ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রাজশাহীতে একই দলের বিদ্রোহী প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষ

প্রকাশিত: ১৭:২৯, ১৪ জানুয়ারি ২০২১

রাজশাহীতে একই দলের বিদ্রোহী প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষ

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের মনোনীত এবং একই দলের বিদ্রোহী প্রার্থীর নেতা কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে দফায়-দফায় সংঘর্ষ এবং ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পৌর এলাকার তালতলায় দলীয় প্রার্থীর পক্ষে উস্কানি মূলক বক্তব্যকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। বুধবার রাতের ই ঘটনায় উভয় পক্ষ থেকে প্রায় ৬ রাউন্ড পিস্তলের ফাঁকা গুলি এবং ৮-১০টি ককটেল বিস্ফরণ হয় বলে দাবি করেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। এতে আহত হন, বিদ্রোহী প্রার্থী মুক্তার আলীসহ প্রায় ১৩ জন। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন রেজা ও চারঘাট সার্কেলের সিনিয়ার (এএসপি) নুরে আলম-বাঘা, চারঘাট, পুঠিয়া এবং রাজশাহী র‌্যাব পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে। আ’লীগ মনোনীত প্র্রার্থী শহীদুজ্জামান শহীদ জানান, তাঁর পক্ষে আহত হয়েছেন-তুষার আলী ও লাল্টু। এদের দু’জনকে পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এ ছাড়াও তিনটি মোটর সাইকেল ভাংচুর করা হয়েছে। অপর দিকে বিদ্রোহী প্রার্থী মুক্তার আলীর পক্ষে আহত হয়েছেন মুক্তার আলী নিজে, তার কর্মী নাজমুল হক, রানা, বকুল, মজনু, খোকন, ফারুক,জিসান, হৃদয়, জাহিদ, রাজু ও আরিফুল। এদের মধ্যে নাজমুলের অবস্থা গুরুত্বর। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত সাড়ে ৮ টার সময় প্রায় ৫ শতাধিক দলীয় নেতাকর্মী নিয়ে আড়ানী বাজারের তাল তলায় এক পথ সভায় উস্কানি মূলক বক্তব্য দেওয়া হচ্ছিল। সভা থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়, বাংলাদেশে একটি মাত্র রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ। এই দলের বাইরে কোন ভোট হবে না। বিদ্রোহীকে বহিস্কার করা হয়েছে। সুতারাং আপনারা তাকে ভোট দিয়ে ভোট নষ্ট করবেন না। এ সময় রাস্তার উত্তর দিক থেকে বিদ্রোহী প্রার্থী মুক্তার আলীর ৮-১০ টি মোটরসাইকেল নিয়ে গনসংযোগ করে তার কার্যালয়ে ফিরছিল। আকষ্মিক ভাবে তাদের দেখে পেছন থেকে ধর ধর করে ইট নিক্ষেপসহ ধাওয়া করে শহীদের লোকজন। এতে করে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। শুরু হয় ফের ইট-পাটকেল নিক্ষেপ। এতে করে রাস্তার ধারে বসা সবজি ব্যবসায়ীদের অনেক ক্ষতি হয়। অন্তত শতাধিক দোকানপাট করা হয়। ভাঙচুর হয় দুই দলের নির্বাচনি অফিস। ঘটনার এক পর্যায় হাজার-হাজার লোকবল লাঠি-সোটা নিয়ে পৌর ভবনের সামনে অবস্থান নেয় মুক্তার আলী পক্ষে। অন্যদিকে উত্তর পাশে খ্যাপা বাবার আশ্রম এলাকায় অবস্থান নেয় দলীয় প্রার্থী শহীদুজ্জামান শহীদ এর কর্মী-সমর্থকরা। এদিক থেকে মুক্তার আলীর জনসমথন ছিল অনেক বেশী। ঘটনাস্থলে তাৎক্ষনাত প্রশাসনের লোকবল না এলে অনেক বড় রক্ষক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটতে পারতো বলে মন্তব্য করেনঅনেকে। ত বাঘা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, উপজেলা প্রশাসনসহ পুলিশ এবং র‌্যাব এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করেছেন। রাতে মুক্তার পক্ষের মিলন নামে এক কর্মীকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত পূর্বব ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভাঙচুর অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বিদ্রোহী প্রার্থী মেয়র মুক্তার আলীকে প্রধান আসামি করে বিস্ফোরক আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, বাঘা থানার ওসি নজরুল ইসলাম। তিনি জানান, বুধবার রাতে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক মতিউর রহমান মতি বাদি হয়ে বাঘা থানায় বিস্ফোরক আইনে মামলাটি দায়ের করেন। তিনি আরও জানান, বিস্ফোরক আইনে করা মামলাটিতে বিদ্রোহী প্রার্থী মেয়র মুক্তার আলীকে প্রধান আসামি করে মামলা করা হয়েছ। এছাড়া এই মামলায় ৫০ জনের নাম উল্ল্যখ করে অজ্ঞাত আরও ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এই মামলায় আড়ানীর সাহাপুর এলাকার সাহাবাজ আলীর ছেলে মিলনকে (৩০) আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় আড়ানী পৌর নির্বাচনী এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
×