ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

খাস জমি ও ফাঁকা জায়গায় পার্ক, খেলার মাঠ হবে

প্রকাশিত: ২৩:৩২, ২৪ জানুয়ারি ২০২১

খাস জমি ও ফাঁকা জায়গায় পার্ক, খেলার মাঠ হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যেসব ওয়ার্ডে খাস জমি ও অপ্রয়োজনীয় ফাঁকা জায়গা রয়েছে সেখানেই পার্ক খেলার মাঠ নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। শনিবার সকাল ১০টায় ঢাকার মোহাম্মদপুরে ইকবাল রোডে উদয়াচল পার্কের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে ঢাকা-১৩ আসনের সংসদ সদস্য সাদেক খান, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী, স্থপতি ইকবাল হাবিব, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সেলিম রেজা, ওয়ার্ড কাউন্সিলর সৈয়দ হাসান নূর ইসলাম রাষ্টন, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর শাহীন আক্তার সাথী উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। পরে উদয়াচল পার্কে ডিএনসিসি ও ভারতীয় হাইকমিশনের মধ্যে প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচ উদ্বোধন করেন ডিএনসিসি মেয়র ও ভারতীয় হাইকমিশনার। মেয়র আতিক বলেন, ডিএনসিসি এলাকায় ২৪টি মাঠ এবং পার্কের উন্নযন করা হচ্ছে। এর মধ্যে ১০টি মাঠ আন্তর্জাতিক মানের তৈরি করা হচ্ছে। এসব মাঠে বৃষ্টির পানি জমবে না। মাঠের ভেতর ব্যায়ামাগারসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা থাকবে। তিনি বলেন, এই ১০টি মাঠ আধুনিকায়ন করার পর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এসব মাঠে রক্ষণাবেক্ষণ করবেন তারা। তবে সংশ্লিষ্ট এলাকার পথশিশু ও মহল্লায় লোকজন যাতে খেলতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে। মেয়র আতিক বলেন, মোহাম্মদপুরে মোট আটটি পার্ক করা হচ্ছে। অন্যান্য ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তাদের এলাকায় পার্ক এবং মাঠ করার দাবি জানিয়েছেন। তাদের বলা হয়েছে যেখানে খাস জমি আছে সেগুলোর তালিকা সিটি কর্পোরেশনকে দেয়ার জন্য। এই তালিকা পেলে যথাযথ প্রক্রিয়ায় মাধ্যমে মাঠ এবং পার্ক করে দেয়া হবে। খেলাধুলার মাধ্যমে শিশু-কিশোরদের মাঝে সামাজিক ঐতিহ্য এবং বন্ধন ফিরিয়ে আনা হবে। ক্রিকেট ম্যাচ উদ্বোধনকালে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে আতিকুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর পরিবার ছিলেন ক্রীড়াপ্রেমী। খেলা-পাগল তাঁর পরিবার। তাঁদের কাছ থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে ডিএনসিসির বিভিন্ন এলাকায় মাঠ ও পার্ক উন্নয়ন করে যাচ্ছি। এই পার্কটি তারই ধারাবাহিকতা। মেয়র শৈশবের স্মৃতিচারণ করে বলেন, আমরা যখন ছোট ছিলাম, ক্রিকেট খেলার জন্য আশপাশের ঘরে-ঘরে গিয়ে চাঁদা তুলে ব্যাট কিনেছি, প্যাড কিনেছি। তখন আমাদের জন্য একটি ব্যাট, একটি প্যাড অনেক টাকা, অনেক দাম ছিল। তবে তখন এক ধরনের সামাজিক বন্ধন ছিল। এই সামাজিক বন্ধন দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। আমরা এখন একটি এ্যাপার্টমেন্টে, চার দেয়ালের মধ্যে বন্দী হয়ে গিয়েছি। আমাদের সামাজিকতা কমে যাচ্ছে। ভালবাসার বন্ধন কমে যাচ্ছে। আমাদের সামাজিক বন্ধন আরও দৃঢ় করতে হবে। আমরা যেন পাড়া উৎসব করতে পারি, খেলাধুলা করতে পারি। এর মাধ্যমে সামাজিক বন্ধন দৃঢ় হয়। এজন্য আমি এই মাঠটি এই এলাকার জনগণকে দিতে চাই। এখানে ছোট-বড়, ধনী-দরিদ্র, নারী-পুরুষ, সকল শ্রেণী-পেশার মানুষ এসে খেলতে পারবেন। এই মাঠ সকলের। আতিকুল ইসলাম আরও বলেন, ঢাকা শহরকে উন্নয়ন করতে হবে এটা আমাদের সকলের প্রত্যাশা। কিন্তু যেখানেই হাত দিচ্ছি, সেখানেই অবৈধ দখলদারকে দেখতে পাচ্ছি। খাল, মার্কেট, রাস্তাঘাট, মাঠ সর্বত্র অবৈধ দখলদার। পরবর্তী প্রজন্মের জন্য আমাদেরকে সুন্দর খেলার মাঠ, সুন্দর খাল, রাস্তাঘাট রেখে যেতে হবে। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা। মেয়র বলেন, ডিএনসিসির থেকে দশটি ক্রিকেট খেলার মাঠ আমরা করে দিচ্ছি। কিছু কিছু মাঠ আন্তর্জাতিক মানের হবে। মাঠে ক্রিকেটের পাশাপাশি অন্যান্য খেলাধুলাও করা যাবে। এই মাঠে বর্ষায় যাতে খেলা যায়, এজন্য পানি নিষ্কাশনের ভাল ব্যবস্থা রয়েছে, ব্যায়ামাগারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ টয়লেটের ব্যবস্থা আছে। অন্তর্ভুক্তিমূলক শহর করাই আমাদের লক্ষ্য। মেয়র আরও বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা এদেশের জন্য প্রাণ দিয়েছেন। আমাদের প্রাণ দিতে হবে না, খেলার মাঠ যেন আমরা দখল না করি, খাল যেন ময়লা না করি, যেন অবৈধভাবে দখল না করি কারণ যত বেশি খেলার মাঠ হবে, আমাদের শিশুরাও তত বেশি খেলতে পারবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী বলেন, একটি আদর্শ নগরের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে সেখানে নাগরিকের জন্য পার্ক মাঠসহ পক্ষ থেকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থাকবে।
×