ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সবার আগে ভ্যাকসিন নিতে চান অর্থমন্ত্রী

প্রকাশিত: ২২:৫২, ২২ জানুয়ারি ২০২১

সবার আগে ভ্যাকসিন নিতে চান অর্থমন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত থেকে আনা করোনা ভ্যাকসিন সবার আগে নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, ‘আমার তো ভ্যাকসিন দরকার। আমার বয়স হয়েছে।’ রাষ্ট্রীয় জরুরী প্রয়োজনে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ৩ (তিন) কোটি ডোজ ভ্যাকসিন ক্রয়ের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ১ হাজার ২৭১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। এছাড়া সার আমদানিসহ ২ হাজার ৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে আটটি ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে অনলাইনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক ও সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকের বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। ওই সময় অর্থমন্ত্রী বলেন, সবার আগে আমিই করোনার ভ্যাকসিন নেব। যাদের বয়স হয়েছে তাদের আগে ভ্যাকসিনটি নেয়া উচিত। তিনি বলেন, সরকারীভাবে যেটা আমদানি করা হচ্ছে সেটাই নেব। যেখান থেকে আগে আসে। সব তো একই ভ্যাকসিন। একই কোম্পানির ভ্যাকসিন। ম্যানুফ্যাকচারার যদি বলে একই ভ্যাকসিন তাহলে একই ভ্যাকসিন। এ পর্যন্ত আমরা দ্বিতীয় সোর্স থেকে ভ্যাকসিন আনছি বলে কোন তথ্য পাইনি। বেসরকারী অনেক প্রতিষ্ঠান বাণিজ্যিকভাবে ভ্যাকসিন আনার পরিকল্পনা করছে এবং সরকারের কাছে অনুমোদন চাইছে সে বিষয়ে তিনি বলেন, এটা সম্পূর্ণ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিষয়। যদি প্রাইভেট সেক্টর এটি আনে তাহলে তাদেরকেই অর্থায়নের ব্যবস্থা করতে হবে। সরকারের কোন কম্পোনেন্ট বা প্রতিষ্ঠান এটি আমদানি করলে সেখানে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য আছে। ভ্যাকসিনের বিষয়ে অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভ্যাকসিন এসেছে অলরেডি, ভ্যাকসিন আসাটা ভাল। আমাদের অনেকের বয়স বেশি, ভ্যাকসিন প্রয়োজন। ভ্যাকসিনটা যদি আমরা সবাই পেয়ে যাই তাহলে আমরা আরও ভাল ফিল করব, কাজকর্মে মনোযোগী হতে পারব। দেশের অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য আমাদের প্রচেষ্টা এগিয়ে নিতে পারব এবং সফলতার স্বাক্ষর রাখতে পারব বলে আমরা বিশ্বাস করি। ৮টি প্রস্তাব অনুমোদন ॥ বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, আজকের সভায় ৯টি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের তিনটি, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের দুইটি, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একটি, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের একটি, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের একটি এবং স্বাস্থ্য বিভাগে একটি। এর মধ্যে একটি প্রস্তাব ফেরত দেয়া হয়েছে আগামী সভায় উপস্থাপনের জন্য। আটটি প্রস্তাবে মোট অর্থের পরিমাণ ২০৫৯ কোটি ৪১ লাখ ৭৭ হাজার ৩৬০ কোটি টাকা। মোট অর্থায়নের মধ্যে জিওবি থেকে ব্যয় হবে ১৮৭০ কোটি ৮১ লাখ ৮১ হাজার ১৭৪ টাকা এবং দেশীয় ব্যাংক হতে ঋণ ১৮৮ কোটি ৫৯ লাখ ৯৬ হাজার ১৮৬ টাকা। অনুমোদিত প্রস্তাবগুলো বিস্তারিত তথ্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. সালেহ বলেন, ১৮৮ কোটি টাকায় ৮৫ মেট্রিক টন সার ক্রয়ের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন কর্তৃক কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো) ও সৌদি আরব থেকে ৮৫ হাজার মেট্রিকটন ইউরিয়া সার কেনার তিনটি পৃথক ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮৮ কোটি ৫৯ লাখ ৯৬ হাজার ১৮৬ কোটি টাকা। শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন কর্তৃক কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো), বাংলাদেশ এর নিকট থেকে ১০ম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার কেনার একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এজন্য সরকারের ব্যয় হবে ৬৬ কোটি ২৯ লাখ ২৮ হাজার ৫৬২ টাকা। স্থাস্থ্যসেবা বিভাগের আওতায় কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া থেকে রাষ্ট্রীয় জরুরী প্রয়োজনে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ৩ (তিন) কোটি ডোজ ক্রয়ের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ১ হাজার ২৭১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। আবু সালেহ বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন কর্তৃক কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো), বাংলাদেশ এর কাছ থেকে ১১তম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার কেনার আরও একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এজন্য ব্যয় হবে ৬৬ কোটি ২৯ লাখ ২৮ হাজার ৫৬২ টাকা। অপর এক প্রস্তাবে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন কর্তৃক রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে সৌদি আরবের সাবিক বেসিক ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন থেকে ১২তম লটে (শেষ লট) ২৫ হাজার মে.টন বাল্ক প্রিল্ড (অপশনাল) ইউরিয়া সার আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৫৬ কোটি ১ লাখ ৩৯ হাজার ৬২ টাকা। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে ২৪৪ কোটি ৫০ লাখ টাকায় ৩টি সেতু নির্মাণে ঠিকাদার নিয়োগের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকারী ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
×