ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে কাতারে কর্মরতরা পরিবার নিতে পারবেন

প্রকাশিত: ২৩:২৯, ২৪ জানুয়ারি ২০২১

করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে কাতারে কর্মরতরা পরিবার নিতে পারবেন

ফিরোজ মান্না ॥ কাতার প্রবাসী বাংলাদেশীসহ বিভিন্ন দেশের অভিবাসীদের পরিবারের জন্য ‘ফ্যামিলি রেসিডেন্স ভিসা’ পদ্ধতি চালু করলেও করোনার কারণে ওই ভিসা স্থগিত করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। দেশটি কোন ধরনের ভিসাই দিচ্ছে না। এমনকি ব্যবসায়ীদেরও ভিসা বন্ধ রেখেছে কাতার। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে কাতারে বৈধভাবে কর্মরতরা চাইলে তাদের পরিবারের সদস্যদের খুব সহজেই দেশটিতে নিয়ে যেতে পারবেন। আগে ভিজিট ভিসায় পরিবারের সদস্যদের কাতার নেয়ার অনুমতি ছিল। ভিজিট ভিসার মেয়াদ ছিল মাত্র এক মাস। ফ্যামিলি ভিসার মেয়াদ করা হয়েছে ৫ বছর। যদিও মধ্যপাচ্যের দেশ কাতারে জনশক্তি রফতানির বাজারটি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কাতারের শ্রমবাজার নিয়ে দুই দেশের মধ্যে শ্রম সম্পর্ক জোরদার করার জন্য কয়েক দফা উদ্যোগ নিয়েছে। দক্ষ জনশক্তি পাঠানোর বিষয়ে কাতার কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে প্রস্তাব দিয়েছে মন্ত্রণালয়। কিন্তু এতে কোন ফল হয়নি। তবে মন্ত্রণালয় আশা ছাড়েনি। ২০২২ ফুটবল বিশ্বকাপ অনুষ্ঠানের জন্য ১৪টি স্টেডিয়াম ও বেশ কয়েকটি হোটেল মোটেল নির্মাণ কাজের জন্য বাজারটিতে এক সময় বিপুলসংখ্যক কর্মী নিয়োগ পেয়েছেন। কিন্তু বর্তমানে কাতারের বাজারে কোন কর্মী নিয়োগ হচ্ছে না। বাংলাদেশের কর্মীরা অদক্ষ বলে কাতার কর্তৃপক্ষ অন্য ‘সোর্স কান্ট্রি’ থেকে কর্মী নিয়োগ করছে। যদিও কাতার কর্তৃপক্ষ চান, বাংলাদেশ থেকে দক্ষ কর্মী নিয়োগ করতে। কাতার এখন যদি দক্ষ কর্মী চায় তাহলে বাংলাদেশ দক্ষ কর্মী নিয়োগ দিতে পারবেন। দেশে এখন বিপুল পরিমাণ দক্ষ কর্মী তৈরি হয়েছে। কাতারে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্র অবশ্য জানিয়েছে, ২০১৪ সাল থেকে কাতারে যারা এসেছেন, তাদের ৮০ ভাগই অদক্ষ কর্মী ছিলেন। এদের মধ্যে বহু কর্মী দক্ষতা অর্জন করেছেন। তাদের কাতার কর্তৃপক্ষ দেশটিতে কাজের সুযোগ দিয়েছে। অদক্ষ কর্মীদের দেশে ফেরত পাঠিয়েছে। দেশটিতে বর্তমান বাস্তবতা হচ্ছে অদক্ষ জনশক্তির চাহিদা নেই। দেশটিতে এখন দক্ষ কর্মীর চাহিদা বেড়েছে। দক্ষ কর্মী পাঠাতে পারলে বাজারটি দেশের জন্য এখনও ভাল। কাতারে যে ধরনের দক্ষ কর্মীর প্রয়োজন সেই ধরনের কর্মী আমাদের দেশে এখনও তৈরি হচ্ছে না। কাতারের বিরুদ্ধে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পর দেশটি অর্থনৈতিকভাবে একটা সমস্যায় পড়ে যায়। এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে তাদের বেশ কয়েকবছর সময় লেগেছে। অবরোধ আরোপের ঘটনাটি ঘটে ২০১৬ সালে। এরপর থেকে দেশটিতে কর্মী কমতে শুরু করেছে। অবরোধের চেয়ে বড় কারণ হিসাবে বলা হচ্ছে, কাতারে নির্মাণাধীন অধিকাংশ প্রকল্প শেষ হওয়ার পথে রয়েছে। এখন নতুন কারে তারা অদক্ষ কর্মী না নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। ২০২২ সালে কাতারে বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা অনুষ্ঠিত হবে। এ কারণে দেশটিতে ১৪টি স্টেডিয়ামসহ হোটেল মোটেল নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ। বর্তমানে স্থাপনাগুলোর সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ চলছে। এ কাজে দক্ষ কর্মী ছাড়া অন্য কোন কর্মীর প্রয়োজন নেই বলে দেশটির কর্তৃপক্ষ কর্মী নিয়োগ অর্ধেকে নামিয়ে নিয়েছে। বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগ প্রায় বন্ধ করেই দিয়েছে। যদি দূতাবাসের পক্ষ থেকে কাতার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিভিন্ন সময় আলাপ আলোচনা করা হচ্ছে, দেশটিতে যাতে বাংলাদেশী কর্মীদের নিয়োগ করা হয়। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে দক্ষ কর্মী নিয়োগের বিষয়ে লিখিত প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
×