ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মধুমতি ব্যাংকের টাকা আত্মসাতের কাহিনী

প্রকাশিত: ২৩:২১, ২১ জানুয়ারি ২০২১

মধুমতি ব্যাংকের টাকা আত্মসাতের কাহিনী

নিজস্ব সংবাদদাতা, ভোলা, ২০ জানুয়ারি ॥ ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় মধুমতি ব্যাংক থেকে ৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় অবশেষে মুখ খুলেছেন অভিযুক্ত ওই ব্যাংকের ব্যবস্থাপক রেজাউল করিম। এতে বেরিয়ে আসছে ওই ব্যাংকের নানা অনিয়মের নেপথ্য কাহিনী। তিনি ওই টাকার হিসাবের গড়মিলের দায় স্বীকার করে বলেন, এ ব্যাপারে তার করার কিছু ছিল না। প্রভাবশালী কয়েকজন ব্যবসায়ী ইচ্ছা মাফিক ১০টি প্রতিষ্ঠানের নামে অস্বাভাবিক টাকা লেন দেন করতে গিয়ে ওই কোটি টাকা হতিয়ে নেয়া হয়েছে। এর সঙ্গে বিকাশ ব্যবসায়ী মোঃ জাহিদুল ইসলাম ও ব্যাংক কর্মকর্তা জাফর ইকবাল জড়িত। বুধবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ম্যানেজার রেজাউল করিম এসব কথা বলেন। তবে মোঃ জাহিদুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন। তবে মধুমতি ব্যাংক কর্মকর্তা তরিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও ফোন রিসিভ করেননি। লিখিত বক্তব্যে বরাখস্তকৃত ম্যানেজার তিনি বলেন, এ ব্যাপারে তার করার কিছু ছিল না। তিনি স্থানীয় প্রভাবশালীদের কাছে এক প্রকার জিম্মি ছিলেন। স্থানীয় প্রভাবশালীদের আত্মীয় স্বজনরা চরফ্যাশন মধুমতি ব্যাংকটিকে নিজের পারিবারিক প্রতিষ্ঠানের মতো ব্যবহার করতেন। পে-অর্ডারের মাধ্যমে নেয়া ওই টাকা স্থানীয় স্থানীয় প্রভাবশালী বিকাশ ব্যবসায়ী মোঃ জাহিদুল ইসলাম এবং তার ভাতিজা ব্যাংক স্টাফ তরিকুল ইসলাম শরীফের কাছে রয়েছে। জাহিদুল ইসলাম প্রতিদিন সকালে বিকাশের ব্যবসা পরিচালনার জন্য ৫/৬ কোটি টাকা পর্যন্ত নিয়ে যেতেন। কখনও চেক দিতেন আবার কখনও দিতেন না। এক পর্যায়ে ৬ কোটি ১০ লাখ টাকা জাহিদুল ইসলাম আটককে ফেলে। এর মধ্যে ৪৫ লাখ টাকার একটি চেক দিয়ে বাকি টাকা নগদ দিবে বলে আশ্বাস দিলেও তা ফেরত দেয়নি। এছাড়া ভাতিজা ব্যাংক স্টাফ তরিকুল ইসলাম শরীফ তার মনোয়ারা ট্রেডার্স নামে ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠানের এ্যাকাউন্টে ব্যাংকের ভোল্টের টাকা নিজের এ্যাকাউন্টে রেখে ব্যবসা করেন। ব্যাংকের ভোল্টে জমা থাকা টাকার মধ্যে ২ কোটি ৮৫ লাখ টাকাও সে নিয়ে তার ব্যবসা কাজে ব্যবহার করেন। এছাড়াও ব্যাংকের গ্রামীণ এন্টারপ্রাইজ, চার দেয়াল ডেকোরেটর, কায়িক এন্টারপ্রাইজ, মোঃ জাদিদুল ইসলাম, উপকূল ব্রিকস, মিলন ট্রেডার্স, মা ট্রেডার্স, উপকূল কনস্ট্রাকশন, রুহি ফার্নিচারসহ আরও কয়েকটি এ্যাকাউন্টে ব্যাংকের ভোল্টের টাকা রেখে তারা নিজেদের ব্যবসা পরিচালনা করেন। এসব ব্যাংক এ্যাকাউন্ট সার্চ করলেই পাওয়া যাবে ব্যাংকের খোয়া যাওয়া টাকার উৎস।
×