ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অনলাইনে কাল থেকে নিবন্ধন

প্রকাশিত: ২৩:০০, ২৬ জানুয়ারি ২০২১

অনলাইনে কাল থেকে নিবন্ধন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সারাদেশে করোনা ভ্যাকসিনের গণপ্রয়োগে কাল থেকে অনলাইনে নিবন্ধন শুরু হচ্ছে। www.surokkha.gov.bd ওয়েবপেজে গিয়ে অথবা স্মার্ট ফোন থেকে এ্যাপটি ডাউনলোড করে নিবন্ধন করা যাবে। ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে হলে আঠারো বছরের উর্ধে সকল নাগরিককে নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধন ছাড়া কেউ ভ্যাকসিন পাবেন না। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ্যাপটির উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৭ জানুয়ারি করোনা ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনের পর থেকেই এই অ্যাপটি চালু হয়ে যাবে। সংবাদ সম্মেলনে ডিজিটাল ভ্যাকসিন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ‘সুরক্ষা’তে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশনের বিভিন্ন কারিগরি দিক সম্পর্কে অবহিত করেন তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী। এতে অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস করোনা ভ্যাকসিন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ‘সুরক্ষা’ ডেভেলপের সঙ্গে সম্পৃক্তদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এটি একটা যুগান্তকারী কাজ। ভারতের বাইরে সবচেয়ে স্বল্পমূল্যে বাংলাদেশ ভ্যাকসিন পাচ্ছে বলে জানান মুখ্য সচিব। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে সারাদেশে গণ ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হচ্ছে। তবে এর আগেই আগামীকাল (২৭ জানুয়ারি) থেকে ঢাকায় ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হচ্ছে। সব মিলিয়ে মোট ৫০০ জনকে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল অনুযায়ী এক সপ্তাহ এদের পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। দেশের ছয় শ্রেণীর নাগরিক ভ্যাকসিন পাবেন না। ১৮ বছরের নিচের শিশু, গর্ভবতী নারী, উচ্চ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তি, করোনা আক্রান্ত হওয়ার ৪ সপ্তাহের মধ্যে রয়েছেন যারা এবং হাসপাতালে ভর্তি গুরুতর অসুস্থ ব্যক্তি এর অন্তর্ভুক্ত। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ভ্যাকসিন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম সুরক্ষা সংক্রান্ত এক বৈঠকে এ তথ্য জানানো হয়। কিভাবে নিবন্ধন করতে হবে ॥ ভ্যাকসিন গ্রহণের জন্য নিবন্ধন ইচ্ছুক নাগরিক িি.িংঁৎড়শশযধ.মড়া.নফ তে প্রবেশ করতে হবে। অথবা এ্যাপ ডাউনলোড করেও নিবন্ধন শেষ করা যাবে। ‘রিয়েল টাইম’ এ্যাপটি ফ্রি ডাউনলোড করা যাবে। ওয়েবসাইট অথবা এ্যাপস যেখানেই প্রবেশ করা হোক ভ্যাকসিনের জন্য নিবন্ধক করুন এমন ঘরে গিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার দিতে হবে। জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর যাচাই করে সব ঠিক থাকলে স্ক্রিনে বাংলা ও ইংরেজীতে নিবন্ধনকারীর নাম দেখানো হবে। সেখানেই একটি ঘরে মোবাইল ফোন নম্বর চাওয়া হবে। এই নাম্বারটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই নাম্বারে পরবর্তীতে ভ্যাকসিন প্রয়োগ সংক্রান্ত তথ্য এসএমএস করা হবে। মোবাইল নাম্বার দেয়ার পর একটি ঘর পূরণ করতে হবে, যেখানে জানাতে হবে নিবন্ধনকারীর দীর্ঘমেয়াদী রোগ বা কো-মরবিডিটি আছে কিনা, থাকলে কোন্ কোন্ রোগ আছে। সেখানে আরেকটি ঘরে জানাতে হবে পেশা এবং তিনি কোভিড-১৯ সংক্রান্ত কাজে সরাসরি জড়িত কিনা। এরপর বর্তমান ঠিকানা ও কোন কেন্দ্র থেকে টিকা নিতে ইচ্ছুক তা নির্দিষ্ট করতে হবে। শেষ ধাপে ফরম সেভ করলে নিবন্ধনকারীর দেয়া মোবাইল নাম্বারে ওটিপি কোড পাঠানো হবে। সেই ওটিপি কোড দিয়ে ‘স্ট্যাটাস যাচাই’ বাটনে ক্লিক করলে নিবন্ধনের কাজ শেষ হবে। নিবন্ধন হয়ে গেলে ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজের তারিখ ও কেন্দ্রের নাম এসএমএস-এর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হবে। এরপর জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম্বার, জন্ম তারিখ দিয়ে লগইন করে এসএমএস-এর মাধ্যমে পাওয়া ওটিপি কোড দিয়ে টিকা কার্ড ডাউনলোড করতে হবে। এসএমএসে যে তারিখ দেয়া হবে, সেই তারিখে টিকা কার্ড ও জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে নির্ধারিত টিকাদান কেন্দ্রে গেলেই কোভিড-১৯-এর টিকা নিতে পারবেন নিবন্ধনকারীরা। এভাবে দুটি ডোজ শেষ হলে সুরক্ষা প্লাটফর্মের ওয়েব এ্যাপ্লিকেশন থেকে ভ্যাকসিন প্রাপ্তির সনদ সংগ্রহক করা যাবে। পরিচয় যাচাইয়ে এই এ্যাপ্লিকেশনে ১৮টি শ্রেণী করা হয়েছে। এই ১৮ শ্রেণীর মধ্যে রয়েছে নাগরিক নিবন্ধন, সরকারী স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী; অনুমোদিত সকল বেসরকারী স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা-কর্মচারী; প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত সকল সরকারী ও বেসরকারী স্বাস্থ্যসেবা কর্মকর্তা-কর্মচারী; বীর মুক্তিযোদ্ধা; সম্মুখসারির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য; সামরিক ও আধা সামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনী এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় অপরিহার্য কার্যালয়ের কর্মীরা। এছাড়া রয়েছেন সম্মুখসারির গণমাধ্যমকর্মী; নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি; সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভার সম্মুখসারির কর্মকর্তা-কর্মচারী; ধর্মীর প্রতিনিধি (সকল ধর্ম); মৃতদেহ সৎকারে নিয়োজিত ব্যক্তি; বিদ্যুত, পানি, গ্যাস, পয়ঃনিষ্কাশন ও ফায়ার সার্ভিসের মতো জরুরী সেবার সম্মুখসারির কর্মী; রেলস্টেশন, বিমানবন্দর ও নৌবন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারী; জেলা ও উপজেলায় জরুরী জনসেবায় সম্পৃক্ত সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী, ব্যাংক কর্মী এবং প্রবাসী অদক্ষ শ্রমিক।
×