ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নতুন বিমান ‘ধ্রুবতারা’, ২০ ফায়ার সার্ভিস স্টেশন, ৬ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার ও এলপিজি স্টেশন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী

আওয়ামী লীগ আসার পরই উন্নয়ন শুরু ॥ দীর্ঘ ২১ বছর ওরা অবৈধভাবে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রেখেছিল

প্রকাশিত: ২২:২৬, ২৮ ডিসেম্বর ২০২০

আওয়ামী লীগ আসার পরই উন্নয়ন শুরু ॥ দীর্ঘ ২১ বছর ওরা অবৈধভাবে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রেখেছিল

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক/এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় নিজের কারাবন্দী হওয়ার কথা তুলে ধরে বলেছেন, আমরা যারা রাজনীতি করি, আমাদের ক্ষমতার চেয়ার এবং কারাগার খুব পাশাপাশি থাকে। যেটা খুবই স্বাভাবিক। ২০০৭ সালে যেটা হয়েছে। ক্ষমতা ছাড়াই কিন্তু সবার আগে আমাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। কাজেই সেটা আমরা জানি। রাজনীতি করতে গেলে এটা হবে। বঙ্গবন্ধু হত্যাপরবর্তী দীর্ঘ একুশটি বছর দেশকে পেছনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতাকে হত্যার পর সংবিধান লঙ্ঘন করে যারা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিল, ক্ষমতা ধরে রাখাই ছিল তাদের লক্ষ্য; দেশের উন্নয়ন বা মানুষের কল্যাণ সাধন নয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনকালে একটি স্বাধীন দেশের উপযোগী করে সকল প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার যে উদ্যোগ জাতির পিতা নিয়েছিলেন, তা পরবর্তী সরকারগুলো যদি অনুসরণ করত তাহলেও দেশ অনেকদূর এগোতে পারত। কিন্তু দুর্ভাগ্য! তা হয়নি। অবশ্য ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ যখন আবার ক্ষমতায় আসে তারপরই দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনে কাজ করে। এদেশের উন্নয়নের যাত্রা আবার শুরু হয়। রবিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে যুক্ত হওয়া নতুন উড়োজাহাজ ড্যাশ ৮-৪০০ ‘ধ্রুবতারা’র শুভ উদ্বোধন, দেশের বিভিন্নস্থানে নির্মিত ২০টি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন, বিভিন্ন জেলা সদরে নির্মিত ৬টি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, কেরানীগঞ্জে মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার এবং একটি এলপিজি স্টেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। গণভবন থেকে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। গণভবন থেকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিভিআইপি লাউঞ্জে আয়োজিত নতুন উড়োজাহাজ ধ্রুবতারার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থানের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ভাল যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করতে পারলে সবদিক দিয়েই দেশ এগিয়ে যাবে, আর সেই লক্ষ্যেই সরকার কাজ করছে। তাঁর সরকার উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আঞ্চলিক পর্যায়ে একটি সার্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চায়। যোগাযোগ ব্যবস্থার সার্বিক উন্নয়নের মাধ্যমে আমরা পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সঙ্গে একটি সার্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাই। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় অনেক আধুনিক এবং উন্নতমানের উড়োজাহাজ কেনার কথা অনুষ্ঠানে তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সেই সব বিমান ক্রয় করছি যা সব থেকে আধুনিক ও উন্নতমানের। আজকে যে বিমানটি উদ্বোধন করতে যাচ্ছি তার মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের পাশাপাশি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গেও আমরা যোগাযোগ বৃদ্ধিতে সক্ষম হব। কারণ, আমরা এই উপমহাদেশে বাস করি, আমাদের ভৌগোলিক অবস্থানটা এত চমৎকার। আমরা যদি শুধু আমাদের আশপাশের দেশের সঙ্গে একটা ভাল যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করতে পারি, তাহলে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে সবদিকের উন্নতি হতে পারে। