ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

৩৪ ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থী

প্রকাশিত: ২৩:১৫, ২৪ জানুয়ারি ২০২১

৩৪ ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থী

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে কোন দলের বিদ্রোহী প্রার্থী নেই। তবে কাউন্সিলর পদে বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে। আওয়ামী লীগের প্রার্থিতা বঞ্চিত হয়ে ৩৪ ওয়ার্ডে স্বতন্ত্ররূপে বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে। কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে দফায় দফায় বৈঠক হলেও স্বতন্ত্র তথা বিদ্রোহী প্রার্থীদের মাঠ থেকে সরানো যায়নি শনিবার পর্যন্তও। এছাড়া ব্যবস্থা নেয়ার সময়ও আর নেই। তবে দলীয় পর্যায় থেকে ঘোষণা করা হয়েছে এসব বিদ্রোহী প্রার্থীকে দল থেকে বহিষ্কার এবং আগামীতে দলের কোন পদে রাখা হবে না। ফলে কাউন্সিলর পর্যায়ে মূল লড়াই আওয়ামী লীগ সমর্থিত ও বিদ্রোহীদের মধ্যেই অধিকাংশ ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ থাকবে বলে প্রতীয়মান। এ নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থীর মধ্যে লড়াই সীমাবদ্ধ থাকবে। চসিকের ৪১টি ওয়ার্ডের মধ্যে প্রার্থীর মৃত্যুজনিত কারণে এক ওয়ার্ডে নির্বাচন স্থগিত হয়েছে। আর একটি ওয়ার্ডে কোন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় একজন বেসরকারীভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচনী চিত্রে দেখা যায়, ১নং দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী হাজী মোহাম্মদ শফিউল আজিম। বিদ্রোহী হয়েছেন সাবেক কাউন্সিলর তৌফিক আহমেদ চৌধুরী। ২নং জালালাবাদ ওয়ার্ডে মোঃ ইব্রাহিমের সঙ্গে বিদ্রোহী হয়েছেন সাবেক কাউন্সিলর মোঃ শাহেদ ইকবাল, ৩নং পাঁচলাইশ ওয়ার্ডে সাবেক কাউন্সিলর কফিল উদ্দিন খানের বিপরীতে রয়েছেন আট বিদ্রোহী প্রার্থী। এদের মধ্যে অন্যতম মোঃ শফিকুল ইসলাম। ৪নং চান্দগাঁও ওয়ার্ডে দলীয় প্রার্থী মোঃ সাইফুদ্দিন খালেদ সাইফু। বিদ্রোহী রয়েছেন জাহেদ গিয়াস উদ্দিনসহ আরও ছয়জন। ৫নং মোহরা ওয়ার্ডে দল সমর্থিত প্রার্থী মোঃ কাজী নুরুল আমিন। বিদ্রোহী রয়েছেন আইয়ুব আলী চৌধুরীসহ দুজন। ৭নং পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ডে মোঃ মোবারক আলীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী মোঃ ইয়াকুব। ৮নং শুলকবহর ওয়ার্ডে দলীয় প্রার্থী মোঃ মোরশেদ আলম। বিদ্রোহী রয়েছেন মোঃ মহসিনসহ দুজন। ৯নং পাহাড়তলী ওয়ার্ডে দলীয় প্রার্থী আবসার মিয়া, বিদ্রোহী রয়েছেন মোঃ জহুরুল আলম জসিম, ১০নং কাট্টলী ওয়ার্ডে নেছার উদ্দিন আহমদের বিপরীতে বিদ্রোহী হয়েছেন মনোয়ারুল আলম চৌধুরী, ১১নং দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ডে অধ্যাপক মোঃ ইসমাইলের বিপরীতে বিদ্রোহিতায় নেমেছেন মোরশেদ আক্তার চৌধুরীসহ তিনজন। ১২নং সরাইপাড়া ওয়ার্ডে মোঃ নুরুল আমিনের বিরুদ্ধে রয়েছেন মোঃ সাবেক আহমদসহ দুজন। ১৩নং পাহাড়তলী ওয়ার্ডে মোঃ ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে রয়েছেন দুজন। ১৪নং লালখান বাজার ওয়ার্ডে আবুল হাসনাত মোহাম্মদ বেলালের বিরুদ্ধে রয়েছেন একজন। ১৬নং চকবাজার ওয়ার্ডে সৈয়দ গোলাম হায়দার মিন্টুর বিপরীতে রয়েছেন একজন। ১৭নং পশ্চিম বাকলিয়া ওয়ার্ডে মোঃ শহীদুল আলমের বিদ্রোহিতায় রয়েছেন শোয়েব খালেদ, ১৮নং ওয়ার্ডে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী। ১৯ নং বাকলিয়া ওয়ার্ডে দলের মোঃ নুরুল আলম প্রার্থী। এ ওয়ার্ডে অন্য প্রার্থীদের তেমন তৎপরতা নেই। ২০ নং দেওয়ানবাজার ওয়ার্ডে হাসান মাহমুদ হাসনীর বিপরীতে রয়েছেন রফিকুল আলম বাপ্পী, ২২নং এনায়েত বাজার ওয়ার্ডে প্রার্থী মোঃ সলিমউল্লাহ বাচ্চু। বিদ্রোহী হয়েছেন জাবেদ নজরুল ইসলামসহ তিনজন। ২৫নং রামপুরা ওয়ার্ডে আবদুস সবুর লিটনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী সরে দাঁড়িয়েছেন। ২৬নং উত্তর হালিশহর ওয়ার্ডে মোহাম্মদ হোসেনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়েছেন মোঃ ইলিয়াসসহ তিনজন। ২৭নং দক্ষিণ আগ্রাবাদ ওয়ার্ডে শেখ জাফরুল হায়দার চৌধুরীর বিরুদ্ধে একজন। ২৮নং পাঠানটুলী ওয়ার্ডে মোঃ নজরুল ইসলাম বাহাদুরের বিরুদ্ধে রয়েছেন একজন (যিনি একটি হত্যা মামলায় বর্তমানে কারাগারে)। ২৯নং পশ্চিম বাকলিয়া ওয়ার্ডে গোলাম মোহাম্মদ জুবায়েরের বিরুদ্ধে রয়েছেন দুজন। ৩০নং পূর্ব মাদারবাড়ি ওয়ার্ডে আতাউল্লাহর বিরুদ্ধে রয়েছেন একজন। ৩১নং আলকরণ ওয়ার্ডের নির্বাচন স্থগিত হয়েছে এক প্রার্থীর মৃত্যুতে। ৩২নং আন্দরকিল্লা ওয়ার্ডে জহরলাল হাজারীর বিপরীতে বিদ্রোহী রয়েছেন দুজন। ৩৩নং ফিরিঙ্গীবাজার ওয়ার্ডে মোঃ সালাউদ্দিনের বিপরীতে রয়েছেন একজন। ৩৪নং পাথরঘাটা ওয়ার্ডে পুলক খাস্তগীরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী রয়েছেন তিনজন। ৩৬নং গোসাইলডাঙ্গা ওয়ার্ডে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর বিরুদ্ধে রয়েছেন একজন। ৩৭নং উত্তর মধ্য হালিশহর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে নতুন তফসিলে নির্বাচন হচ্ছে। এতেও দলের একাধিক প্রার্থী রয়েছেন। ৩৮নং দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর ওয়ার্ডে গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে রয়েছেন একজন। ৪০নং উত্তর পতেঙ্গা ওয়ার্ডে আবদুল বারেকের বিপরীতে বিদ্রোহী রয়েছেন দুজন। ৪১নং দক্ষিণ পতেঙ্গা ওয়ার্ডে সালেহ আহমদ চৌধুরীর বিপরীতে বিদ্রোহী রয়েছেন চারজন। নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরিতে বৈঠক আজ ॥ চসিক নির্বাচন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরিতে আজ রবিবার নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশ ও আনসার সদস্যদের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবার কথা রয়েছে। চট্টগ্রামের সার্কিট হাউসে আঞ্চলিক দফতরের নির্দেশনা অনুযায়ী এসব বাহিনীর সদস্য সংখ্যা নির্ধারিত হবে। এক্ষেত্রে জনবল সঙ্কট নিরসনে জেলা পর্যায়ের পুলিশ ও আনসার বাহিনী অতিরিক্ত জনবল হিসেবে চসিক নির্বাচনে নিয়োজিত করা হবে। সিএমপির এক উর্ধতন কর্মকর্তা জনকণ্ঠকে জানান, নির্বাচনের পূর্ববর্তী দিন এবং নির্বাচনের দিন ও ভোট গণনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত পুলিশ সদস্যদের কমপক্ষে তিন দিনের জন্য নির্ধারিত কেন্দ্র ও নির্বাচন কমিশন প্রহরায় ব্যস্ত থাকতে হয়। ফলে অতিরিক্ত পুলিশ বরাদ্দ পাওয়া না গেলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা কঠিন হয়ে পড়বে। এদিকে র‌্যাব, পুলিশের পাশাপাশি আনসার সদস্যরাও ভোট কেন্দ্রগুলোতে দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়া বিজিবি সদস্যরা ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে টহল দেয়ার পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতেও কড়া নজরদারি রাখবে বলে জানা গেছে।
×