ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সময় এখন সাবালেঙ্কার

প্রকাশিত: ২৩:৪২, ২০ জানুয়ারি ২০২১

সময় এখন সাবালেঙ্কার

মাত্র ২২ বছর বয়স। এই সময়ের মধ্যেই বিশ্ব টেনিসের পাদপ্রদীপের আলোয় উঠে এসেছেন এ্যারিনা সাবালেঙ্কা। সব মিলিয়ে ৯টি শিরোপা নিজের শোকেসে তুলেছেন তিনি। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ক্যারিয়ারের সেরা সাফল্য অর্জন করেছেন বেলারুশের এই তরুণী। বিশেষ করে ২০১৯ সালের শেষ দিক থেকে টেনিস কোর্টে দুর্দান্ত খেলছেন তিনি। এই সময়ের মধ্যে ১৬টি টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করেছেন এ্যারিনা সাবালেঙ্কা। তার মধ্যে ছয়টিতেই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন তিনি। যার মধ্যে রয়েছে উহান এবং দোহায় দুটি ডব্লিউটিএ ১০০০ পর্যায়ের শীর্ষ টুর্নামেন্টও। অথচ, আগামী মে মাসে কেবল ২৩ বছরে পা রাখবেন সাবালেঙ্কা। এই সময়েই এমন সাফল্যে ভবিষ্যতে আরও ভাল করবেন বলে মনে করছেন টেনিসবোদ্ধারা। ২০১৮ সালের আগে বিশ্বটেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ে সাবালেঙ্কার অবস্থান ছিল ৭৩তম। সে বছরেই বাজিমাত করেন তিনি। মাত্র ২০ বছর বয়সেই বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ ১১ নম্বরে জায়গা করে নেন দুর্দান্ত পারফর্মেন্সের সৌজন্যে। সর্বশেষ সোমবার নতুন করে র‌্যাঙ্কিং প্রকাশ করেছে। আর এবার শীর্ষ সাতে উঠে এলেন সাবালেঙ্কা। মূলত, আবুধাবী ওপেনের শিরোপা জয়ের ফলেই হাতে পেয়ে গেলেন এই পুরস্কার। টানা ১৫ ম্যাচ জয়ের রেকর্ড গড়েই নতুন মৌসুমের প্রথম এই টুর্নামেন্টের শিরোপা উঁচিয়ে ধরেছিলেন তিনি। তারই পুরস্কার হিসেবে ক্যারিয়ারে এবারই প্রথম বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের সপ্তম স্থানে উঠে এলেন বেলারুশের এই তরুণী। টানা দুই শিরোপা জয়ের রেকর্ড গড়ে ২০২০ সালের সমাপ্তি টেনেছিলেন এ্যারিনা সাবালেঙ্কা। নতুন বছরেও দেখা গেল ঠিক সেই পুরনো সাবালেঙ্কাকেই। দুর্দান্ত পারফর্মেন্সের ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছেন বেলারুশ সুন্দরী। দুর্দান্ত পারফর্মেন্সের সৌজন্যেই আবুধাবী ওপেনের শিরোপা উঁচিয়ে ধরেন তিনি। টুর্নামেন্টের ফাইনালে এ্যারিনা সাবালেঙ্কা সরাসরি সেটে পরাজিত করেন ভেরোনিকা কুদারমেতোভাকে। সেইসঙ্গে নতুন বছরের প্রথম শিরোপা জয়ের স্বাদ পান ভিক্টোরিয়া আজারেঙ্কার উত্তরসূরি। শুধু তাই নয়, টানা তৃতীয় শিরোপা জয়েরও রেকর্ড গড়েন তিনি। পাশাপাশি টানা জয়ের রেকর্ডটাকে বাড়িয়ে নিলেন ১৫ ম্যাচে! সেইসঙ্গে ক্যারিয়ারের নবম ট্রফি নিজের শোকেসে তুলেন আবুধাবী ওপেনের চতুর্থ বাছাই। এই ট্রফি জয়ের সৌজন্যেই প্রথমবারের মতো বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ সাতে জায়গা করে নিলেন তিনি। এর আগে বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ে তার অবস্থান ছিল সর্বোচ্চ ৯। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ এই অবস্থানে পৌঁছেছিলেন এই বেলারুশ সুন্দরী। সোমবার নতুন করে প্রকাশিত র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষস্থান যথারীতি ধরে রেখেছেন এ্যাশলে বার্টি। ৮৭১৭ পয়েন্ট নিয়ে সবার উপরে অবস্থান করছেন অস্ট্রেলিয়ান টেনিসের এই প্রতিভাবান খেলোয়াড়। