ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার পুরনো গৌরব ফিরে পাক ॥ প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ২৩:৫৭, ২২ জানুয়ারি ২০২১

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার পুরনো গৌরব ফিরে পাক ॥ প্রধানমন্ত্রী

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষে আমরা চাই এটি তার পুরনো গৌরব ফিরে পাক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশে সর্বোচ্চ সম্মানজনক একটি বিদ্যাপীঠ, কাজেই এর পুরনো গৌরব আবার ফিরে আসবে, এখানে জ্ঞানের চর্চা হবে, গবেষণা হবে, শিক্ষার প্রসার ঘটবে। আমাদের সকল অর্জনের বাতিঘর যেটা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সে আলো ছড়িয়ে পড়বে সারাদেশে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত এক আন্তর্জাতিক সেমিনারের উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ মন্তব্য করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সামাদ, কোষাধ্যক্ষ মমতাজউদ্দীন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে শুধু একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখলে হবে না। এটি আমাদেরকে প্রতিটি অর্জনের পথ দেখিয়েছে। কাজেই সে বিশ্ববিদ্যালয়টি আরও সুন্দরভাবে উন্নত হোক সেটাই আমরা চাই। আর সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমরা বিভিন্ন কাজ করে যাচ্ছি। আগামী দিনে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য আমাদের দক্ষ মানবশক্তি দরকার। এ দক্ষ মানবশক্তি গড়তে পারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, এখান থেকে যাত্রাটা শুরু হতে পারে। যাকে অনুসরণ করে সমগ্র বাংলাদেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় সেভাবে কাজ করে আমাদের যে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব আসবে বা বিশ্ব যখন এগিয়ে যাবে তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরা যাতে চলতে পারি। সেভাবেই আমাদের এগিয়ে যাওয়ার দিশা দিতে পারে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হবে তার কেন্দ্রবিন্দু। আমরা সেটাই চাই। আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন কাজ করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে একটা কমিটি তৈরি করা হয়েছে। মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করা হয়েছে। যেহেতু এটা অনেক পুরনো একটা বিশ্ববিদ্যালয় আমরা শতবর্ষ উদযাপন করছি, আধুনিক জ্ঞান বিজ্ঞান সম্পন্ন একটি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে সেটাই আমরা চাই। তিনি বলেন, আমাদেরকে বাধা অতিক্রম করে যেতে হবে আর এর জন্য প্রয়োজন গবেষণা করা। গবেষণা ছাড়া কোন অর্জন সম্ভব না। ৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে দেখলাম গবেষণার জন্য কোন অর্থ বরাদ্দ ছিল না। বিশ্ববিদ্যালয়, প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের মতো যেটুকু পেত তা দিয়ে চলত। কিন্তু গবেষণার জন্য আলাদাভাবে যে একটা সুযোগ সৃষ্টি করা হতো তা কিন্তু হতো না। আমরা প্রথম শুরু করলাম গবেষণায় আলাদাভাবে অর্থ বরাদ্দ দিয়ে গবেষণাকে গুরুত্ব দিতে। যার ফসল আজকে বাংলাদেশ পাচ্ছে, আজকে বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করছে, প্রতিটি ক্ষেত্রে যে এগিয়ে যাচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশ যে গড়ে তুলেছি তার সবই গবেষণার ফসল। গবেষণাকে সবসময় গুরুত্ব দিতে হবে। আমি অনুরোধ করবো, গবেষণাকে গুরুত্ব দিবেন সেটাই আমরা চাই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বঙ্গবন্ধুর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষের মনুমেন্ট হস্তান্তর করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মমতাজউদ্দিন আহমেদ। এ সময় সশরীরে উপস্থিত হতে না পারার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, এটা আমার জন্য খুবই দুঃখজনক। তারপরও আমাদের প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবার্ষিকী এমন সময় উদযাপন করছি যখন জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করছি আমরা আবার আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে পদার্পণ করেছি। সেই সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদযাপন আমাদের জন্য গৌরবের। তিনি আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী, শিক্ষকরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে। এই প্রতিবাদের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন এমনকি ৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোটারবিহীন যে নির্বাচন বিএনপি করেছিল, খালেদা জিয়া যখন প্রধানমন্ত্রী হয়েছিল, সেই আন্দোলন যখন শুরু হয় তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিরাট ভূমিকা রেখেছিল। তার ফলে মাত্র দেড় মাসের মধ্যে খালেদা জিয়াকে পদত্যাগ করতে হয় এবং এর পরে নির্বাচন হয় জুন মাসের ১২ তারিখে, তখন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসে।
×