ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

‘দুই শ’ কোটি মানুষের খাবার ও পুষ্টিমান উন্নয়নে হুমকি করোনা’

প্রকাশিত: ২৩:০২, ২১ জানুয়ারি ২০২১

‘দুই শ’ কোটি মানুষের খাবার ও পুষ্টিমান উন্নয়নে হুমকি করোনা’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে প্রায় দুই শ’ কোটি মানুষের খাবার ও পুষ্টিমান উন্নয়নের প্রচেষ্টা ব্যাহত করার হুমকি তৈরি করছে কোভিড-১৯ এর অর্থনৈতিক প্রভাব। কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাবের আগে থেকে এবং এই মহামারী শুরু হওয়ার পর বিভিন্ন দেশের অর্থনীতিতে ও ব্যক্তিগতভাবে মানুষের জীবিকায় যে ক্ষতি হয়েছে, সে কারণে ১৯০ কোটি মানুষ স্বাস্থ্যকর খাবার জোগাড় করতে অক্ষম ছিল। বুধবার ইউনিসেফের পাঠানো জাতিসংঘের চারটি বিশেষায়িত সংস্থার প্রকাশ করা নতুন এক প্রতিবেদনে এতথ্য জানানো হয়ে্েযছ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে , ফলমূল, শাকসবজি এবং দুগ্ধজাত পণ্যের দাম বেশি হওয়ার কারণে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দরিদ্র মানুষের পক্ষে স্বাস্থ্যকর খাবারের ব্যবস্থা করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে , যার সাশ্রয়িতা সবার জন্য খাদ্য সুরক্ষা এবং পুষ্টি নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয়, বিশেষ করে মা ও শিশুদের জন্য। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে , নিম্নমানের খাবার এবং পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাব একটি চলমান সমস্যা। পর্যাপ্ত ক্যালোরির যোগান দেয়Ñ এমন খাবারের তুলনায় স্বাস্থ্যকর খাবারের দাম উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বেশি, তবে ক্যালোরি নির্ভর এসব খাবারে পুষ্টিগুণের অভাব থাকে, যা সাশ্রয়ী মূল্যে সবার কাছে পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে খাদ্য ব্যবস্থায় বিদ্যমান উল্লেখযোগ্য ঘাটতির বিষয়টি তুলে ধরেছে। যেহেতু নারী ও শিশুদের বাড়তি পুষ্টির প্রয়োজন হয়, তাই তাদের ক্ষেত্রে দামের এই পার্থক্য আরও বড় হয়ে দেখা দেয়। প্রতিবেদনে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে পরিবারগুলোর জন্য পুষ্টিকর, নিরাপদ ও টেকসই খাবার প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে তাদের সামর্থ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে খাদ্য ব্যবস্থা পুনর্গঠনের আহ্বান জানানো হয়েছে। সর্বত্র, সবার জন্য পুষ্টিসমৃদ্ধ ও স্বাস্থ্যকর খাবার সহজলভ্য করতে হবে। এটি নিশ্চিত করার জন্য প্রতিবেদনে সমন্বিত পদ্ধতি ও নীতিমালার প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়। সামর্থ্যহীনতার বিষয়গুলো কাটিয়ে উঠতে এবং মা ও শিশুদের জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিত করতে এই পদক্ষেপগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । পুষ্টি একজন ব্যক্তির সারাজীবন জুড়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মানহীন খাবারের প্রভাব সবচেয়ে মারাত্মক হয় মানবজীবনের প্রথম এক হাজার দিনে, গর্ভধারণ থেকে শুরু করে একটি শিশুর বয়স ২ বছর হওয়া পর্যন্ত। ছোট শিশুরা, বিশেষ করে যখন তারা ৬ মাস বয়স থেকে তাদের ‘প্রথম খাবার’ খেতে শুরু করে, তখন ভালভাবে বেড়ে ওঠার জন্য তাদের উচ্চমানের পুষ্টির প্রয়োজন হয় এবং এ সময়ে প্রতিটি খাবারই গুরুত্বপূর্ণ। এসব ব্যবস্থাজুড়ে পুষ্টিকেন্দ্রিক আচরণ পরিবর্তনের জন্য প্রচারণাকে মূলধারায় আনা হলে তা বৃহত্তর পরিসরে জ্ঞানের ব্যাপ্তি বাড়ানো এবং আচরণের স্থায়িত্বের দিকে ধাবিত করতে পারে, যা মানুষের জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার পেতে সহায়ক হবে।
×