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর গত মৌসুমে কোর্টে নামেননি বার্টি। নতুন মৌসুমের শুরুতে তাই নাম্বার ওয়ান তারকার জন্য কোর্টে নামাটা হবে কঠিন চ্যালেঞ্জ। র‌্যাঙ্কিংয়ের দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন সিমোনা হ্যালেপ। রোমানিয়ান টেনিস তারকার পয়েন্ট ৭২৫৫। তৃতীয়, চতুর্থ এবং পঞ্চম স্থানে যথাক্রমে নাওমি ওসাকা, সোফিয়া কেনিন এবং এলিনা সিতলিনা। সাবালেঙ্কার আগে অর্থাৎ ষষ্ট স্থানে অবস্থান চেক তারকা ক্যারোলিনা পিসকোভার। গত বছরের ফ্রেঞ্চ ওপেনে সর্বশেষ পরাজয় দেখেছিলেন সাবালেঙ্কা। অক্টোবরে ফরাসী ওপেনের চতুর্থ রাউন্ডের সেই হারের পর তার গল্পটা শুধুই সাফল্যের। ২০২০ সালের শেষের দিকে ওস্ট্রাভা ওপেন এবং লিঞ্জ ওপেনের চ্যাম্পিয়ন হন তিনি। নতুন বছরের শুরুতেও শিরোপার হাসি। স্বাভাবিকভাবেই দারুণ রোমাঞ্চিত বেলারুশ সুন্দরী। মৌসুমের প্রথম ট্রফি জয়ের পর সাবালেঙ্কা বলেন, ‘টুর্নামেন্টের শুরু থেকে প্রতিটি ম্যাচেই জয়ের জন্য সর্বোচ্চটা করেছি আমি। শিরোপা জিতে মৌসুম শুরু করতে পেরে আমি সত্যিই খুব আনন্দিত।’ করোনাভাইরাসের কারণে গত বছরের অনেকটা সময়েই স্থবির হয়ে পড়েছিল বিশ্ব টেনিস। করোনাভাইরাসের কারণে বাতিল হয়ে পড়ে উইম্বলডন। তবে ফ্রেঞ্চ ওপেন ও ইউএস ওপেন হয় পরিবর্তিত সূচী অনুযায়ী। গত মৌসুমে গ্র্যান্ডস্লামে নিজেকে সেভাবে মেলে ধরতে না পারলেও শেষের দিকে টানা দুই টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলে বিশ্ব টেনিসে আবারও আলোচনায় উঠে আসেন সাবালেঙ্কা। চমকপ্রদ পারফর্মেন্সের ধারাবাহিকতা ধরে রাখলেন নতুন মৌসুমের সূচনাতেও। আগামী মাসে শুরু হবে নতুন বছরের প্রথম গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্ট অস্ট্রেলিয়ান ওপেন। তবে ইতোমধ্যেই টেনিস খেলোয়াড়দের মধ্যে হানা দিয়েছে করোনা। করোনা পজিটিভ হয়েছেন এ্যান্ডি মারে। তাই নতুন বছরের প্রথম মেজর টুর্নামেন্ট অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে অনিশ্চিত হয়ে পড়লেন ব্রিটিশ তারকা। আপাতত মারের বাড়িতে আইসোলেশনে রয়েছেন তিনি। গত সপ্তাহেই বিশেষ চার্টার বিমানে তার মেলবোর্ন যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখন তাকে সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। পুর্বের সূচী অনুযায়ী জানুয়ারিতেই হওয়ার কথা ছিল অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের। কিন্তু করোনার কারণে জানুয়ারির বদলে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে বছরের প্রথম গ্র্যান্ডস্লাম অস্ট্রেলিয়ান ওপেন শুরু হবে। তার আগে তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন কিনা, তা নিয়ে যথেষ্ট অনিশ্চয়তা রয়েছে। করোনার জন্য এমনিতে এবারের অস্ট্রেলিয়ান ওপেন নির্ধারিত সময়ের থেকে তিন সপ্তাহ পরে শুরু হচ্ছে। উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে প্রতিযোগিতা আয়োজনের ক্ষেত্রে কোন ঝুঁকি নেয়া হচ্ছে না। খেলোয়াড়দের মেলবোর্নে যাওয়ার জন্য ১৫টি বিশেষ বিমানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু প্রথম তিন বিমানের তিনটিতেই করোনায় আক্রান্ত যাত্রী পাওয়া গেছে। যে কারণে ৭২ জন খেলোয়াড়কে রাখা হয়েছে কোয়ারেন্টাইনে। হোটেল কোয়ারেন্টাইনে খেলোয়াড়রা রীতিমতো বিরক্ত।
×