ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

চসিক নির্বাচন

নৌকা ও ধানের শীষের প্রার্থীদের প্রচার তুঙ্গে, উন্নয়নের অঙ্গীকার

প্রকাশিত: ২২:৫৭, ১৭ জানুয়ারি ২০২১

নৌকা ও ধানের শীষের প্রার্থীদের প্রচার তুঙ্গে, উন্নয়নের অঙ্গীকার

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচনের বাকি আছে আর মাত্র ১০ দিন। এ নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীগণ নির্বাচন কমিশন নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই গণসংযোগ ও প্রচার অভিযান অব্যাহত রেখেছেন। সকলে দিচ্ছেন নির্বাচিত হলে বিভিন্ন ধরনের উন্নয়নের অঙ্গীকার। এর পাশাপাশি আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী নৌকার বিজয়কে নিশ্চিত করার জন্য ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। অপরদিকে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী ডাঃ শাহাদাত হোসেন ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় ভোটারদের ভ্যানগাডের ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানিয়েছেন। মেয়র প্রার্থীদের পাশাপাশি ৪১ ওয়ার্ডের সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীরাও মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। পুরো চট্টগ্রাম মহানগরী ব্যানার, ফেস্টুনে সয়লাব হয়ে গেছে। প্রচারাভিযান এখন তুঙ্গে বলা যায়। প্রার্থীরা নিজেদের জন্য এবং তার সমর্থিত মেয়র প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাচ্ছেন। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম দল মনোনীত কাউন্সিলর এবং বিদ্রোহী বা স্বতন্ত্র হিসাবে খ্যাত প্রার্থীরাও ভোটারদের কাছে ভোট ভিক্ষা করছেন। পাশাপাশি নির্বাচিত হলে যার যার ওয়ার্ডে কি কি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করবেন তার চিত্র তুলে ধরছেন। নির্বাচন এলে প্রার্থীরা সাধারণত যা বলেন, তাই গতানুগতিকভাবে সকলের মুখ থেকে বেরিয়ে আসছে। মূলত প্রার্থীরা নির্বাচনের আগে যা বলেন এবং নির্বাচিত হলে তা ভুলে যান, বা করার ক্ষমতা রাখেন না। এরপরও বলতে হয়। ভোটের ময়দানে কথার ফুলঝুরি। রাজনীতিতে যা চলে আসছে দীর্ঘ সময় জুড়ে একইচিত্র চসিক নির্বাচনে। এ নির্বাচনে মেয়র পদে মূলত আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থীর মধ্যে লড়াইটা হবে। প্রচার অভিযানে এদের কেউ পিছিয়ে নেই। তবে হৃদয়ে কার স্থান হচ্ছে তা নির্বাচনের দিন গণনা শেষে জানা যাবে। এখন চলছে প্রচারের জোয়ার। সর্বত্র নির্বাচনী আলোচনা। তবে আমেজ বলতে যা বুঝায় তা এখনও ওই পর্যায়ে যায়নি। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে প্রচারাভিয়ান আরও ব্যাপক রূপ নেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শনিবার আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রেজাউল করিম নগরীর আমবাগান এলাকায় গণসংযোগ চালান। এর পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড চট্টগ্রাম নগর আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন। এসব অনুষ্ঠানে রেজাউল করিম বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয় আমাদের অহংকার। এ অহংকারকে ভূলুণ্ঠিত হতে দেয়া যাবে না। স্বাধীনতার শত্রুদের সঙ্গে যাদের আঁতাত গণরায়ে তারা প্রত্যাখ্যাত হবে। দেশমাতৃকার প্রতি ভালবাসা, দেশের মানুষের প্রতি ভালবাসা থেকে মরণপণ যুদ্ধে হানাদারদের বিরুদ্ধে লড়াই হয়েছে। তিনি দাবি করেন, গণঅধিকারের আন্দোলনে তিনি সর্বদা নিজেকে ব্যাপৃত রেখেছেন। চট্টগ্রামের গণমানুষের কল্যাণে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে তিনি ভোটযুদ্ধে নেমেছেন দাবি করে বলেন, স্বাধীনতার শক্তি আমার এই ভোটযুদ্ধের মূল প্রেরণা। আগামী ২৭ জানুয়ারি নির্বাচনী যুদ্ধে নৌকা প্রতীককে বিজয়ী করে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তকে সম্মান রাখার আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার মোজাফফর আহমদ, কেন্দ্রীয় সদস্য মোঃ সরোয়ার আলম, নগর আওয়ামী লীগ সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন, আওয়ামী লীগ নেতা মঈমুদ্দীন চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অপরদিকে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী ডাঃ শাহাদাত হোসেন দুপুরে নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয় মাঠে ছাত্রদলের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এর পাশাপাশি কাজির দেউড়ি এলাকায় গণসংযোগ করেন। এ সময় ডাঃ শাহাদাত বলেন, নির্বাচনী পরিবেশ সকলের জন্য এখনও সমান হয়নি। ভয়ভীতি প্রদর্শন করে সন্ত্রাসীরা কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কমানোর পাঁয়তারা করছে। তাই ছাত্রদলসহ সকলকে ভোট কেন্দ্রে ভ্যানগাডের ভূমিকা পালন করতে হবে। ডাঃ শাহাদাত বলেন, ২৭ জানুয়ারি কেন্দ্র দখল ও ভোট কারচুপি ঠেকিয়ে ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করতে হবে। সে জন্য বিএনপি ও ছাত্রদল নেতাকর্মীদের সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকতে হবে। সর্বশক্তি দিয়ে নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিয়ে সক্রিয় থাকার কোন বিকল্প নেই বলে তিনি মন্তব্য করেন। ডাঃ শাহাদাত আরও বলেন, সকল বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে এগিয়ে যেতে হবে। জনগণকে উৎসািহত করে ভোট কেন্দ্রে নিরাপদে নেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। হামলা মামলা যাই হোক ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে থাকতে হবে। দলীয় কার্যালয়ে ছাত্রদলের সমাবেশে অন্যান্যের বক্তব্য রাখেন মোঃ সাইফুল আলম, শরীফুল ইসলাম তুহিন, লিমন, সালাউদ্দিন কাদের আসাদ, জহির উদ্দিন বাবর প্রমুখ। কাজির দেউড়ি এলাকায় গণসংযোগকালে শাহাদাত হোসেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাদের নিয়ে প্রচার অভিযান চালান।
×