ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রণোদনার ভর্তুকির ‘সুদ’ গ্রাহকের হিসাবে না দেখানোর নির্দেশ

প্রকাশিত: ১৯:১২, ১২ জানুয়ারি ২০২১

প্রণোদনার ভর্তুকির ‘সুদ’ গ্রাহকের হিসাবে না দেখানোর নির্দেশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ করোনার প্রাদুর্ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও সেবা খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেয়া বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজে সরকারের দেওয়া ভর্তুকির সুদ ঋণগ্রহীতার হিসাবে না দেখানোর নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করেছে। সংশ্লিষ্টরা জানায়, করোনায় দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতি মোকাবিলায় ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও সেবা খাতের চলতি মূলধনে (ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল) অর্থ জোগান দিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় প্রায় সোয়া লাখ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়। এসব প্যাকেজ ঋণের অর্ধেক (সর্বোচ্চ ৪ দশমিক ৫ শতাংশ) সুদ সরকার ভর্তুকি হিসাবে দেবে। কিন্তু বেশকিছু ব্যাংক সরকারের দেওয়া এ ভর্তুকি সুদ ঋণগ্রহীতার হিসাবে দেখাচ্ছে। এতে গ্রাহকের ঋণের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। গ্রাহক আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। তাই সরকার পরিশোধ করা ভর্তুকি সুদ গ্রাহকের হিসাবে না দেখিয়ে আলাদাভাবে হিসাবায়ন করতে বলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। প্রধানমন্ত্রীঘোষিত আর্থিক সহায়তা প্যাকেজের আওতায় ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও সার্ভিস সেক্টরের প্রতিষ্ঠানসমূহকে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল হিসাবে বিতরণ করা ঋণ/বিনিয়োগের ওপর আরোপিত সুদ/মুনাফার অর্ধেক গ্রাহক পরিশোধ করবে এবং অবশিষ্ট অংশ সরকারের নিকট হতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ভর্তুকি হিসাবে প্রাপ্য হবে দেশে কার্যরত তফসিলি ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো নির্দেশনায় বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, প্রধানমন্ত্রীঘোষিত আর্থিক সহায়তা প্যাকেজের আওতায় ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও সার্ভিস সেক্টরের প্রতিষ্ঠানসমূহকে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল হিসাবে বিতরণ করা ঋণ/বিনিয়োগের ওপর আরোপিত সুদ/মুনাফার অর্ধেক গ্রাহক পরিশোধ করবে এবং অবশিষ্ট অংশ সরকারের নিকট হতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ভর্তুকি হিসাবে প্রাপ্য হবে। ‘সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, কতিপয় ব্যাংক প্যাকেজের আওতায় প্রদত্ত ঋণের বিপরীতে নির্ধারিত সমুদয় সুদ গ্রাহকের ঋণহিসাবের বিপরীতে আরোপ করছে; ফলে গ্রাহক আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। তাই ব্যাংকপর্যায়ে অভিন্ন হিসাবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। যাতে অতিরিক্ত সুদ আরোপের ফলে গ্রাহক যাতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হন।’ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, ‘ঋণ/বিনিয়োগের ওপর আরোপযোগ্য নির্ধারিত সুদ/মুনাফার শুধুমাত্র গ্রাহক কর্তৃক প্রদেয় অংশ (সর্বোচ্চ ৪.৫০ শতাংশ) গ্রাহকের ঋণহিসাবের বিপরীতে আরোপ করা যাবে এবং অবশিষ্ট অংশ পৃথক হিসাবে সংরক্ষণ করতে হবে।’ এতে আরও বলা হয়েছে, ঋণগ্রহীতার প্রদেয় সুদ সার্কুলারের নির্দেশনা অনুযায়ী যথাসময়ে পরিশোধিত না হলে ব্যাংক সমুদয় সুদ গ্রাহকের ঋণহিসাবের বিপরীতে আরোপ করতে পারবে এবং তা গ্রাহকের দায় হিসেবে বিবেচিত হবে। ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ নির্দেশনা জারি করা হলো। এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে সার্কুলারে বলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
×