ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জবি ক্যাম্পাসে রাত্রিযাপনে নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশিত: ১৩:১৭, ২১ জানুয়ারি ২০২১

জবি ক্যাম্পাসে রাত্রিযাপনে নিষেধাজ্ঞা

জবি সংবাদদাতা ॥ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) একাডেমিক ভবনে রাত্রিযাপনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির কর্তৃপক্ষ। বুধবার দিবাগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে এক প্রজ্ঞাপনে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী ওহিদুজ্জামান স্বাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, 'জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের কোনো একাডেমিক ভবনে কেউ বসবাস বা রাত্রিযাপন করতে পারবে না।' তবে নির্দেশ অমান্য করে একাডেমিক ভবনে এখনও বসবাস করতে দেখা গেছে অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে। এর আগে একাডেমিক ভবনে থাকা সকল কর্মকতা ও কর্মচারীদেরকে ভবন ছাড়তে গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর নোটিশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। নোটিশে সাত দিনের মধ্যে একাডেমিক ভবন ছাড়তে নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সময় বাড়ায় প্রশাসন। এই সময়ের মধ্যে সবাইকে একাডেমিক ভবন ছেড়ে যেতে নির্দেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয়। সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বজলুর রহমান একাডেমিক ভবনের অর্থনীতি বিভাগের ক্লাসরুমের সামনে সিঁড়ির নিচে ও রসায়ন বিভাগের ক্লাসরুমের পাশে সিঁড়ির নিচে বসবাস করছেন দুই কর্মকর্তা। একই বিভাগের পাশে সিঁড়ি ও ক্লাসরুমের মাঝখানে এবং ভাষা শহীদ রফিক ভবনের পেছনে দেয়াল ঘেষে ক্যাম্পাসের ড্রেনের উপর নিজস্ব ঘর বানিয়ে বসবাস করছেন বিভিন্ন বিভাগ ও দফতরের ছয় কর্মকর্তা। এছাড়া ভূগোল বিভাগের সিঁড়ির নিচে, পরিসংখ্যান বিভাগের সিঁড়ির নিচে, উদ্ভিদবিদ্যা ও প্রাণীবিদ্যা বিভাগের সিঁড়ির নিচে এবং বজলুর রহমান ভবনে বিভিন্ন বিভাগের কর্মচারী ও পরিবহন চালক মিলে থাকেন ১১ জন। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ভাষ্যমতে, ক্লাস চলাকালীন বিভিন্ন সময়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা কখনো লুঙ্গি পরে, কখনো দাঁত ব্রাশ করতে করতে অথবা সম্পূর্ণ অগোছালো অবস্থায় রুম থেকে বের হন। এ অবস্থায় শিক্ষকসহ শিক্ষার্থীরা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। বিশেষ করে নারী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য এটা আরও অস্বস্তিকর। এছাড়া তাদের রান্নার ঝাঁঝে পড়ালেখার পরিবেশ আরও খারাপ হয়। তাই ক্যাম্পাস খোলার আগে বসতিমুক্ত একাডেমিক ভবন চান বলে জানান পাশের বিভাগগুলোর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। তারা আরও জানায়, কর্মকর্তাদের একাডেমিক ভবনে বসতি ছাড়তে নির্দেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু প্রশাসনের নির্দেশের তোয়াক্কা না করে তারা সেখানেই বসবাস করছেন। কর্মকর্তাদের পাশাপাশি কর্মচারীরাও ঘাঁটি গড়েছেন একাডেমিক ভবনগুলোতে। ভাষা শহীদ রফিক ভবনের সাথে বসবাস করা সহকারী রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ জামাল হোসেন বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ যে সিদ্ধান্ত নিবে আমি এর বাইরে যাবো না। দ্রুতই আমি অন্য যায়গায় চলে যাবো।’ এ বিষয়ে অর্থনীতি বিভাগের সিঁড়ির নিচে বসবাস করা ভূগোল বিভাগের শানভীব আহমেদ (বাচ্চু) বলেন, ‘আমি এখন ঢাকার বাহিরে আছি, ঢাকায় এসে আমি প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলবো।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান বলেন, ‘একাডেমিক ভবন ছাড়তে তাদের নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অনেকে কিছুদিন সময় চেয়ে আবেদন করেছিল। সেটা কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করেছে। তারা যদি বসতি না ছাড়ে পরবর্তীকালে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবে।’ এর আগে নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে ক্যাম্পাসে রাত সাড়ে ১০টার পর শিক্ষার্থীদের অবস্থানে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়টি।
×