ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রনি দেব শর্মা

সম্মিলিত আনন্দ

প্রকাশিত: ২০:৫৩, ১৪ জানুয়ারি ২০২১

সম্মিলিত আনন্দ

বর্তমানে শিশু, কিশোররা অবসর সময়, এমনকি সারাদিন ঘরের মধ্যে মোবাইল নিয়ে পরে থাকে-ফলস্বরূপ তাদের শারীরিক কাঠামো ও মিথস্ক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটে চলেছে এবং বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। গ্রামীণ জীবনে নিম্নবিত্ত পরিবারের আর একটি বিনোদনের মাধ্যম হচ্ছে শিশু শ্রম। বয়োজ্যেষ্ঠরা হরেক রকমের গানের আসর বসিয়ে, মেলা বসিয়ে বিনোদন পেয়ে থাকত এতে আমাদের সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ অক্ষুণ্ন থাকত। কিন্তু এই প্রযুক্তির যুগে তারাও এখন টেলিভিশন, ইউটিউবেই অধিক সময় পার করছে। ফলে বেড়ে চলেছে মানসিক অবসাদ, বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা। অন্যদিকে, শহরাঞ্চলে প্রযুক্তির প্রবণতা বেশি দেখতে পাই। কয়েক দশক ধরে শহরাঞ্চলে নেই কোন পর্যাপ্ত খেলার মাঠ, উদ্যান-পার্ক। গুটি কয়েক থাকলেও বর্তমানে করোনাকালীন অভিভাবকবৃন্দ সন্তানদের ঘরের বাইরে যেতে দেয় না তাদের হাতে তুলে দিচ্ছে মোবাইল, ল্যাপটপ। ফলে শিশু -কিশোররা পুরোটা সময় চার দেয়ালের মধ্যে বন্দী অবস্থায় কাটাচ্ছে। যার কারণে সেখানে বিনোদনের প্রধান মাধ্যম হয়ে উঠেছে প্রযুক্তি, নাইট ক্লাব প্রভৃতি। এ কারণেই তারা বাসায় বৃদ্ধদের সময় না দেয়ায় বৃদ্ধারা একাকী সময় কাটাতে বাধ্য হচ্ছে অপরদিকে বৃদ্ধাশ্রমের পাল্লা ভারি হচ্ছে। শুধু শিশু কিশোররাই নয় তাদের পিতা-মাতারাও ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে সোশাল মিডিয়া, ইউটিউব ও ভার্চুয়াল গেম খেলে। বর্তমানে মানুষের ফ্রেন্ড সার্কেল, বিনোদন হয়ে উঠেছে ভার্চুয়াল। তথ্যপ্রযুক্তির যুগে টেলিভিশনের পর্দার চেয়েও বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ফেসবুক, ইউটিউব। এখন আর আগের মতো সিনেমা হলো, বেতার ও টেলিভিশন চলছে না। এখন তো ছোট বাচ্চা থেকে শুরু“করে বৃদ্ধ পর্যন্ত প্রযুক্তিতে আসক্ত। প্রযুক্তির যুগে ফেসবুক, ইউটিউবে বিনোদনের পাশাপাশি অপবিনোদনের ও কারণ হয়ে উঠেছে। মানুষ এখন হাতের মুঠোয় পেয়ে যাচ্ছে অশ্লীল ভিডিও, নিউজ। ফলে আমাদের সংস্কৃতিতে অপসংস্কৃতি প্রবেশ করেছে এবং মানুষ সেদিকেই ঝুঁকে যাচ্ছে। এতে শারীরিক, মানসিক ও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মানুষ। আর টাকা চলে যাচ্ছে গুটি কয়েক বিদেশীদের হাতে। আমাদের এই বিনোদন ও বিনোদনের মাধ্যম কালে-কালে পরিবর্তন হচ্ছে। এর ফলস্বরূপ, আমাদের সংস্কৃতি বিপন্ন হচ্ছে আর সংস্কৃতিতে মিশে যাচ্ছে পশ্চিমা সংস্কৃতি যেটি মোটেই কাম্য নয়। এতে সাংস্কৃতিক মূল্যবোধেরও অবক্ষয় হচ্ছে। তাই আমাদের দেশীয় সংস্কৃতিকে ধরে রাখার জন্য দেশীয় বিনোদন চর্চা করা আর অপবিনোদনকে এড়িয়ে চলা উচিত। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
×