ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ট্রাম্পকে সরাতে প্রস্তাব পাস

প্রকাশিত: ২১:৩৬, ১৪ জানুয়ারি ২০২১

ট্রাম্পকে সরাতে প্রস্তাব পাস

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ক্ষমতাচ্যুত করতে সিনেটে ঐতিহাসিক প্রস্তাব পাস হয়েছে। মঙ্গলবার সংবিধানের ২৫তম সংশোধনীর সমর্থনে সিনেটে প্রস্তাবটি পাস হয়। খবর সিএনএন, আলজাজিরা ও এপির। গত সপ্তাহে মার্কিন পার্লামেন্ট ক্যাপিটল হিলে হামলায় উস্কানি দেয়ার অপরাধে প্রতিনিধি পরিষদ এ উদ্যোগ নিল। প্রস্তাবটি কার্যকরে এখন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের দফতরে পাঠানো হবে। তবে প্রস্তাবটি পাসের আগেই মাইক পেন্স এতে সমর্থন না দেয়ার কথা জানান। স্পীকার ন্যাসি পেলোসিকে লেখা এক বার্তায় পেন্স বলেন, ট্রাম্পকে ক্ষমতা থেকে সরাতে ২৫তম সংশোধনী কার্যকর করা হবে না। এটি ভয়ঙ্কর নজির তৈরি করবে। উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট ‘ক্ষমতা ধরে রাখতে এবং দায়িত্ব পালনে অক্ষম হলে’ মার্কিন সংবিধানের ২৫তম সংশোধনীর মাধ্যমে ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্ষমতায় বসতে পারেন। যদিও প্রতিনিধি পরিষদের এই প্রস্তাব কার্যত সফলতার মুখ দেখছে না, তবে এর প্রতীকী গুরুত্ব আছে। প্রস্তাবটি এমন সময় পাস হলো যখন আইনপ্রণেতারা ট্রাম্পের ওপর ভীষণ ক্ষুব্ধ। সংবিধানের ২৫তম সংশোধনী প্রয়োগ ভেস্তে যাওয়ায় সহিসংতা উস্কে দেয়ার অভিযোগে বুধবার ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রতিনিধি পরিষদে আরও একটি প্রস্তাব উত্থাপিত হতে পারে। ২৫তম সংশোধনীর ৪নং ধারায় বলা আছে, প্রেসিডেন্ট ক্ষমতা হস্তান্তর করতে না পারলে ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং মন্ত্রিসভার অধিকাংশ সদস্য তাকে ‘দায়িত্ব পালনে অপারগ’ ঘোষণা করতে পারেন। সেক্ষেত্রে প্রেসিডেন্টকে ‘দেশ শাসনে অক্ষম’ এবং ‘দায়িত্ব হস্তান্তরে অপারগ’ ঘোষণা করে প্রতিনিধি পরিষদ ও সেনেটের স্পীকারকে চিঠি দিতে হয়। নিয়ম অনুযায়ী, তখন ক্ষমতা চলে যায় ভাইস প্রেসিডেন্টের হাতে। এরপর নিয়ম অনুযায়ী, প্রেসিডেন্টকে লিখিতভাবে জবাব দেয়ার একটি সুযোগ দেয়া হয়। তিনি যদি সেখানে ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করেন, তখন সিদ্ধান্ত নেয়ার ভার থাকে কংগ্রেসের ওপর। আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতা থেকে সরাতে হাউস ও সিনেট-দুই জায়গাতেই দুই-তৃতীয়াংশ ভোটের প্রয়োজন হয়। আর ভোটাভুটির মাধ্যমে বিষয়টির মীমাংসা হওয়ার আগ পর্যন্ত ভাইস প্রেসিডেন্ট ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব চালিয়ে যেতে পারেন। ক্যাপিটলে ট্রাম্প সমর্থকদের ওই হামলার ঘটনায় এক পুলিশসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনার পরই ট্রাম্পকে সরানোর দাবি জোরালো হয়ে ওঠে, যদিও আগামী ২০ জানুয়ারি নতুন প্রেসিডেন্টের অভিষেক পর্যন্তই তার মেয়াদ আছে। পেন্স তার চিঠিতে পেলোসিকে আরও বলেন, প্রশাসন পুরো শক্তি নিয়োগ করে সুশৃঙ্খলভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর নিশ্চিত করতে চাইছে। পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করে বা বিভক্তি আরও বাড়িয়ে দেয়- এমন কোন পদক্ষেপ না নিতে পেলোসি ও কংগ্রেস সদস্যদের অনুরোধ করছেন পেন্স। তিনি বলেছেন, ‘উত্তেজনা কমাতে আমাদের সঙ্গে কাজ করুন এবং নির্বাচিত জো বাইডেনকে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে বরণ করার প্রস্তুতির এ সময়ে আমাদের দেশকে ঐক্যবদ্ধ করুন। ৩ নবেম্বরের নির্বাচনের পরাজয় উল্টে দেয়ার সবরকম চেষ্টা করেছিলেন ট্রাম্প, কিন্তু সফল হননি। নিজেদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতে কংগ্রেসে বাইডেনের জয়ের অনুমোদন প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করার জন্য পেন্সের ওপর চাপও প্রয়োগ করেছিলেন তিনি। ক্যাপিটলে হামলার সময় ট্রাম্পের কিছু সমর্থক পেন্সকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ অভিহিত করে তাকে হত্যার কথাও আলোচনা করেছিল।
×