ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাস্তবমুখী পদক্ষেপে অর্থনীতি সুদৃঢ়

প্রকাশিত: ২৩:২০, ২১ জানুয়ারি ২০২১

বাস্তবমুখী পদক্ষেপে অর্থনীতি সুদৃঢ়

সংসদ রিপোর্টার ॥ অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, বিশ্ব অর্থনীতির ওপর করোনাভাইরাসের মারাত্মক আঘাত সত্ত্বেও কার্যকর ও বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে আমাদের অর্থনীতি সুদৃঢ়। অর্থনীতির সুদৃঢ় অন্তর্নিহিত শক্তি ও বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক চালিকাশক্তিগুলোকে সঠিক পথে এগিয়ে নেয়ার মাধ্যমে আমরা কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছতে সক্ষম হবো। আমরা কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছানোর দিকে এগিয়ে চলেছি। ২০৪১ সালের মধ্যেই আমরা একটি সুখী সমৃদ্ধ উন্নত দেশে পরিণত হবো। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বুধবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটের প্রথম প্রান্তিক (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বাস্তবায়নের অগ্রগতি ও আয়-ব্যয়ের গতিধারা এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ প্রতিবেদন তুলে ধরতে গিয়ে এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। অর্থমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের টানা তৃতীয় মেয়াদের ধারাবাহিকতায় দেশের অব্যাহত সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এক দিকে যেমন অভ্যন্তরীণ ভিতকে আরও মজবুত করেছে, অন্যদিকে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। চলতি অর্থবছর আমাদের সরকারের বর্তমান মেয়াদের তৃতীয় বছর। বছরের প্রথম প্রান্তিকের অগ্রগতির যে চিত্র আমরা দেখেছি তা থেকে নির্দ্বিধায় বলা যায়, আমরা সঠিক পথে রয়েছি। তিনি বলেন, করোনা মহামারী সত্ত্বেও বিগত ২০১৯-২০ অর্থবছরে আমরা ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পেরেছি। সরকারের বাস্তবমুখী ও পর্যাপ্ত প্রণোদনা প্যাকেজসমূহ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সরকার বর্তমান অর্থবছরে ব্যবসা-বাণিজ্য গতিসঞ্চার, কর্মসৃজন ও কর্মসুরক্ষা, অভ্যন্তরীণ চাহিদা সৃষ্টি এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখতে পেরেছি। আমি দৃঢ়ভাবে বলতে চাই যে এবং কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাব অব্যাহত থাকা সত্ত্বেও বর্তমান অর্থবছরের অবশিষ্ট সময়ে অর্থনৈতিক উন্নয়নের চলমান ধারা অব্যাহত রাখা সম্ভবপর হবে। অর্থমন্ত্রী প্রতিবেদনে আরও বলেন, প্রথম প্রান্তিকে সামগ্রিকভাবে সামষ্টিক অর্থনীতির উল্লেখযোগ্য চলকসমূহের ইতিবাচক অবস্থা, বিশেষ করে জিডিপির প্রবৃদ্ধি, মাথাপিছু জাতীয় আয় বৃদ্ধি, রফতানিতে প্রবৃদ্ধি, প্রবাস আয়ে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও মুদ্রা বিনিময় হারের স্থিতিশীলতা এবং মূল্যস্ফীতির নিম্নগতি নির্দেশ করে যে, আমরা কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছানোর দিকে এগিয়ে চলেছি। কাক্সিক্ষত গন্তেব্যে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে আগামী দিনগুলোতে আমাদের অন্যতম কৌশল হবে করোনার ক্ষতি কাটিয়ে উঠার লক্ষ্যে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মানবসম্পদ খাতে সরকারী বিনিয়োগ বৃদ্ধি, বেসরকারী বিনিয়োগে গতি আনা, দারিদ্র্য হ্রাস, রফতানি বাণিজ্যের প্রসার, কর ব্যবস্থাপনা এবং আর্থিক খাতের সংস্কার। অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ ও গতিশীল নেতৃত্ব এবং সুচারু পরিচালন দক্ষতায় টেকসই অভিষ্ট, প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-৪১, ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ এবং অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা এবং সঠিক ও সময়োপযোগী বাস্তবায়নের মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা একটি সুখী ও সমৃদ্ধ উন্নত দেশে পরিণত হবো। বাজেটের প্রথম প্রান্তিকের বাস্তবায়ন প্রতিবেদনে অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ধারাবাহিকভাবে সাফল্যের সঙ্গে সরকার পরিচালনায় এক যুগ আমরা অতি সম্প্রতি অতিক্রম করেছি। করোনাভাইরাসের ভয়াবহ বিপর্যয় হতে ঘুরে দাঁড়ানোর যুদ্ধেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ ও বিচক্ষণ নেতৃত্বে বাংলাদেশ যথেষ্ট সাফল্যে দেখিয়েছে। আমরা উচ্চপ্রবৃদ্ধি অর্জনের পাশাপাশি সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে অগ্রাধিকার প্রদান করে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছি। আমাদের অন্যতম লক্ষ্য হলো ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের কাতারে শামিল হওয়া। বৈশ্বিক লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ট বাস্তবায়ন এবং ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ বাস্তবায়নের কাজ এগিয়ে চলছে। তিনি জানান, কোভিড-১৯ মহামারীজনিত বৈশ্বিক বিপর্যয়ের কারণে বাংলাদেশের উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনের ধারা কিছুটা শ্লথ হয়েছে।
×