ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

পুলিশে করোনা আক্রান্তের হার কমাতে নানা নির্দেশনা

প্রকাশিত: ২৩:০৯, ৩০ ডিসেম্বর ২০২০

পুলিশে করোনা আক্রান্তের হার কমাতে নানা নির্দেশনা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ করোনা আক্রান্তের হার কমাতে নানা ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ। বিশেষ করে রোদে ব্যায়াম করা, বেশি বেশি ‘ভিটামিন সি’যুক্ত ফলমূল খাওয়া, শারীরিক পরিশ্রম করা, মাস্ক ব্যবহার করা, নির্দিষ্ট পরিমাণ দূরত্ব বজায় রাখাসহ নানা ধরনের নির্দেশনা মেনে চলার পরামর্শ দেয়া হয়েছে পুলিশ সদস্যদের। ইতোমধ্যেই করোনাভাইরাসের সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে ৮২ পুলিশ সদস্য প্রাণ দিয়েছেন। আক্রান্ত হয়েছেন ১৯ হাজার। নতুন করে যাতে আর কোন পুলিশ সদস্য আক্রান্ত না হন, এজন্য নানা সতর্কতামূলক পরামর্শ দেয়া হয়েছে পুলিশের তরফ থেকে। পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে প্রায় ১৯ হাজার পুলিশ সদস্য করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ৮২ জনের মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে চিকিৎসাধীন আছেন ৩১৭ জন। আক্রান্তের মধ্যে অতিরিক্ত আইজিপি রয়েছেন ছয়জন, ডিআইজি ১০ জন, অতিরিক্ত ডিআইজি ১৯ জন, পুলিশ সুপার ১১২ জন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ১৮৭ জন, সহকারী পুলিশ সুপার ২২৮ জন, ইন্সপেক্টর ৯৫৭ জন, এসআই তিন হাজার সাতজন, এএসআই দুই হাজার ৮৩৫ জন, নায়েক ৫৫০ জন, কনস্টেবল আট হাজার ৮২৩, অন্যান্য সদস্য দুই হাজার ৭৭ জন। করোনাকালে পুলিশ সদস্যরা অনেক মানবিক আচরণ করেছেন। এখনও করছেন। আক্রান্তদের সহায়তা থেকে শুরু করে করোনা রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া, আক্রান্ত পরিবারের ঘরে খাবার পৌঁছে দিয়েছেন পুলিশ সদস্যরা। ডিএমপির পক্ষ থেকে প্রত্যেক থানা এলাকায় রান্না করা খাবার অসহায় মানুষের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। মাস্কসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী বিতরণ ও রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরের রাস্তায় জীবাণুনাশক পানি ছিটিয়েছে পুলিশ। মহামারী চলাকালে অনেকেই সংক্রমণের ভয়ে আক্রান্তদের পাশে দাঁড়ায়নি। তবে দায়িত্ব ও কর্তব্য থেকে সরে যায়নি পুলিশ। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পুলিশ উপস্থিত হয়েছে আক্রান্তদের পাশে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারীদের জানাজা ও দাফন করেছেন পুলিশ সদস্যরা। জীবনের মায়া ছেড়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে রাস্তায় পড়ে থাকা বা ফেলে যাওয়া ব্যক্তিদের হাসপাতালে নিয়ে গেছেন। পরিবারের সদস্যরা করোনার ভয়ে এগিয়ে না এলেও আক্রান্তদের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছে পুলিশ। করোনা থেকে সুস্থ হয়ে অনেক পুলিশ সদস্য অন্যের জন্য প্লাজমা দিয়েছেন। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে বিশ্বজুড়েই। কোন কোন দেশ ইতোমধ্যেই লকডাউনে গেছে। নতুন করে পুলিশে যাতে আক্রান্তের সংখ্যা কমিয়ে আনা যায়, এ জন্য ভিটামিন ডি পেতে বা শরীরের প্রবেশের সুযোগ করে দিতে রোদে ব্যায়াম, কায়িক পরিশ্রম করা, বেশি বেশি ভিটামিন ‘সি’যুক্ত খাবার খাওয়া, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা, মাস্ক ব্যবহার করা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, বারবার স্বাভাবিক গরম পানি পান করা, আদা, লবঙ্গসহ অন্যান্য মসলা দিয়ে লাল চা তৈরি করে পান করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। আলাপ প্রসঙ্গে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মোঃ মারুফ হোসেন সরদার বলছিলেন, ইতোমধ্যেই তিনি ঢাকা জেলায় কর্মরত করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ওয়াটার হিটার, কেতলি, গরম পানির ভাপ নেয়ার সরঞ্জাম, মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস, সেনিটাইজার, জীবাণুনাশক স্প্রে, বেশি বেশি ভিটামিন ‘সি’যুক্ত ফলমূল এমনকি মসলা পর্যন্ত সরবরাহ করেছেন। যারা আক্রান্ত হননি, তাদের সতর্কতামূলক নানা পরামর্শ দিয়েছেন। পুলিশ মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদের পরামর্শ মোতাবেক প্রতিটি পুলিশ ইউনিটই এমন নির্দেশনা বাস্তবায়ন করছে বলে অন্যান্য ইউনিটের পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে যোগাযোগের বরাত দিয়ে জানান পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার।
×