ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

হার্র্ডলসে তামান্নার টানা চার সাফল্য, দ্বিতীয়দিনে ১টি নতুন রেকর্ড, শীর্ষে নৌবাহিনী

এ্যাথলেটিক্সে কিতাব আলীর নাতনির অনন্য কীর্তি

প্রকাশিত: ২৩:২৯, ১৭ জানুয়ারি ২০২১

এ্যাথলেটিক্সে কিতাব আলীর নাতনির অনন্য কীর্তি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশে মহিলা হার্ডলারদের মধ্যে সেরা ও কিংবদন্তি হচ্ছেন সুমিতা রানী। ইনজুরির জন্য তিনি এবারের জাতীয় এ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতায় ১০০ মিটার হার্ডলসে অংশ নেননি। এই ইভেন্টে স্বর্ণ জিতেছেন বাংলাদেশ নৌবাহিনীর তামান্না আক্তার। সুমিতা থাকলে কি স্বর্ণ জিততেন? তিনি না থাকায় স্বর্ণজয়টা কি সহজ হয়ে গেল না? জনকণ্ঠের এই প্রশ্নে তুমুল আপত্তি জানান ১৯৯৮ সালের ৫ ডিসেম্বর জন্ম নেয়া সুনামগঞ্জের কান্দিগাঁওয়ের মেয়ে তামান্না, ‘মোটেও না। সুমিতা আপুকে আমি শ্রদ্ধা করি। তার টেকনিক এখনও অনেক সুন্দর। কিন্তু আমি তো এর আগেও তাকে দুবার এই ইভেন্টে হারিয়েছি। এবারও নিশ্চয়ই তাকে হারাতাম। তাছাড়া ওনার একটু বয়স হয়েছে, কাজেই উদীয়মান এ্যাথলেটরা জিতবে এটাই তো স্বাভাবিক। আমার লড়াই এখন নিজের সঙ্গেই। আমি কাউকে ভয় পাই না এবং সবাইকে সমান চোখে দেখি।’ তামান্না নৌবাহিনীতে এলএসএ পদে আছেন ২০১৬ সাল থেকে। ২০১৮ সাল থেকে জাতীয় ও সামার এ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতা মিলে এ পর্যন্ত চারবার এই ইভেন্টে স্বর্ণ জিতেছেন (প্রতিটিই টানা)। আগের তিনটি স্বর্ণজয়ের চেয়ে এবারের স্বর্ণজয়টিই ছিল তামান্নার দৃষ্টিতে সেরা এবং কঠিন। কারণ এবার তার প্রস্তুতি ছিল মাত্র দেড় মাসের। তিনি বলেন, ‘ডে বাই ডে আমার টাইমিংয়ের উন্নতি হচ্ছে। আজকে আমার টাইমিং ছিল ১৪.৬০ সেকেন্ড। গত বছর চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত ন্যাশনালে টাইমিং ছিল ১৪.৮০ সেকেন্ড।’ তামান্না অনুশীলন করেছেন খুলনায়। কোচ ছিলেন মাহবুবা ইকবাল বেলী। এই সাফল্যের জন্য তার কাছে অশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি। কুষ্টিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে চতুর্থবর্ষে লেখাপড়া করা তামান্নারা এক ভাই, এক বোন। ছোট ভাই জয় ইসলাম বিকেএসপিতে জুনিয়র হকি খেলোয়াড়। বাবা লন্ডনে থাকেন। মা গৃহিণী। ছোটবেলায় যখন খেলাধুলা শুরু করেন তখন সেভাবে পরিবারের কাছ থেকে সমর্থন পাননি তামান্না। প্রখ্যাত এ্যাথলেট ও এ্যাথলেটিক্স কোচ কিতাব আলী তার নানা। তার উৎসাহেই খেলাধুলার জগতে পা রাখেন। প্রথমে ৪০০ মিটার দৌড়ে খেলতেন। পরে নানার পরামর্শে হার্ডলস খেলা শুরু করেন। এরপর থেকেই সাফল্য পাওয়া শুরু। তারপর এসএ গেমসের ক্যাম্পে ডাক পান। সেখানে কোচ বেলী তাকে আরও উন্নত প্রশিক্ষণ দিয়ে শাণিত করে তোলেন। ২০১৯ এসএ গেমসে হার্ডলসে পঞ্চম হয়েছিলেন তামান্না। ২০১৪-২০১৮ পর্যন্ত জুনিয়র (জাতীয়) পর্যায়ে অংশ নিয়ে মোট ৬টি স্বর্ণপদক অর্জন করেন। তার ইভেন্টগুলো ছিল : ১০০, ২০০ ও ৪০০ মিটার, লং জাম্প, হাইজাম্প ও দুটি রিলে দৌড়। শুক্রবার তামান্না মেয়েদের ৪ গুণিতক ১০০ মিটার রিলেতেও স্বর্ণপদক জেতেন। আজ রবিবার ৪ গুণিতক ৪০০ মিটার রিলেতে অংশ নেবেন। এই ইভেন্টেও স্বর্ণ জেতার প্রত্যাশা তার। এ্যাথলেটিক্স ছাড়াও ফ্লোর হকি এবং হ্যান্ডবল খেলেন তামান্না। হ্যান্ডবলটা খেলেন বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে। আর হকি খেলতেন বিকেএসপির হয়ে।
×