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা অনেক পদক্ষেপ নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই নতুন বিমানের উদ্বোধন করেন। বিমানের নতুন এই উড়োজাহাজের নাম রাখা হয়েছে ‘ধ্রুবতারা’। নামটি প্রধানমন্ত্রী নিজেই দিয়েছেন। স্বাধীনতার পরপর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নামকরণ জাতির পিতা নিজেই করেছিলেন জানিয়ে তাঁর মেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান সরকারের সময়ে বিমানের নতুন উড়োজাহাজের নামকরণ বাংলাদেশের প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমরা পালকি, অরুণ আলো, আকাশ প্রদীপ, রাঙা প্রভাত, মেঘদূত, ময়ূরপঙ্খী, আকাশ বীণা, হংস, বলাকা, গাঙচিল, রাজহংস, অচিন পাখি, সোনারতরি নাম দিয়েছি। আর আজ যেটা উদ্বোধন করতে যাচ্ছি, ওর নাম ধ্রুবতারা। ‘ধ্রুবতারা’ আমাদের দিকনির্দেশনা দেয় উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, আমরা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন করতে যাচ্ছি, আর ২০২১ সালে আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপিত হবে। কাজেই, এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই ধ্রুবতারা নামটি পছন্দ করেছি। নামগুলো পছন্দ করায় আমাকে সহযোগিতা করেছেন আমার ছোট বোন শেখ রেহানা। করোনাভাইরাস এসে আমাদের সবকিছু ওলটপালট করে দিয়েছে, সমস্ত কর্মকাণ্ড স্থবির করে দিয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সকলের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রাখতে আমরা বাধ্য হচ্ছি। এটা শুধু বাংলাদেশের নয় বিশ^ব্যাপীই এই সমস্যাটা হচ্ছে। তিনি এ সময় নতুন বিমান আনায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ বিমানের পদক্ষেপকে ‘অত্যন্ত সাহসী’ আখ্যায়িত করে সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটির সদস্যগণ, সচিব এবং বাংলাদেশ বিমানের উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং উর্ধতন সামরিক এবং বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ এ সময় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিভিআইপি লাউঞ্জ থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে সংযুক্ত ছিলেন। সেখানে মন্ত্রণালয়ের সচিব মহিবুল হক, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মোকাব্বির হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটির সদস্যবৃন্দ, মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের সচিব, বিভিন্ন বাহিনীর প্রধানগণ এবং উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী একই অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন স্থানে নির্মিত ২০টি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন, বিভিন্ন জেলা সদরে নির্মিত ৬টি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, কেরানীগঞ্জে মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার এবং একটি এলপিজি স্টেশনও উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতর থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। এ সময় সেখানে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শামসুল হক টুকুসহ কমিটির সদস্যগণ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের সচিব মোঃ শহিদুজ্জামান, জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ সাজ্জাদ হোসাইনসহ ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট এবং কারা অধিদফতরের প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে দেশে নতুন নতুন বিমানবন্দর প্রতিষ্ঠা এবং পুরাতন বিমানবন্দরের আধুনিকায়নসহ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নতুন টার্মিনাল, কার্গো টার্মিনাল এবং বোর্ডিং ব্রিজ করা থেকে শুরু করে সরকারের চার মেয়াদে বিমানকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে চলাচলের উপযোগী করে তোলায় সরকারের পদক্ষেপসমূহের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এখন বিমানবন্দরগুলোকে আরও উন্নত করা হচ্ছে, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনালও নির্মাণ হচ্ছে, কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিকমানের করা হচ্ছে, সৈয়দপুর এবং সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরকে আরও উন্নত করা হচ্ছে। দ্বিতীয়বার ২০০৯ সালে দায়িত্ব নিয়েই আওয়ামী লীগ দেশের উন্নয়নের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে যোগাযোগ বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করে উল্লেখ করে সরকার প্রধান শেখ হাসিনা বলেন, যখন কোন দেশে আমাদের প্লেন নামে তখন আমাদের প্লেনটি দেশের একটি বার্তা নিয়েই সেখানে যায়। সমগ্র দেশের পরিচয় ঘটে এর মাধ্যমে। আর জাতির পিতা বিমানের লোগো করা থেকে শুরু করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সৃষ্টি করে সে কাজের গোড়াপত্তন করে যান। বর্তমান সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় পুরাতন জবুথবু অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে বিমান বহরে এখন বিমানের সংখ্যা ১৯টিতে উন্নীত হয়েছে স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রচেষ্টা শুধু দেশের অভ্যন্তরে নয়, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও যোগাযোগটা আমরা কীভাবে বাড়াতে পারি। কীভাবে উন্নত করতে পারি দেশকে। আমরা সারাবিশ্বে একটা যোগাযোগ তৈরি করব। কারণ যে কোন উন্নয়নের জন্য ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারের জন্য এটা একান্তভাবে দরকার। এ অনুষ্ঠানে সশরীরে উপস্থিত থাকতে না পারায় নিজের দুঃখের কথাও নিজের বক্তৃতায় তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। কারাগারে ভার্চুয়াল কোর্ট চালু করবে সরকার ॥ কেরানীগঞ্জে মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারসহ অন্যান্য কর্মসূচীতে অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কারাগারগুলোতে ভার্চুয়াল কোর্ট চালু প্রসঙ্গে বলেন, কেরানীগঞ্জের কারাগারেও ইতোমধ্যে কোর্টরুম তৈরি করা হয়েছে। এভাবে জেলা কারাগারগুলোতেও কোর্টরুম চালু করে ভার্চুয়াল কোর্ট যাতে হয়, সেভাবে অনলাইনের মাধ্যমে মামলাও পরিচালিত হবে। সেভাবে আমরা একটা ব্যবস্থা নিচ্ছি। অর্থাৎ আধুনিক পদ্ধতিতে নেয়া। যেহেতু ডিজিটাল বাংলাদেশ, এখন করোনার সময় কোর্ট চালানো মুশকিল। আমরা ভার্চুয়াল কোর্টের ব্যবস্থা করেছি। তিনি বলেন, প্রত্যেকটা আইন সব কিছুই ডিজিটালাইজড করে ফেলা হচ্ছে। যে কোন মামলার কজ লিস্ট যেটা থাকবে সেটাও অনলাইনে জানা যাবে। প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সমস্ত কাজ যেন আরও সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে হয়। সেই ব্যবস্থাটা আমরা নিচ্ছি। মামলার রায় বাংলায় ছাপাতে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, মামলার রায় ইংরেজীতে বের হয়, সেটাকে বাংলা করে ছাপানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যাতে সবাই বুঝতে পারে কী রায় হলো, শুধু আইনজীবীদের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে না। কারাগারকে সংশোধনাগার হিসেবে গড়ে তুলতে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য হলো কারাগারে শুধু অপরাধীদের বন্দী করে রাখা নয়, সঙ্গে সঙ্গে তাদের মনমানসিকতা পরিবর্তন করা, তাদের কিছু প্রশিক্ষণ দেয়া, তাদের কিছু হাতে কলমে শিক্ষা দেয়া এবং যাতে তারা বের হয়ে ভবিষ্যতে একই অপরাধে জড়িয়ে না পড়ে। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা কারাগারে এই ব্যবস্থা নিয়েছি। শেখ হাসিনা বলেন, কারাগারে যারা গ্রেফতার হয়ে যায়, স্বাভাবিকভাবেই কেউ গ্রেফতার হলে তাদের পরিবারও কষ্ট পায়। তারা অপরাধ করে অপরাধী। কিন্তু তারপরও তাদের পরিবার কষ্ট পায়। আর কারাগারে এত মানুষ বেকার বসে থাকবে কেন? সেজন্য সেখানে তাদের ট্রেনিং করানো, তাদের কিছু পণ্য উৎপাদন করা, সেই সঙ্গে উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। বাজারজাত করার ফলে যে টাকাটা আসবে খরচ রেখে (লাভের) ৫০ ভাগ যে উৎপাদন করবে সে পাবে। সে তা নিজে কারাগারে জমাও করতে পারবে, কিছু অংশ পরিবারকেও পাঠাতে পারবে। প্রধানমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে আরও বলেন, আমরা কারাগারে কত পরিবর্তন এনেছি। আমাদের কারারক্ষীদের কোন ট্রেনিং ছিল না, তাদের নিরাপত্তারও কোন ব্যবস্থা ছিল না। এমনকি তাদের থাকারও ভাল ব্যবস্থা ছিল না। নতুন কারাগারে সেই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আমরা কারাগারগুলোর উন্নতি করে যাচ্ছি। আর কারাগারে যারা যাবে রাজবন্দী বাদে, যারা কোন অপরাধ করে যায় তাদের ট্রেনিং দিয়ে তারা যাতে যথাযথ মানুষ হয় সেভাবে আমরা ছেড়ে দেব। সংগ্রামী জীবনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর বার বার জেল খাটার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু অপরাধ করলেই যে জেলে যায়, তা না। এর মধ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৪৮ সালে যখন আমাদের মাতৃভাষা বাংলার অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছিল তখন তিনি যে প্রতিবাদ করেছিলেন, সেই প্রতিবাদের কারণে বঙ্গবন্ধু কারাগারে যেতে শুরু করেন। তারপর তাঁর জীবনের অনেকটা সময় কারাগারে কাটাতে হয়েছে অত্যন্ত মানবেতরভাবে। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাত করতে কারাগারে যাওয়ার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে তাঁর কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, রের সঙ্গে সব সময় আমাদের একটা সম্পর্ক। ছোটবেলা থেকেই কারাগারে যাই, সেখানকার ভালমন্দ অনেক কিছু জানারও সুযোগ হয়। জাতির পিতার কারাগারের রোজনামচা ও অসমাপ্ত আত্মজীবনী পড়লে কারাগার সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারবেন। এ ১/১১ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় নিজে কারাবন্দী হওয়ার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন- আমরা যারা রাজনীতি করি, আমাদের ক্ষমতার চেয়ার এবং কারাগার খুব পাশাপাশি থাকে। যেটা খুবই স্বাভাবিক। ২০০৭-এ যেটা হয়েছে। ক্ষমতা ছাড়াও কিন্তু সবার আগে আমাকেই গ্রেফতার করা হয়েছিল। কাজেই সেটা আমরা জানি। রাজনীতি করতে গেলে এটা হবে। প্রধানমন্ত্রী এ সময় কেরানীগঞ্জে একটি এলপিজি স্টেশনও উদ্বোধন করেন। এই এলপিজি স্টেশন থেকে কেন্দ্রীয় কারাগারে গ্যাস সংযোগ দেয়া হবে। ফলে এখন থেকে আর কাঠ পুড়ে রান্না করতে হবে না। এলপিজি গ্যাসে রান্না হবে।
×