিন্তু বর্তমান সরকার বিমান বহরে বিশ্বের সবচেয়ে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির নতুন নতুন বিমান ক্রয় করে ধ্বংসের হাত থেকে বিমানকে উদ্ধার করেছে। তিনি বলেন, মন্ত্রণালয় অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। আমরা অনেক ব্যবস্থা নিয়েছি। ডিজিএস সিস্টেম, টিকেট না পাওয়া এগুলো ছিল। আমরা তদন্ত করেছি। কিন্তু পদক্ষেপ নিয়েছি, যাতে কোন সমস্যা না হয়। টিকেটিং সিস্টেমে যাতে সমস্যা না হয় সে ব্যাপারেও ব্যবস্থা নিয়েছি। ট্রাভেল এজেন্সি, এয়ারলাইন্সগুলোর অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত করোনা মহামারীর কারণে। অনেক সঙ্কটের মধ্যে চলছে। কিন্তু এখন কেউ বলতে পারবে না টিকেট নেই। আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। এজেন্সি ও ভোক্তা- উভয়ের স্বার্থে এ বিল আনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা বলছি না দুর্নীতি নেই। তবে তা সীমিত আকারে আছে। যে জড়িত তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে বিলের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘আইনটি অনুমোদত হলে নবায়ন আবেদন দাখিলে বিলম্বের ও অপরাধের জন্য লাইসেন্স বাতিলের পরিবর্তে বিধি দ্বারা নির্ধারিত জরিমানা আদায়পূর্বক সনদ নবায়ন এবং নির্ধারিত শর্ত সাপেক্ষে মালিকানা হস্তান্তর, দেশে/বিদেশে শাখা অফিস খোলার সুযোগ সৃষ্টি হবে। ফলে ট্রাভেল এজেন্সি হতে কাক্সিক্ষত সেবাপ্রাপ্ত সহজ হবে। অধিকন্তু সরকারের রাজস্ব আয়ও বৃদ্ধি পাবে।’
×