ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন

প্রকাশিত: ২৩:১৬, ২৪ জানুয়ারি ২০২১

যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ অভিষেক অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে আসা ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যদের ‘কার পার্কে’ বিশ্রাম নিতে বাধ্য হওয়ার ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গত বুধবার প্রেসিডেন্ট বাইডেনের শপথ গ্রহণ উপলক্ষে সারাদেশ থেকে ওয়াশিংটন ডিসিতে ২৫ হাজারের বেশি সেনা মোতায়েন করা হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া কিছু ছবিতে দেখা যায় ন্যাশনাল গার্ডের বেশ কয়েকজন সদস্য অনুষ্ঠান স্থলের কাছের একটি গাড়ি রাখার গ্যারেজে শুয়ে আছেন। এ ঘটনায় রাজনীতিকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। কয়েকটি অঙ্গরাজ্যের গবর্নর নিজ নিজ সেনাদের ডেকে পাঠিয়েছেন। খবর বিবিসি, সিএনএন, আলজাজিরা, ইউএসএ টুডে, ওয়াশিংটন পোস্ট, নিউইয়র্ক টাইমস, লস এ্যাঞ্জেলেস টাইমস, ফক্স নিউজ, পলিটিকো, রিপাবলিক ওয়ার্ল্ড ও দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যমগুলোর খবর অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট বাইডেন শুক্রবার ন্যাশনাল গার্ড ব্যুরোর প্রধানকে ডেকে ক্ষমা চেয়েছেন এবং এ বিষয়ে তিনি কি করতে পারেন তা জানতে চেয়েছেন। ফার্স্টলেডি জিল বাইডেন নিজে সেনাদের সঙ্গে দেখা করে তাদের ধন্যবাদ দিয়েছেন। তিনি সেনাদের জন্য উপহার হিসেবে হোয়াইট হাউস থেকে বিস্কুট নিয়ে যান। ফার্স্টলেডি বলেন, আপনারা আমাকে এবং আমার পরিবারকে সুরক্ষিত রেখেছেন। আমি আজ এখানে এসেছি আপনাদের ধন্যবাদ দিতে। সেনাদের কার পার্কে বিশ্রাম নেয়ার ছবি ছড়িয়ে পড়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ক্ষোভের ঝড় উঠে। কেউ কেউ বলেন, বদ্ধ পরিবেশে গাড়ির ধোঁয়ায় সেনাসদস্যরা অসুস্থ হয়ে যেতে পারতেন। সেখানে এমনকি পর্যাপ্ত টয়লেটও ছিল না। কেন সেনাদের ক্যাপিটল থেকে সরে যেতে বলা হয়েছিল তা নিয়েও পরস্পরবিরোধী খবর পাওয়া যাচ্ছে। দেশটির কয়েকটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কোন ব্যাখ্যা ছাড়াই সেনাদের ওই নির্দেশ দেয়া হয়। এ ঘটনায় কয়েকজন কংগ্রেস সদস্যও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা বলেন, সেনারা চাইলে বিশ্রাম নেয়ার জন্য তাদের কার্যালয়ের কক্ষগুলো ব্যবহার করতে পারেন। সেনাদের গ্যারেজে বিশ্রাম নেয়ার ঘটনা নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হলে বৃহস্পতিবার রাতেই তাদের আবার ক্যাপিটলে ফিরিয়ে নেয়া হয়। কিন্তু তাতেও কয়েকটি অঙ্গরাজ্যের গবর্নরের ক্ষোভ কমেনি। তাদের মধ্যে কেউ কেউ সেনাদের নিজ নিজ অঙ্গরাজ্যে ফিরে যাবার নির্দেশ দিয়েছেন। ফ্লোরিডার গবর্নর রন ডিসান্টিস এ ঘটনার পর নিজের অঙ্গরাজ্যের সেনাদের ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, এখন মনে হচ্ছে এটা প্রস্তুতিহীন একটি মিশন এবং এই মুহূর্তে সবথেকে সঠিক কাজ হচ্ছে তাদের (সেনাদের) বাড়িতে ফিরিয়ে আনা। যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাট সংখ্যাগরিষ্ঠ নতুন সিনেটের নেতা চাক শুমার বলেন, এ ঘটনা খুবই অবমাননাকর এবং প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি ভবিষ্যতে এমনটা আর কখনও ঘটবে না। সিনেটর রয় ব্লান্ট জানিয়েছেন, ‘সিনেট রুলস কমিটি’ এ ঘটনা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। ইউএস ন্যাশনাল গার্ড এবং ইউএস ক্যাপিটল পুলিশের পক্ষ থেকেও শুক্রবার এক যৌথ বিবৃতিতে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরুর কথা জানানো হয়। তারা বলেন, অফ-ডিউটিতে থাকা সেনাদের জন্য হোটেলে বা অন্যান্য জায়গায় থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেনাদের থাকার পরিবেশ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করায় তারা কংগ্রেস সদস্যদেরও ধন্যবাদ দিয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী কয়েক দিনে প্রায় ১৯ হাজার ন্যাশনাল গার্ড নিজ নিজ অঙ্গরাজ্যে ফিরে যাবেন। আর সাত হাজার সেনা দায়িত্ব পালনের জন্য ওয়াশিংটনে থেকে যাবেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ওয়াশিংটন ডিসিতে যে ২৫ হাজারের বেশি সেনা মোতায়েন করা হয়েছে তাদের মধ্যে ১৫০ থেকে ২০০ জন কোভিড-১৯ ‘পজিটিভ’ হয়েছেন। তবে এ তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন ॥ যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম কোন কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তি নির্বাচিত হলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে ভোটাভুটির মাধ্যমে অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল লয়েড অস্টিনকে নির্বাচিত করেছে সিনেট। শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) সিনেটে ভোটাভুটির মাধ্যমে এই আফ্রিকান আমেরিকান নির্বাচিত হন। লয়েড অস্টিন ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগ থেকে জেনারেল হিসেবে অবসর নেন। বৃহস্পতিবারের (২১ জানুয়ারি) ভোট সিনেটে তার চূড়ান্ত নির্বাচনের পথ সুগম করে। শুক্রবার ৯৩-২ ভোটে তিনি নির্বাচিত হন। শুধু দুই রিপাবলিকান সিনেটর তাকে ভোট দেননি। প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাইডেন তার আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের প্রধানের পদ পূরণ করলেন। লয়েড অস্টিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে ২২ জানুয়ারি শপথ নিয়েছেন। অস্টিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ জেনারেল। তাকে পেন্টাগনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। বাইডেন-ট্রুডো বৈঠক ॥ প্রথম বিদেশী রাষ্ট্রনেতা হিসেবে বুধবার অভিষেকের দিনেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডের সঙ্গে ফোনালাপ করার কথা জানায়। শুক্রবার প্রত্যাশিত সেই ফোনালাপটি সম্পন্ন হবার পর কানাডা সরকারের সূত্রে জানান হয়েছে, আগামী মাসে দুই নেতা বৈঠকে বসতে পারেন। তবে এটি স্পষ্ট নয়, এই বৈঠক ভার্চুয়ালি, নাকি মুখোমুখি হবে। কানাডা সূত্র জানায়, দুই নেতার ফোনালাপ ছিল ইতিবাচক। কানাডার প্রতি বাইডেনের বিশেষ আগ্রহ রয়েছে। তিনি জানেন যে, আমরা অংশীদার এবং যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র। গত চার বছরের চেয়ে এটি পরিবর্তনের লক্ষণ। প্রথম ফোনালাপে ট্রুুডো ও বাইডেন জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় গুরুত্বারোপ করেছেন বলে জানিয়েছে কানাডা সূত্র। বাইডেনের সঙ্গে আলোচনা নিয়ে ট্রুডোর কার্যালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, উভয় দেশ কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলার মৌলিক অগ্রাধিকারকে স্বীকৃতি দিয়েছেন। তারা ভ্যাকসিন সহযোগিতার বিষয়েও আলোচনা করেছেন। এই বিষয়ে হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, দুই নেতা মার্কিন-কানাডা সম্পর্কের কৌশলগত গুরুত্বের বিষয়ে আলোকপাত করেছেন। এতে উভয় দেশের সম্পর্ক নিয়ে ট্রুডোর অসন্তুষ্টির কথাও স্বীকার করা হয়েছে। প্রতিবেশী দুটি দেশের মধ্যে বৃহত্তম দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। কানাডার আশঙ্কা, যুক্তরাষ্ট্রের ‘বাই আমেরিকা’ নীতি কানাডাকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। মানুষকে অভুক্ত থাকতে দিতে পারি না ॥ যুক্তরাষ্ট্রের অনগ্রসর এবং অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে পড়া মানুষের জন্য নতুন দুই নির্বাহী আদেশে সই করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এতে কম আয়ের মার্কিনীদের জন্য খাদ্য সহযোগিতা বাড়ানো হয়েছে। যারা স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণে কাজে ফিরতে পারছেন না, তাদের কর্মহীন ভাতাসুবিধা বাড়ানো হয়েছে। স্থানীয় সময় শুক্রবার নির্বাহী আদেশে সই করার আগে এক বক্তব্যে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছেন, লোকজন কর্মহীন হয়ে পড়ে আছে, আমরা তা নীরব দর্শক হয়ে দেখে যেতে পারি না। আমরা লোকজনকে অভুক্ত থাকতে দিতে পারি না। আমরা এমন করতে পারি না, এমন করবও না। দেশে করোনায় চার লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়ে গেছে। দেশে জরুরী অবস্থা বিরাজ করছে। ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার জন্য সব ফেডারেল কর্তৃপক্ষকে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। বাড়িভাড়া দিতে না পারার জন্য ভাড়াটে উচ্ছেদ স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গৃহঋণ পরিশোধ না করার কারণে কোন ব্যাংককে বাড়ি জব্দ না করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ভিন্ন এক নির্বাহী আদেশে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ফেডারেল নাগরিক প্রণোদনা দ্রুত নিশ্চিত করা ও জনগণের হাতে পৌঁছানো সহজ করার জন্য অর্থ বিভাগের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন। বাইডেন নিজের দারিদ্র্য কখনও আড়াল করেননি। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মজীবী পরিবারের মুখপাত্র হয়েছেন তিনি। বাইডেন প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ সহিংসতা সামাল দিতে উদ্যোগ নিয়েছে। প্রেসিডেন্ট বাইডেনের দ্বিতীয় পূর্ণ কর্মদিবসেই জাতীয় গোয়েন্দা বিভাগের সমন্বয়ে একটি পরিচালকের পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে জেগে ওঠা চরমপন্থী এবং তাদের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে নজরদারির জন্য এই দফতর কাজ করবে। ট্রাম্পের চুক্তি পুনর্মূল্যায়ন করবেন বাইডেন ॥ আফগান সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবানের সঙ্গে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের করা শান্তি চুক্তি পুনর্মূল্যায়ন করবে নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন। হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাইডেনের নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেইক সুলিভান এরইমধ্যে আফগান কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। গত বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারি কাতারের রাজধানী দোহায় শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের পর মার্কিন সরকার ঘোষণা করে, তালেবান এই চুক্তিতে অটল থাকলে যুক্তরাষ্ট্র ও তার ন্যাটো মিত্ররা আফগানিস্তান থেকে পরবর্তী ১৪ মাসের মধ্যে সেনা প্রত্যাহার করে নেবে। এরইমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বগ্রহণ করেছেন বাইডেন। তার নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুলিভান জানিয়েছেন, নতুন প্রেসিডেন্ট তালেবানের সঙ্গে ওয়াশিংটনের করা চুক্তি খতিয়ে দেখতে চান। এর আগে বাইডেনের মনোনীত পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনও মার্কিন সিনেটকে জানিয়েছিলেন, বাইডেন প্রশাসন তালেবানের সঙ্গে ট্রাম্পের করা চুক্তি পর্যালোচনা ও পুনর্মূল্যায়ন করতে চায়। আফগান সরকার ও তালেবানের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলোও জানিয়েছিল, তারা নিজেদের মধ্যে শান্তি চুক্তি সই করার আগে তালেবানের সঙ্গে গত বছর ট্রাম্প প্রশাসনের করা শান্তি চুক্তির ব্যাপারে বাইডেনের দৃষ্টিভঙ্গি জানতে চান। বাইডেন প্রশাসন এমন সময় শান্তি চুক্তি পুনর্মূল্যায়নের ঘোষণা দিল যখন ওই চুক্তির ভিত্তিতে আফগান কারাগার থেকে পাঁচ হাজার বন্দীকে এরইমধ্যে মুক্তি দেয়া হয়েছে। আফগান সরকারের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার জন্য এমন শর্ত বেঁধে দিয়েছিল তালেবান। এর ভিত্তিতে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে দোহায় দুই পক্ষের আলোচনা শুরু হলেও এখনও কোন সমাধানে পৌঁছানো যায়নি। আফগান সরকার দাবি করছে, মুক্তিপ্রাপ্ত তালেবান বন্দীদের অনেকেই আবার যুদ্ধের ময়দানে ফিরে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তির কারণে সংগঠনটি আন্তর্জাতিক বাহিনীর ওপর হামলা বন্ধ করলেও সরকারের বিরুদ্ধে তাদের লড়াই অব্যাহত রেখেছে। ফেব্রুয়ারিতে সিনেটে ট্রাম্পের বিচার ॥ যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে সদ্য বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দ্বিতীয় অভিশংসন বিচার ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে শুরু করার ব্যাপারে একমত হয়েছেন ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান আইন প্রণেতারা। প্রতিনিধি পরিষদের ডেমোক্র্যাটরা সোমবারই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ‘বিদ্রোহে উসকানি’ দেয়ার অভিযোগ উচ্চকক্ষে পাঠিয়ে দেবেন। ফেব্রুয়ারির ৯ তারিখের আগে বিচারের যুক্তিতর্ক শুরু হবে না; এর ফলে ট্রাম্পের আইনজীবীরা নিজেদের বক্তব্য গুছিয়ে নেয়ার জন্য দুই সপ্তাহের বেশি সময় পাচ্ছেন। ট্রাম্পের উসকানির কারণেই ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল ভবনে রক্তক্ষয়ী দাঙ্গা হয়েছে বলে অভিযোগ ডেমোক্র্যাট আইন প্রণেতাদের। এই অভিযোগে ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টকে মেয়াদের একেবারে শেষ পর্যায়ে এসে দ্বিতীয় দফা অভিশংসিতও হতে হয়েছে। ৬ জানুয়ারির ওই রক্তক্ষয়ী দাঙ্গায় এক পুলিশ সদস্যসহ ৫ জনকে প্রাণ দিতে হয়েছে। এর আগে ২০১৯ সালের শেষদিকে প্রথমবার অভিশংসিত হয়েছিলেন ট্রাম্প। পরে রিপাবলিকানী নিয়ন্ত্রিত সিনেট তাকে দায়মুক্তি দেয়। গত বুধবার ট্রাম্পের ঝঞ্ঝামুখর মেয়াদ শেষ হয়েছে; তিনি উত্তরসূরীর অভিষেকে অংশ না নিয়েই ওয়াশিংটন ডিসি ছেড়েছেন। শুক্রবার সিনেটের শীর্ষ ডেমোক্র্যাট নেতা চাক শুমার জানান, প্রতিনিধি পরিষদে তাদের অভিশংসন প্রস্তাব সোমবার স্থানীয় সময় সন্ধাা ৭টার দিকে উচ্চকক্ষে পাঠাবে। প্রতিনিধি পরিষদের যে ডেমোক্র্যাট আইন প্রণেতারা সিনেটে কৌঁসুলির দায়িত্ব পালন করবেন মঙ্গলবার তারা শপথ নেবেন। পরে সিনেটের রিপাবলিকান নেতা মিচ ম্যাককনেলের কার্যালয় জানায়, বিচার খানিকটা দেরিতে শুরুর করার যে প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল শুমার তা মেনে নেয়ায় ম্যাককনেল খুশি হয়েছেন। দুই পক্ষের এই সমঝোতার ফলে ট্রাম্পের বিচারের যুক্তিতর্ক ৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে। সিনেটে ট্রাম্পের বিচার খানিকটা দেরিতে শুরু হোক- যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও এমনটাই চান বলে শুক্রবার ইঙ্গিত পাওয়া যায়। ট্রাম্পের বিচারের আগে অভ্যন্তরীণ বেশ কিছু সংস্কার কার্যক্রম শুরু করতেই আগ্রহ বেশি তার। শুক্রবার হোয়াইট হউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি বলেছেন, জো বাইডেন এখন আর সিনেটে নেই; সাবেক প্রেসিডেন্টের বিচারের ভার সিনেট ও কংগ্রেসের হাতে। ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করতে হলে সিনেটের দুই তৃতীয়াংশের সমর্থন লাগবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত রিপাবলিকান সিনেটরদের বড় অংশকেই সদ্য বিদায়ী প্রেসিডেন্টের পক্ষে দেখা যাচ্ছে। মিসিসিপির রিপাবলিকান সিনেটর রজার উইকার বলেন, তাকে দোষী সাব্যস্ত করার সম্ভাবনা কার্যত শূন্য। শুক্রবার ফ্লোরিডায় এক সাংবাদিক ট্রাম্পকে তার ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে প্রশ্ন করলে সদ্য বিদায়ী এ প্রেসিডেন্ট বলেন, কিছু তো করবই, কিন্তু এখনই না। ট্রাম্প এখন তার মার-আ-লগো গলফ ক্লাব থেকে ৫ মাইল দূরের একটি বাড়িতে থাকছেন, যাকে তিনি ডাকছেন ‘শীতকালীন হোয়াইট হাউস’ নামে।
×