ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে জাপান টোব্যাকো !

প্রকাশিত: ১৪:১৭, ২২ জানুয়ারি ২০২১

বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে জাপান টোব্যাকো !

অনলাইন রিপোর্টার ॥ দেশে আলোচিত বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে আসা জাপান টোব্যাকোকে দেওয়া বাড়তি সুবিধা নিয়ে নানা প্রশ্নের উদ্রেক হয়েছে। তামাক খাতের এই কোম্পানি জাপান টোব্যাকো ইন্টারন্যাশনাল (বাংলাদেশ) লিমিটেড-জেটিআই বেশি বিনিয়োগের কথা বলে একের পর এক বাড়তি সুবিধা আদায় করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মূল কোম্পানি থেকে সাড়ে ৫ শতাংশ হারে তাদের ঋণ গ্রহণের বিষয়ে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষও (বিডা) প্রশ্ন তুলেছে। যদিও বিডা এই ঋণ নেওয়ার বিষয়টি অনুমোদন দিয়েছে। তবে বিডা মতামতে বলেছে, সাধারণত মূল কোম্পানি থেকে বিনা সুদে ঋণ নেওয়া হয়। সাড়ে ৫ শতাংশ সুদ হারের প্রস্তাব বেশি। এরপরও বড় বিদেশি বিনিয়োগকারী বিবেচনায় বিডা নমনীয় হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, জেটিআই ২০১৮ সালের নভেম্বরে ১৪৭ কোটি ডলার বা প্রায় সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকায় আকিজ গ্রুপের তামাক ব্যবসা কিনে নেয়। এর মধ্যে ৭৮ কোটি ডলার বা ৬ হাজার ৬৩০ কোটি টাকা জেটিআই তাদের মূল কোম্পানি থেকে ঋণ নিয়েছে। যা ২০২২ সাল থেকে পরবর্তী ১০ বছর মেয়াদে পরিশোধ করতে হবে। এই ঋণের সুদ হার সাড়ে ৫ শতাংশ। কোম্পানিটি ডেট ইক্যুইটি রেশিও বা ঋণ মূলধন অনুপাত হিসাবেও বেশি ঋণ নিয়েছে। এই হার সাধারণত ৭০ অনুপাত ৩০ হয়ে থাকে। জেটিআইর ক্ষেত্রে তা ৮০ অনুপাত ২০। এক হিসাব মতে, কোম্পানিটি মাদার কোম্পানি থেকে যে ঋণ নিয়েছে তার জন্য সুদাসলে ১০ বছরে ফেরত দিতে হবে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার মতো। এর মধ্যে সুদ ৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকার বেশি। এই অঙ্কের বাইরে কারিগরি ও প্রযুক্তিগত খাতেও আরো বড় অঙ্কের টাকা চলে যাবে দেশের বাইরে। সূত্রগুলো প্রশ্ন তুলেছে, এই পরিমাণ টাকা যদি দেশের বাইরে চলে যায় তাহলে জেটিআইর এদেশে পুনর্বিনিয়োগ ক্ষমতা হ্রাস পাবে। কোম্পানিটি ইতিমধ্যে কারিগরি পরামর্শ ফি বাবদ সিঙ্গাপুরে অর্থ পাঠানোরও প্রস্তাব করেছে। যা অস্বাভাবিক বলে মন্তব্য করেছে বিডার একাধিক সূত্র। আমদানি করা মেশিনারিজের পরামর্শক ফি বাবদ সিঙ্গাপুরের হাউনি প্রাইভেট লিমিটেডকে ৪ লাখ ৭৩ হাজার ৪৬৯ ডলার বা ৪ কোটি ২ লাখ ২০ হাজার টাকা পাঠানোর আবেদন করেছে জেটিআই। যা সিঅ্যান্ডএফ মূল্যের প্রায় ৮৯ শতাংশ। সিঙ্গাপুরের আরেক প্রতিষ্ঠান ফোক প্রাইভেট লিমিটেডকেও একই কারণে ৭ লাখ ৩০ হাজার ৫২৬ ডলার বা ৬ কোটির বেশি টাকা পাঠাতে চেয়েছে। যা সিঅ্যান্ডএফ ভ্যালুর ৩৪ শতাংশ। তবে বিডা এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগাযোগ করার জন্য জেটিআইকে পরামর্শ দিয়েছে। কারণ বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন গাইডলাইন-২০০৯ অনুযায়ী নতুন প্রকল্পের ক্ষেত্রে আমদানি করা যন্ত্রপাতির মূল্যের সর্বো”চ ৬ শতাংশ এবং বাণিজ্যিকভাবে চলমান প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে পূর্ববর্তী বছরের মোট বিক্রির ৬ শতাংশের সমপরিমাণ অর্থ ‘টেকনিক্যাল নো হাউ ফি’ বাবদ পাঠানোর অনুমোদন দেওয়ার বিধান রয়েছে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, এত বেশি কারিগরি ফির প্রস্তাব অস্বাভাবিক। বিষয়টি নিয়ে জেটিআই সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য চাওয়া হয়েছে। তবে গত তিন দিনেও তাদের অস্থান ব্যাখ্যা করেনি।
×