ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে পারছেনা ইসি -বাবলু

টিকা উপহার প্রমাণ করেছে ভারত ও বাংলাদেশের বন্ধুত্ব অকৃত্রিম এবং অনুপম ॥ জি এম কাদের

প্রকাশিত: ১৭:০৭, ২৩ জানুয়ারি ২০২১

টিকা উপহার প্রমাণ করেছে ভারত ও বাংলাদেশের বন্ধুত্ব অকৃত্রিম এবং অনুপম ॥ জি এম কাদের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কোভিড-১৯ টিকা উপহার পাঠানোয় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের। শনিবার জাতীয় পার্টির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ভারত সরকারের উপহার ২০ লাখ ডোজ ‘কোভিশিল্ড’ বাংলাদেশকে দেয়ায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছেন সাবেক মন্ত্রী জি এম কাদের। অভিনন্দন বার্তায় ভারত সরকারের পাশাপাশি দেশটির জনসাধারণের প্রতিও শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন তিনি। কাদের বলেন, মহামারীকালে ভারত সরকারের এই উপহার বাংলাদেশের জনগণ কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণে রাখবে। ভারতের সেরাম ইনষ্টিটিউটে তৈরী অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার এই ভ্যাকসিন পেয়ে দেশের মানুষ অত্যন্ত খুশি হয়েছে। করোনার ছোবলে বিশ্বব্যাপী যখন ভয়ার্ত পরিবেশ তখন ভারত সরকারের এই উপহার প্রমাণ করেছে, ভারত ও বাংলাদেশের বন্ধুত্ব অকৃত্রিম এবং অনুপম। তিনি বলেন, আগামী দিনে বন্ধু প্রতীম ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হবে। ভারত সরকারের উপহার হিসেবে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোভিশিল্ডের ২০ লাখ ডোজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে পৌঁছায়। প্রতিবেশী কোনো দেশকে ভারতের উপহার হিসাবে দেয়া টিকার সবচেয়ে বড় চালান এটি বলে দেশটির হাই কমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী জানিয়েছেন। মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে পারছেনা ইসি- বাবলু এদিকে জাতীয় পার্টি মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেছেন, সরকারী দলের অন্তর্কলহ প্রকাশ্যে চলে এসেছে। এই অশনি সংকেত ভালো নয়, এতে সাধারণ মানুষের মাঝে ভীতি সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন, সরকারী দলের এক সংসদ সদস্য তাদের এক শীর্ষ নেতাকে রাজাকার পরিবারের সদস্য বলেছেন। এক শীর্ষ নেতার পৌর নির্বাচনকে ঘিরে প্রকাশ্যে এসেছে এই বিরোধ। তারা নিজেদের স্বার্থ নিয়ে এতটাই ব্যস্ত যে, জনগণের স্বার্থ নিয়ে ভাবনার সময় নেই তাদের। অবস্থা এমন হয়েছে যে বিরোধী দলের আর কিছুই বলতে হচ্ছে না, নিজেরাই নিজেদের অপকর্ম প্রকাশ্যে তুলে ধরছেন। শনিবার জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান-এর বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় তরুণ পার্টি ঢাকা মহানগর উত্তর-এর প্রথম দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সাবেক এই ডাকসু নেতা বলেন, নির্বাচনে সন্ত্রাস হচ্ছে, প্রার্থী খুন হচ্ছে। এমন নির্বাচন আমরা চাইনা। আমরা চাই মানুষ যেন অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে ভোট দিতে পারে। বর্তমান নির্বাচন কমিশন গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে ব্যর্থ হয়েছে। মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে পারছে না নির্বাচন কমিশন। দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা ভেঙ্গে চুরমার করে দেয়া হয়েছে। সরকারী দলের এক শীর্ষ নেতার ভাই বলেছেন, সরকার ভাতের অধিকার নিশ্চিত করতে পারলেও ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে পারেনি। দেশে ভ্যাকসিন এসেছে-এটা আনন্দের খবর কিন্তু ভ্যাকসিন নিয়ে সরকারের কোন রোডম্যাপ নেই, কোন নীতিমালা নেই সরকারের এমন মন্তব্য করে সাবেক মন্ত্রী বাবলু বলেন, দেশের মানুষ জানতে চায় কারা প্রথম ভ্যাকসিন পাবে। কীভাবে দেশের মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়া হবে। দেশের প্রতিটি মানুষকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দিতে হবে। কারণ, ভ্যাকসিন পাওয়া আমাদের জন্মগত এবং সাংবিধানিক অধিকার। তাই প্রত্যেকে ভ্যাকসিন দিতে সরকার বাধ্য। দেশের মানুষ যতটা উন্নয়ন চায়, তার চেয়ে বেশি সুশাসন চায় একথা উল্লেখ করে বাবলু বলেন, পদ্মা ব্রীজ আর ফ্লাইওভার-এর আগে সুশাসন চায় মানুষ। সুশাসন নিশ্চিত না হলে ঐ ব্রীজ দিয়ে ১০টি হোন্ডায় ২০টি গুন্ডা দ্রুত সময়ে মানুষের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলবে। পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ উন্নয়নের সাথে সুশাসন নিশ্চিত করেছিলেন। তাই দেশের মানুষ জাতীয় পার্টির নেতৃত্বে সরকার চায়, দেশের মানুষ পল্লীবন্ধুর সোনালী অধ্যায়ে ফিরে যেতে চায়। ’৯০ সালের পর দুটি দল পরিকল্পিতভাবে তরুণ সমাজের মূল্যবোধ ধ্বংস করে দিয়েছে মন্তব্য করে বাবলু বলেন, সরকারী দলের ছত্রছায়ায় তরুণদের ক্যাসিনো, জুয়া ও মদের ব্যবসায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় অনৈতিক কাজে জড়িত ছিল তরুণরা কিন্তু তাদের কথা কেউ ভাবেনা। এখন অনেককেই আটক করা হয়েছে কিন্তু বছর ঘুরলেও তাদের বিচার হচ্ছেনা। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের সংসদে ও রাজপথে ধর্ষণ রোধে মৃত্যুদন্ডের বিধান রেখে আইন করতে দাবি জানিয়েছিলেন। সরকার মৃত্যুদন্ডের বিধান রেখে আইন করেছে কিন্তু ধর্ষণ কমেনি। আবার মৃত্যুদন্ডের বিধান থাকলেও হত্যা কমছেনা। কারণ, আইন সঠিকভাবে প্রয়োগ হচ্ছে না। বিএনপি ও আওয়ামী লীগ দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ হয়েছে। দ্রুততার সাথে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দিতে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়ে বাবলু বলেন, দীর্ঘ সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলে দেশের ভবিষ্যত হুমকির মুখে পড়বে। অটোপাশের কারণে শিশুরা প্রকৃত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, মোঃ জাকির হোসেন মৃধা, কে.এম. সুজনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব কে.এম. কামাল উদ্দিন স্মরণের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন- প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভরায়, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, এডভোকেট মোঃ রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, জহিরুল ইসলাম জহির প্রমুখ।
×