ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যাংকের দরবৃদ্ধিতেও সূচক থামল না

প্রকাশিত: ১৭:২২, ১৭ জানুয়ারি ২০২১

ব্যাংকের দরবৃদ্ধিতেও সূচক থামল না

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ টানা কয়েকদিনের ইতিবাচক প্রবণতার পর রবিবার দেশের শেয়ারবাজারে মূল্য সংশোধনের ঘটনা ঘটেছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক একচেঞ্জে দিনটিতে তালিকাভুক্ত সবকটি ব্যাংকের শেয়ার দাম বাড়লেও সূচক কমেছে। বড়-ছোট সব মূলধনী কোম্পানির দর কমার কারণে সূচকের এই নেতিবাচক প্রবণতা। বেশ কিছু কোম্পানির অস্বাভাবিকভাবে কমলেও এটিকে বড় পতন না বলে তাকে স্বাভাবিক বলছেন শেয়ারবাজার বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ মুনাফা তুলে নেয়ার চেষ্টা করেছে। বিপরীতে অন্য একটি পক্ষ কম দামে শেয়ার কেনার চেষ্টা করছেন। এ কারণে সূচকের পতন হলেও লেনদেন বেড়েছে। সেই সঙ্গে প্রায় সবকটি ব্যাংকের শেয়ার দাম বেড়েছে। এটা বাজারের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক। কারণ ব্যাংকের ফ্রি ফ্লোট (লেনদেন যোগ্য) শেয়ার সব থেকে বেশি। রবিবারের বাজার পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে ডিএসইর পরিচালক মো. রকিবুর রহমান বলেন, ব্যাংকের শেয়ার দাম বাড়া খুবই ভালো লক্ষণ। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা লাভবান হবেন। কারণ ব্যাংকের ফ্রি ফ্লোট শেয়ার বেশি। আর যে কোম্পানির ফ্রি ফ্লোট শেয়ার বেশি থাকে, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে সেই কোম্পানির শেয়ার বেশি থাকে। তাছাড়া বাজার মূলধনের বড় অংশই ব্যাংকের। সুতরাং ব্যাংকের শেয়ার দাম বাড়া বাজারের জন্য সুসংবাদ। অন্যদিকে মূল্য সূচকের পতনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটাকে পতন বলা যায় না। কয়েকদিন ধরে টানা বাড়ায় কিছু বিনিয়োগকারী মুনাফা তুলে নেয়ার চেষ্টা করেছেন। অপরদিকে দাম কমায় কিছু বিনিয়োগকারী কম দামে শেয়ার কিনে নিয়েছেন। এটাই শেয়ারবাজার। তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, রবিবার লেনদেনের শুরু থেকেই একের পর এক ব্যাংকের শেয়ার দাম বাড়তে থাকে। এতে লেনদেনের শুরুতে মূল্য সূচকের বড় উত্থান হয়। প্রথম মিনিটেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ৬২ পয়েন্ট বেড়ে যায়। বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সকালে সূচকের ইতিবাচক প্রবণতা দিয়ে শুরুর পর ব্যাংকের শেয়ারের লেনদেনের ইতিবাচক প্রবণতা শেষ পর্যন্তও অব্যাহত থাকে। অন্যদিকে বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর দর কমতে থাবে। ফলে ধীরে ধীরে বড় পতনে দিকে রূপ নেই শেয়ারবাজার। এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক আগের দিনের তুলনায় ৫৮ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৮৫০ পয়েন্টে নেমে গেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ আগের দিনের তুলনায় ২৭ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ২০৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর ডিএসইর শরিয়াহ্ সূচক ২৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২৯৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। মূল্য সূচকের এই পতনের বিষয়ে ডিএসইর এক সদস্য বলেন, শেয়ার বিক্রির চাপ বেড়ে যাওয়ায় মূল্য সূচকের পতন হয়েছে। যদি বেশিরভাগ ব্যাংকের শেয়ার দাম না বাড়তো তাহলে সূচকের আরও বড় পতন হতো। এমনকি অর্ধেক ব্যাংকের শেয়ার দাম কমলেও দেখা যেত সূচক ১০০ পয়েন্টের ওপরে পড়ে গেছে। তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, এদিন ডিএসইতে দিনভর লেনদেনে অংশ নেয়া মাত্র ৭২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৩১টির। আর ৫৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অপরদিকে ব্যাংক খাতের মাত্র তিনটি কোম্পানির শেয়ার দাম কমেছে। বিপরীতে দাম বেড়েছে ২৪টির এবং তিনটির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এদিকে সূচকের বড় পতন হলেও ডিএসইতে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৩৮৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। যা আগের দিন ছিল ২ হাজার ৭০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। এ হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৩১৪ কোটি ২ লাখ টাকা। ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে রবি’র শেয়ার। কোম্পানিটির ২৮১ কোটি ২৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেক্সিমকোর ১৯০ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৬৮ কোটি ৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে লংকাবাংলা ফাইন্যান্স। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই কমেছে ১৭৭ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১৫১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ২৭৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮১টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৬৮টির এবং ৩০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
×