ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ওয়ানডেতে অসহায় আত্মসমর্পণ ক্যারিবীয়দের

তামিমদের সিরিজ জয় ৩-০তে

প্রকাশিত: ২৩:৩৯, ২৬ জানুয়ারি ২০২১

তামিমদের সিরিজ জয় ৩-০তে

মিথুন আশরাফ ॥ দীর্ঘ ১০ মাস পর খেলতে নেমে প্রথম ওয়ানডেতে জড়তা ছিল। আর তাই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে উড়িয়ে দেয়া যায়নি। কিন্তু দ্বিতীয় ওয়ানডেতেই সহজ জয় মিলেছে। তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে সোমবার চট্টগ্রামে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দাপট দেখিয়েই হারিয়েছে বাংলাদেশ। ১২০ রানের দাপুটে জয় মিলেছে। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে টানা তিন জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। এই জয়ে আবার ইতিহাসও জড়িয়ে থাকল। ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একটি ম্যাচে তিন ব্যাটসম্যান সমান ৫০ উর্ধ ইনিংসে ৬৪ রান করে করেন। তামিম, মুশফিক ও মাহমুদুল্লাহ সবাই ৬৪ রান করে করেন। এরআগে ১৯৯১ সালে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতের শচীন টেন্ডুলকর, সঞ্জয় মাঞ্জরেকার ও মনোজ প্রভাকর এবং ২০০১ সালে জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে মার্ক ওয়াহ, স্টিভ ওয়াহ ও ড্যারেন লেহম্যান সমান ৩৬ রান করে করেছিলেন। এবার সব রেকর্ডকে ভেঙ্গে দিয়ে নতুন রেকর্ড গড়েন তামিম, মুশফিক ও মাহমুদুল্লাহ। সমান তিন ৬৪ রানের সঙ্গে এক অর্ধশতকও আছে। সেটি করেন সাকিব আল হাসান। ৫১ রান করেন। চার অর্ধশতকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে আগেই বড় সংগ্রহ দাঁড় করে ফেলে বাংলাদেশ। শুরুতে তামিম ইকবাল, এরপর সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ অর্ধশতক করেন। তামিম ৬৪, সাকিব ৫১ ও মুশফিক ৬৪ রান করে আউট হলেও মাহমুদুল্লাহ শেষ পর্যন্ত খেলে অপরাজিত ৬৪ রান করেন। আগে ব্যাটিং করে শেষ মুহূর্তে দ্রুতগতিতে রান তুলতে থাকেন মাহমুদুল্লাহ। ৪৩ বলে অপরাজিত ৬৪ রান করেন। এই চার ফিফটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে দেশের মাটিতে সর্বোচ্চ স্কোরই (২৯৭/৬) গড়ে বাংলাদেশ। এরআগে ২০১২ সালে খুলনায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে যে ৬ উইকেটে ২৯২ রানের ইনিংস গড়েছিল বাংলাদেশ, সেটিই দেশের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ স্কোর ছিল। সোমবার চার ফিফটিতে সেটিকেও পেছনে ফেলে দেয়। এই স্কোর সামনে থাকলে বিপদ তো আসারই কথা। এসেছেও। ওয়েস্ট ইন্ডিজ এরআগে ৮২৪ ওয়ানডে খেলে ৪৪৪ বার টার্গেট অতিক্রম করতে গিয়ে ১৭৬ বার সফল হয়েছে। এরমধ্যে ২৯৫ রানের ওপরে টার্গেটে খেলতে নেমে ৪৫ বারের মধ্যে মাত্র তিনবার সফল হতে পেরেছে। এবার তো দলটি আরও দুর্বল। আবার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ২৬০ রানের ওপরে টার্গেট নিয়ে খেলে কখনই জিততে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এবারও একই হাল হলো। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন (৩/৫১), মুস্তাফিজুর রহমান (২/২৪) ও মেহেদী হাসান মিরাজের (২/১৮) দুর্দান্ত বোলিংয়ে ১৭৭ রানেই গুটিয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। রোভম্যান পাওয়েল সর্বোচ্চ ৪৭ রান করেন। ঢাকায় টানা দুই ম্যাচ হেরে চট্টগ্রামে গিয়ে নতুন শুরুর আশা করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এবারও হতাশাই যুক্ত হয়। প্রথম ওয়ানডেতে ১২২ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ১৪৮ রানে অলআউট হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এবার সামনে জিততে ২৯৮ রানের টার্গেট পড়ে। এবার ১৭৭ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের সুপার লীগে পয়েন্টের খাতা শূন্যই থাকে তাদের। বাংলাদেশ দল জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে চায়। তাতে প্রথমবার সুপার লীগে খেলতে নেমেই পয়েন্ট তালিকায় ৩০ পয়েন্ট জমা করা যাবে। শতভাগ সাফল্য কুড়িয়ে নেয় বাংলাদেশ। বাংলাদেশের ‘লাকি ভেন্যু’ চট্টগ্রামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ২০১১ সালে জেতার পর আবার জয় মিলল। সেইসঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২০০৯ সালের পর দ্বিতীয়বারের মতো হোয়াইটওয়াশ করাও হলো। দেশের মাটিতে প্রথমবারের মতো ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করার স্বাদ মিলল। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৮বার হারানোও হলো। ওয়ানডেতে টানা ৯ বার ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারানোও গেল। বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক তামিম ম্যাচের আগে বলেছিলেন, ‘আমরা সিরিজ জিতেছি। কিন্তু আরও (বিশ্বকাপ সুপার লীগে) ১০ পয়েন্ট পাওয়ার আছে।’ তা পাওয়াও হলো। প্রথম ওয়ানডেতে ৬ উইকেটে জেতার পর দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৭ উইকেটে জিতে বাংলাদেশ। তৃতীয় ওয়ানডেতে আরও বড় জয় মিলল। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হ্যাটট্রিক সিরিজে হারানোর সঙ্গে হোয়াইটওয়াশও করেছে বাংলাদেশ। টানা তিন ওয়ানডে জিতে নিয়েছে।
×