ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জয় টাইগারদের

প্রকাশিত: ১৭:৫৪, ২২ জানুয়ারি ২০২১

এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জয় টাইগারদের

স্পোর্টস রিপোর্টার॥ স্থায়ী অধিনায়ক হিসেবে শুরুটা দারুন হয়েছে তামিম ইকবালের। তার নেতৃত্বে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ দল। আজ মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ক্যারিবীয়দের ৭ উইকেটে উড়িয়ে দিয়েছে টাইগাররা। ক্যারিবীয়দের বিরুদ্ধে এ নিয়ে টানা তৃতীয় সিরিজ ও সার্বিকভাবে পঞ্চম ওয়ানডে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ দল। আগে ব্যাট করে ৪৩.৪ ওভারে মাত্র ১৪৮ রানেই গুটিয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস। জবাবে ৩৩.২ ওভারে ৩ উইকেটে ১৪৯ রান তুলে জয় পায় টাইগাররা। প্রথম ওয়ানডেতে টস হেরে আগে ব্যাট করে মাত্র ১২২ রানেই গুটিয়ে যায় ক্যারিবীয়রা। ৬ উইকেটের সহজ জয় পায় বাংলাদেশ। আজ তাই টস জিতেও আগে ব্যাটিং নেয় উইন্ডিজ দল। তাছাড়া রৌদ্রোজ্জ্বল পরিবেশ দেখে আগে ব্যাট করে দারুন স্কোরের আশায় ছিল তারা। একটি পরিবর্তন নিয়ে নামে দলটি। কিওর্ন ওটলি সুযোগ পান একাদশে। অপরিবর্তিত দল নিয়ে নামে বাংলাদেশ। শুরুটাই ভাল হয়নি ক্যারিবীয়দের। এদিনও মুস্তাফিজুর রহমান আঘাত হেনেছেন প্রথমে। পরে ওটলি প্রতিরোধ গড়লেও স্পিন আক্রমণ শুরু হতেই ধসে পরে সফরকারীদের ব্যাটিং লাইন। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট খোয়াতে থাকে তারা মেহেদি হাসান মিরাজের অফস্পিন আর সাকিব আল হাসানের বাঁহাতি স্পিনে। ওটলি ৪৪ বলে ২ চার, ১ ছক্কায় ২৪ রান করে মিরাজের বলে সাজঘরে ফেরার পর ধস নামে ক্যারিবীয়দের ব্যাটিংয়ে। সেই ধস ঠেকিয়ে দেন রোভম্যান পাওয়েল। তিনিও ৬৬ বলে ২ চার, ১ ছক্কায় ৪১ রানে মিরাজের চতুর্থ শিকারে পরিণত হলে ৩৮ বল আগেই শেষ হয় উইন্ডিজদের ইনিংস। এনক্রুমাহ বোনার ২১ বলে ২০, আলজারি জোসেফ ২১ বলে ১৭ রান করলে ক্যারিবীয়রা ১৪৮ রান পর্যন্ত যেতে পেরেছে। ক্যারিয়ারসেরা বোলিং করেন মিরাজ। ৯.৪ ওভারে মাত্র ২৫ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন তিনি। এর আগে তার ওয়ানডেতে সেরা বোলিং ছিল ২৯ রানে ৪ উইকেট। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষেই সিলেটে সেই কৃতিত্ব দেখিয়েছিলেন মিরাজ। এছাড়া মুস্তাফিজ ৮ ওভারে ৩ মেডেনে ১৫ রান দিয়ে ২টি ও সাকিব ১০ ওভারে ৩০ রান দিয়ে ২টি উইকেট নেন। জবাব দিতে নেমে লিটন দাসকে নিয়ে দারুনভাবে শুরু করেন তামিম। ৫.৫ ওভারে ৩০ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন তারা। তবে আক্রমণাত্মক লিটন ২৪ বলে ৪ চারে ২২ রান করার পর বাঁহাতি আকিল হোসেনের স্পিনে এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফেরেন। এরপর ধীরস্থির তামিম দ্বিতীয় উইকেটে নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে ৪৭ রানের দারুন এক জুটি গড়েন। এতেই অভীষ্ট্য লক্ষ্যের অর্ধেক পেরিয়ে যায় বাংলাদেশ। এদিনও শান্ত বড় স্কোর পাননি, ২৬ বলে ২ চারে ১৭ রান করার পর জেসন মোহাম্মদের শিকার হয়েছেন তিনি। অবশ্য তামিম থামেননি। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৪৮তম ফিফটি পেয়েছেন তিনি। এর ফলে বাংলাদেশের পক্ষে ওয়ানডে ক্রিকেটে সর্বাধিক ফিফটির মালিকও হয়েছেন। ৪৭ ফিফটি হাঁকানো সাকিব পেছনে পড়ে গেছেন তার। হাফ সেঞ্চুরির পরই রেমন রেইফারের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন বাঁহাতি তামিম। ৭৬ বলে ৩ চার, ১ ছক্কায় ৫০ রান করেন তিনি। সাকিবের সঙ্গে ৩২ রানের জুটি ভেঙ্গে তামিম সাজঘরে ফিরে গেলেও জয়ের থেকে তখন মাত্র ৪০ রান দূরে ছিল বাংলাদেশ দল। বাকিটা সাকিব ও মুশফিকুর রহিম সহজেই পাড়ি দিয়েছেন। তারা ৪০ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে ১০০ বল বাকি থাকতেই জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। সাকিব ৫০ বলে ৪ চারে ৪৩ ও মুশফিক ৯ রানে অপরাজিত থাকেন। টানা দুই জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ জয় নিশ্চিত করল বাংলাদেশ। স্থায়ী অধিনায়ক হিসেবে প্রথম সিরিজেই বাজিমাত করলেন তামিম। ক্যারিবীয়দের বিরুদ্ধে টানা তৃতীয় সিরিজ জিতল টাইগাররা। সবমিলিয়ে তাদের বিপক্ষে বাংলাদেশের মোট ওয়ানডে সিরিজ জয় ৫টি। সংক্ষিপ্ত স্কোর॥ ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইনিংস- ১৪৮/১০; ৪৩.৪ ওভার (রোভম্যান ৪১, ওটলি ২৪, এনক্রুমাহ ২০, আলজারি ১৭; মিরাজ ৪/২৫, মুস্তাফিজ ২/১৫, সাকিব ২/৩০)। বাংলাদেশ ইনিংস- ১৪৯/৩; ৩৩.২ ওভার (তামিম ৫০, সাকিব ৪৩*, লিটন ২২; রেইফার ১/১৮)। ফল॥ বাংলাদেশ ৭ উইকেটে জয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ॥ মেহেদি হাসান মিরাজ (বাংলাদেশ)।
×