ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

কুড়িগ্রামে সৈয়দ হকের ৮৬তম জন্মদিন পালন

প্রকাশিত: ১৭:১৫, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০

কুড়িগ্রামে সৈয়দ হকের ৮৬তম জন্মদিন পালন

স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম ॥ দেশবরেণ্য কথা সাহিত্যিক সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের ৮৬তম জন্মদিন নানা আয়োজনে পালিত হয়েছে। অযত্ন আর অবহেলায় চার বছর ধরে লেখকের সমাধীস্থল দেখে সবাই ক্ষোভ আর হতাশা প্রকাশ করেন। সমাবেশে বক্তব্যে বক্তারা দ্রুততম সময়ে সমাধীস্থলে কমপ্লেক্স নির্মাণের দাবি জানানো হয়। দিবসটি উপলক্ষে রবিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ ক্যাম্পাস সংলগ্ন কবির সমাধীতে জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন পুষ্পমাল্য অর্পন করে। পরে কবির স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। গত বছর বই মেলার আয়োজ থাকলেও এ বছর উত্তরবঙ্গ যাদুঘরের উদ্যোগে সমাধীস্থলে লেখকের বিভিন্ন স্মৃতি নিয়ে একটি চিত্র প্রদর্শীর ব্যবস্থা করে। দিন ব্যাপী এ ছবি গুলো দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। পরে আলোচনাসভায় বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম, কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আব্দুল মান্নান, উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মীর্জা নাসির উদ্দিন,কুড়িগ্রাম আইন মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ এডভোকেট এসএম আব্রাহাম লিংকন, কুড়িগ্রাম আলিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা নুর বখত, কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি এডভোকেট আহসান হাবীব নীলু প্রমুখ। এদিকে চার বছর পেরিয়ে গেলেও সৈয়দ শামসুল হকের নামে স্মৃতি কমপ্লেক্সের কাজ আটকে পড়ায় দু:খ প্রকাশ করেছেন কবির ছোট ভাই অ্যাডভোকেট সৈয়দ আজিজুল হক। তিনি বলেন, আমরা জেলা প্রশাসনসহ সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় এখন পর্যন্ত কোথাও থেকে কোন সুখবর মেলেনি। হবে হচ্ছে এ পর্যন্তই। কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, ওনার যে নকশা ও কাগজগুলো আছে সেগুলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে উনার একান্ত সচীব বরাবর প্রেরণ করছি। ওয়াটস এ্যাপে দিয়েছি। এটি একটি কমপ্লেক্স হবে। গবেষণাগার হবে। নাট্যশালা হবে। লাইব্রেরী থাকবে এবং সকল কার্যক্রমের সমন্বয় ঘটবে। কুড়িগ্রাম আইন মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ও পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট এস এম আব্রাহাম লিংকন জানান, দেশবরেণ্য কথা সাহিত্যিক সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের শেষ ইচ্ছার প্রতি সম্মান দেখিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে কবির সমাধী হয়। সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা ছিল এ সমাধীকে ঘিরে কমপ্লেক্স তৈরী হবে দ্রুততম সময়ে। কিন্তু গত চার বছরেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। এটা হতাশার বিষয়। খুব কষ্টের ব্যাপার। কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মীর্জা নাসির উদ্দিন জানান, এবারও কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থিত কবির সমাধীতে শ্রদ্ধা জানাতে আসবে তার ভক্ত সমর্থকসহ সকল শ্রেণী পেশার মানুষ। সরকার কিংবা স্থানীয় প্রশাসন কোন উদ্যোগ না নিলে কলেজ কর্তৃপক্ষ শীঘ্রই সমাধীস্থল রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব কিছু করবে। কথা সাহিত্যিক সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক ১৯৩৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর কুড়িগ্রাম শহরের থানা পাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর মারা গেলে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কের পাশে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ ক্যাম্পাস চত্ত্বরে তাকে সমাধীস্থ করা হয়। প্রতিদিন তার ভক্তরা আসে এ সমাধীস্থল পরিদর্শনে। এ কমপ্লেক্স নির্মিত হলে কুড়িগ্রামের পর্যটন শিল্পেরও বিকাশ ঘটবে।
×