মামুন শেখ, জবি ॥ কোন নীতির ওপর ভিত্তি করে একটি প্রতিষ্ঠান চলবে, সেটা ঠিক করা উচিত আগে এবং তার পরে আসবে উদ্বোধনের গল্প। কিন্ত রাজধানীর জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয়ের (জবি) চিত্র ভিন্ন। এ বিশ^বিদ্যালয়ের প্রথম হল বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব (ছাত্রী) হল উদ্বোধনের আড়াই মাস পার হয়ে গেলেও এখনও তৈরি হয়নি নীতিমালা। নীতিমালা তৈরি না করেই তড়িঘড়ি হল উদ্বোধন করায় হলে ওঠা নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছে ছাত্রীরা। এদিকে লিফটের কাজ বাকি রেখেই হলের উদ্বোধন করায় শিক্ষার্থীদের সিট বণ্টনেও পদক্ষেপ নিতে পারছে না বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন। বিদ্যুত, গ্যাস ও পানির এখনও সংযোগ পুরোপুরি দেয়া হয়নি। লিফটের কাজ পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ধারে কাজ চালাচ্ছে অন্য একটি প্রতিষ্ঠান দিয়ে। এছাড়াও কনস্ট্রাকশন, বিদ্যুত ও লিফটের কাজে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে কাজ পাওয়ায় রয়েছে সমন্বয়হীনতা। হলের জন্য অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার কাজ এখনও অসম্পূর্ণ। এখন থেকে পুরোদমে কাজ চালালেও সম্পূর্ণ কাজ শেষ করতে ন্যূনতম আরও ৬ মাস থেকে ১ বছর সময় লাগবে বলে জানাচ্ছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
গত ২০ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে প্রথম ছাত্রী হল উদ্বোধন করা হয়। হঠাৎ করে বিশ^বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে শেষবর্ষের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করায় আবারও মেসবাসা ভাড়া নিতে ছুটছেন ছাত্রীরা, এতে করে বাড়তি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
হলের লিফট শ্রমিকরা বলেন, আমাদের কাজের সুবিধার্থে প্রথমে একটি লিফট চালু করব। এই লিফটের জন্য মাত্র গাইডের কাজ শুরু হয়েছে। পুরোদমে কাজ করলে গাইডের কাজ শেষ হতে সপ্তাহ খানেক সময় লাগবে। এরপর লিফট চালু করতে আরও ১৫দিন সময় লাগতে পারে। আবার লিফটের জন্য যে স্পেস রাখা হয়েছে, সেটাও খুব সরু। দেয়াল ভেঙ্গে কাজ করতে চাইলেও কনস্ট্রাকশনের লোকজন দেয় না। এভাবে সমন্বয়হীনতা চলতে থাকলে আরও এক বছরেও কাজ শেষ হবে না। লিফটের কাজ পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কনসেপ্ট এলিভেটর এ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এর প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার তানভীর আলম বলেন, কাজটা মূলত এম এস চৌধুরী নামে একটা ফার্মের। তাদের থেকে আমরা নিয়েছি। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত কাজ শেষ করে দেয়ার। কিন্তু কিছু ঝামেলার কারণে আমাদের মালামাল আসছে না। মোটামুটি আরও সময় লাগবে। হলের প্রভোস্ট ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. এস এম আনোয়ারা বেগম বলেন, নীতিমালার কাজ অনেক এগিয়েছে। আমরা একটা নীতিমালা খসড়া করে প্রশাসনের নিকট জমা দিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় এখনও খোলেনি। এর মধ্যে সরকার ছুটি বাড়িয়েছে। তবে আমরা দাফতরিক কাজগুলো এগিয়ে নিয়েছি। হলে ছাত্রী ওঠানোর বিষয়ে তিনি বলেন, প্রত্যেক বিভাগে যারা মেধাবী, প্রান্তিক পর্যায়ের শিক্ষার্থী, ঢাকায় যাদের থাকার ব্যবস্থা নেই এবং আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সিট বরাদ্দ করা হবে।
