ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শিল্পের কাঁচামাল আমদানি সহজ হচ্ছে ॥ ক্যাসিনো ও জুয়ার সামগ্রী আনা নিষেধ

রফতানিবান্ধব আমদানি নীতি আদেশ চূড়ান্ত

প্রকাশিত: ২৩:১৫, ২১ জানুয়ারি ২০২১

রফতানিবান্ধব আমদানি নীতি আদেশ চূড়ান্ত

এম শাহজাহান ॥ কাঁচামাল আমদানি প্রক্রিয়া সহজ করে আগামী তিন বছরের জন্য রফতানিবান্ধব নতুন আমদানি নীতি আদেশ ২০২১-২৪ চূড়ান্ত করা হয়েছে। প্রতিবছরের পরিবর্তে পাঁচ বছর অন্তর নবায়নের সুযোগ রেখে আমদানি রেজিস্ট্রেশন ফি কমানো হয়েছে। ট্রেডিশনাল পদ্ধতি ঋণপত্রের (এলসি) পাশাপাশি ক্রেতা-বিক্রেতার চুক্তিপত্রের ভিত্তিতে পণ্য আমদানি করা যাবে। নমুনা আমদানির ক্ষেত্রে টাকার অঙ্ক ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার ইউএস ডলার বা সাড়ে ৮ লাখ টাকা করা হয়েছে। বন্ডেড ওয়্যার হাউস সংক্রান্ত সুযোগ-সুবিধা পাবেন পোশাক রফতানিকারকরা। তবে ক্যাসিনো বা জুয়া খেলার পণ্যসামগ্রী আমদানি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে নতুন নীতি আদেশ। শীঘ্রই আমদানি নীতি আদেশ অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হবে। জানা গেছে, নতুন আমদানি আদেশ কার্যকর হলে করোনাকালীন এই সময়ে দেশের রফতানি পণ্যের কাঁচামাল ও শিল্পের মেশিনারিজ আমদানি সহজ হবে। এতে করে উৎপাদনমুখী গার্মেন্টস পণ্যের কাঁচামাল আমদানি বাড়লে রফতানিও বৃদ্ধি পাবে। গতিশীল হবে অর্থনীতি এবং এ খাতের বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়া ব্যবসা-বাণিজ্য সহজীকরণ বা ইজ অব ডুয়িং বিজনেস র‌্যাঙ্কিংয়ে ভাল করতে বাংলাদেশের উপর বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নির্দেশ রয়েছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ওয়ান স্টপ সার্ভিস কার্যকর করে প্রায় অর্ধশতাধিক সেবা নিশ্চিত করার ঘোষণা দিয়েছে। কোম্পানি আইন সংশোধন করে একক ব্যক্তির কোম্পানি গঠনের সুযোগ সৃষ্টি করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এছাড়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বিডার পক্ষ থেকে আরও বেশকিছু কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে। এসব উদ্যোগ স্বল্পোন্নত (এলডিসি) থেকে উত্তরণ ঘটাতে সহায়তা করবে বলে জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এ প্রসঙ্গে বাণিজ্য সচিব ড. মোঃ জাফর উদ্দিন জনকণ্ঠকে বলেন, আমদানি নীতি আদেশ ২০২১-২৪ পুরোটাই রফতানিবান্ধব করা হয়েছে। দেশের রফতানি বাণিজ্য কার্যক্রম কিভাবে আরও বেগবান করা যায় সেই কৌশল থাকছে নতুন আদেশে। তিনি বলেন, সবচেয়ে বেশি জোর দেয়া হয়েছে ইজ অব ডুয়িং বিজনেস। একটি ব্যবসা-বাণিজ্যবান্ধব আমদানি নীতি আদেশ চূড়ান্ত করেছে সরকার। শীঘ্রই এই আদেশটি অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হবে। করোনাকালীন সঙ্কটের মধ্যে দেশের রফতানি ও রেমিটেন্স শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে জাতিসংঘ চূড়ান্তভাবে এলডিসি থেকে বাংলাদেশ বেরিয়ে যেতে সুপারিশ করতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় আসীন হবে। এ অবস্থায় আমদানি আদেশ এমনভাবে করা হয়েছে যাতে রফতানি বৃদ্ধি পায়। জানা গেছে, বর্তমান নীতিমালায় একজন আমদানিকারককে প্রতিবছর আমদানি নিবন্ধন সার্টিফিকেট গ্রহণ করতে হয়। কিন্তু নতুন নীতিমালায় এখন থেকে আর প্রতিবছর নয় বরং পাঁচ বছর পর একবার নবায়নের সুযোগ রাখা হয়েছে। এক্ষেত্রে নিবন্ধন ফি কমানো হয়েছে। এছাড়া এলসির পাশাপাশি ক্রেতা-বিক্রেতা চুক্তির মাধ্যমে পণ্য আমদানি করতে পারবেন। এর ফলে যে কেউ সহজেই বিদেশ থেকে পণ্যসামগ্রী আমদানির সুযোগ নিতে পারবেন। বিশেষ করে গার্মেন্টস খাতের ব্যবসায়ীদের নমুনা আমদানি সহজ করা হয়েছে। নতুন আমদানি নীতিতে বিদ্যমান নীতিমালার কিছু কিছু ক্ষেত্রে সংযোজন-বিয়োজন বা সংশোধন করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেÑ বাণিজ্য সহজীকরণের লক্ষ্যে আমদানিকারক, রফতানিকারক ও ইনডেন্টরদের নিবন্ধন ফি ও নবায়ন ফি হ্রাস করা হয়েছে। ক্যাসিনো ও জুয়াসামগ্রী আমদানি পুরোপুরি নিষিদ্ধ ॥ আলোচিত ক্যাসিনো কাণ্ডের পর এবার নতুন আমদানি নীতি আদেশে জুয়া ও ক্যাসিনো খেলার সামগ্রী আমদানি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ ধরনের পণ্য আমদানি সম্পূর্ণ অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
×