ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ফেডারেশন কাপ ফুটবল ॥ সাইফ স্পোর্টিং ৩-০ উত্তর বারিধারা

সহজ জয়ে শুরু সাইফ স্পোর্টিংয়ের

প্রকাশিত: ২৩:২১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২০

সহজ জয়ে শুরু সাইফ স্পোর্টিংয়ের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ গত আসরে বিদায় নিতে হয়েছিল কোয়ার্টার ফাইনালে। এবার তাদের লক্ষ্য হচ্ছে যতটা সম্ভব ভাল করা। যদিও মৌসুম শুরুর আগে তাদের প্র্রস্তুতিও তেমন লম্বা হয়নি, মাত্র ৪-৫ সপ্তাহের। বলা হচ্ছে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেডের কথা, যারা চলমান ফেডারেশন কাপ ফুটবলে ভাল ফল করার লক্ষ্যে বুধবার প্রথম বাধাটা অতিক্রম করল। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ‘বি’ গ্রুপের ম্যাচে (দিসের প্রথম ম্যাচ) তারা উত্তর বারিধারা ক্লাবকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে। খেলার প্রথমার্ধের স্কোরলাইন ছিল গোলশূন্য। প্রথমার্ধে সাইফ ৩-৪-৩ ফর্মেশনে এবং বারিধারা খেলে ৫-৩-২ ফর্মেশনে। এই অর্ধে সাইফের সঙ্গে সমানতালে খেলে বেশ প্রশংসা কুড়ায় বারিধারা। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই স্বরূপে ফিরে আসে সাইফ। একের পর এক আক্রমণে ব্যতিব্যস্ত করে তোলে প্রতিপক্ষকে। এর সুবাদে একে একে তিনটি গোলও আদায় করে নেয়। ২১ মিনিটে উত্তর বারিধারার জিতু মিয়ার নিচু ক্রস নিয়ন্ত্রণে নেন উজবেকিস্তানের মিডফিল্ডার ইভজেনি কোচনেভ। তিনি যে শটটি নেন, তা প্রতিহত করেন সাইফের গোলরক্ষক পাপ্পু হোসেন। ৪৩ মিনিটে বারিধারার মিসরীয় ফরোয়ার্ড মোস্তফা মাহমুদ আব্দেল খালেকের কোনাকুনি ক্রসে সুজন বিশ্বাস পা ছোঁয়াতে পারলে বিপদে পড়তে পারত সাইফ। কিন্তু কপাল ভাল তাদের। ভারসাম্য হারিয়ে সুজন পড়ে যান। ফলে বেঁচে যায় তারা। ৪৫ মিনিটে রহমত মিয়ার থ্রোয়িংয়ে নাইজিরিয়ান ফরোয়ার্ড ইকেচুকু এনগোকের বাঁ পায়ের শট বারিধারার ক্রসবারের ওপর দিয়ে চলে গেলে গোলবঞ্চিত হয় সাইফ। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই আক্রমণের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় সাইফ। ৪৯ মিনিটেই কাক্সিক্ষত গোলের দেখা পেয়ে যায় তারা। তবে সেটা প্রতিপক্ষের দেয়া উপহারে, অর্থাৎ আত্মঘাতী গোলে! ডান প্রান্ত থেকে সিরাজউদ্দিন রাখমাতুল্লায়েভের ক্রস বল বিপন্মুক্ত করতে যান বারিধারার মিসরের ডিফেন্ডার সায়েদ মাহমুদ আব্দুল রহিম। তার পায়ে লেগে বল চলে যায় নিজেদেরই জালে (১-০)! ৬৩ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে সাইফ। ডান প্রান্ত দিয়ে আক্রমণ করে তারা। প্রতিপক্ষের বক্সে ঢুকে পড়েন এনগাকে। বিপদ বুঝে বারিধারার গোলরক্ষক আজাদ হোসেন এগিয়ে আসেন। কিন্তু তাতে কোন লাভ হয়নি। তার পাশ দিয়েই বা পায়ের গড়ানো প্লেসিং শটে বল জালে জড়ান এনগোকে (১-১)। ৭০ মিনিটে বারিধারার হারের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেয় সাইফ। এবারও বাঁ দিক দিয়ে আক্রমণ শাণায় সাইফ। আগুয়ান গোলরক্ষকের ঠিক পাশ দিয়ে ডান পায়ের গড়ানো শটে চমৎকার ফিনিশ করেন ফয়সাল আহমেদ ফাহিম (৩-০)। দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে বদলি নামা অপূর্ব কুমার দাসের শট পাপ্পুর গ্লাভস ছুঁয়ে পোস্টে লেগে ফিরলে অন্তত একটি গোল শোধ করতে পারত বারিধারা। শেষ পর্যন্ত আর কোন গোল হয়নি। রেফারি বিটু রাজ বড়ুয়া খেলা শেষের বাঁশি বাজালে শুভসূচনার চিত্তসুখ নিয়ে পলপুটের শিষ্যরা এবং হারের বেদনা নিয়ে মাঠ ছাড়ে শেখ জাহিদুর রহমানের শিষ্যরা। ব্রাদার্সকে হারাল আরামবাগ ॥ ক্যাসিনো কাণ্ডে বিপর্যস্ত হয়েছিল যে কটি ফুটবল ক্লাব, তাদেরই একটি আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ। ঐতিহ্যবাহী এই ফুটবল ক্লাবটি ওই ঘটনার পর বলতে গেলে মুখ থুবড়ে পড়েছিল। অনেক কষ্টে অর্থ জোগাড় করে মোটামুটি মানের দল গড়েছে তারা। ফেডারেশন কাপ শুরুর আগে নতুন মৌসুমে ভাল খেলার চেষ্টার কথা জানিয়েছিলেন দলের ভারতীয় কোচ সুব্রত ভট্টাচার্য। যদিও দলের প্রস্তুতি ছিল দেড় মাসের। বুধবার বি গ্রুপে (দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে, রাতে অনুষ্ঠিত) ভাল খেলেই জয় কুড়িয়ে নিল ৬২ বছর বয়সী এই ক্লাবটি। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে তারা ২-০ গোলে হারায় আরেক ঐতিহ্যবাহী দল ব্রাদার্স ইউনিয়ন লিমিটেডকে। বিজয়ী দল খেলার প্রথমার্ধে ১-০ গোলে এগিয়েছিল। ব্রাদার্স ইউনিয়ন বাংলাদেশের প্রথম ফুটবল ক্লাব হিসেবে মৌসুম শুরুর আগে দল বদলের সময় এক অনাকাক্সিক্ষত কীর্তি গড়ে ছিল। ক্লাবের বিভিন্ন আভ্যন্তরীণ ঝমেলায় তারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দল বদলই করতে পারেনি! এজন্য বাফুফে থেকে ইতোমধ্যেই কারণ দর্শানোর নোটিস পেয়েছে তারা। বিলম্বে দলবদলের জন্য এই আসরের জন্য তাদের প্রস্তুতি হয়নি বললেই চলে। টুর্নামেন্ট শুরুর মাত্র একদিন আগে দলের খেলোয়াড়রা অনুশীলন করেছে! এর ফলও তারা পেয়েছে বুধবারের খেলায় হেরে। আরামবাগের নাইজিরিয়ান ফরোয়ার্ড চিজোবা ক্রিস্টোফার ম্যাচের ৪৪ মিনিটে এবং অপর ফরোয়ার্ড মুরাদ হোসেন চৌধুরী ৯০ মিনিটে গোল দুটি করেন।
×